ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জেগে ওঠার শপথ ॥ সংস্কৃতির শিকড়ে দৃঢ়বদ্ধ থেকে বাঙালীর

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

জেগে ওঠার শপথ ॥ সংস্কৃতির শিকড়ে দৃঢ়বদ্ধ থেকে বাঙালীর

মোরসালিন মিজান ॥ আবারও সেই আলোকোজ্জ্বল ভোর। বাঙালীর মূলমন্ত্রে জেগে ওঠা। অভূতপূর্ব জাগরণ। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। অনাচার অশুভ অসুন্দরকে পরাভূত করে, পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্নের সঙ্গী হলো পহেলা বৈশাখ। বর্ণাঢ্য আয়োজনে শনিবার বরণ করে নেয়া হলো ১৪২৫ বঙ্গাব্দকে। নতুন বছরের প্রথম দিন সোনার মানুষেরা হাত ধরাধরি করে এগিয়ে গেলেন। বিশ্বায়নের এই কালে নতুন প্রজন্ম আকাশের পানে তাকাল বটে। আত্মপরিচয় থেকে বিস্মৃত হলো না। শেকড়ের সন্ধান করল, আঁকড়ে ধরার শপথ নিল নতুন করে। লোকায়ত জীবন আর নিজস্ব কৃষ্টির কাছে বিনা শর্তে নত হলো শহুরে মানুষ। পূর্ব পুরুষের সকল দান স্বীকার করে নিল কৃতজ্ঞ চিত্তে। এভাবে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে বাঙালিত্বের জয়গান হলো সর্বত্র। শুরুর দিনে আরও একবার জানিয়ে দেয়া হলো শুধু নিজের জন্য বাঁচার হীন চেষ্টা, ভুল ঐক্য, জোর যার মুল্লুক তার নীতি সমর্থন করে না বাংলাদেশ। ব্যক্তিস্বার্থ ক্ষুদ্রতার প্রচার প্রকাশ নয়, মুক্তিযুদ্ধের মানবিক বাংলাদেশ চাই। চাই সকল ধর্ম বর্ণ সম্প্রদায়ের মানুষের সম্প্রীতি। এমন আরও অনেক সুন্দর আরও অনেক শুভ প্রত্যাশায় উদযাপিত হলো পহেলা বৈশাখ। এবারও ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদীদের হুংকার ছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে ফতোয়া জারি করা হয়েছিল যথারীতি। এর বাইরেও কিছু ঘটনা ঘটেছে। বর্ষবরণের আগ মুহূর্তে আক্রান্ত হয় চারুকলা। যারা একটু দুর্বল চিত্তের তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গত কিছুদিন ধরে চলা তা-ব। আর বিকেলে বাদসাধে ঝড় বৃষ্টি। হ্যাঁ, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ আর বের হতে পারেননি ঘর থেকে। পরিবার পরিজনের সঙ্গে নিজের মতো করে সময় কাটিয়েছেন। বহু পদের ভর্তা ভাজি মাছ শাক রান্না করে নিজে খেয়েছেন। আত্মীয় পরিজনদের নেমন্তন্ন করে খাইয়েছেন। এভাবে সুন্দর একটি দিন। বছরের শুভ সূচনা। পহেলা বৈশাখ ভোর বেলা থেকে শুরু হয়ে যায় নববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা। দেখতে দেখতে ৫৬ হাজার বর্গমাইলে ছড়িয়ে পড়ে বর্ষবরণের আনন্দ। ঢাকা সেজিছিল চিরচেনা রূপে। সূর্য উঠার আগেই জেগে উঠেছিল শহর। ঘরে ঘরে ঘর ছেড়ে বের হওয়ার তাড়া। ছোট বড় সবাই ব্যস্ত। স্নান সেরে বাঙালীর সাজে সেজে পথে নেমে এসেছিলেন। কোন হিন্দু মুসলমানের বিষয় ছিল না। বৌদ্ধ না খ্রীস্টান খুঁজেনি কেউ। সবাই বাঙালী। এদিন ঢাকার প্রধান সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য ছিল। যেদিকে চোখ গেছে, লাল সাদা রং। মেয়েদের শাড়িতে, জামায় ছিল উজ্জ্বল লাল। ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবি পরে বের হয়েছিলেন। কারওটায় সাদা লালের মিশেল। এভাবে গোটা শহর গ্রাম বাংলার হয়ে ওঠে। এদিন মূল গন্তব্য ছিল রমনা বটমূল, চারুকলা অনুষদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। বিভিন্ন দিক থেকে এই এলাকাগুলোতে লোকজন প্রবেশ করছিলেন। অনেক আগে থেকেই গাড়ি চলাচল বন্ধ। তাতে কী? পা চলেছে। দীর্ঘ পথ হেঁটেও তেমন ক্লান্তি ছিল না। হোটেল সোনার গাঁ মোড়, শাহবাগ, চারুকলা অনুষদ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর ঘুরে দেখা যায়, বিশাল রাস্তার দুই ধারে মানুষ আর মানুষ। ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সবাই ছুটেন চারুকলার দিকে। বাকিরা তারও আগে থেকে সমবেত হচ্ছিলেন ওখানে। কেউ দল বেঁধে। কারও সঙ্গে স্ত্রী সন্তান। বন্ধুরা প্রেমিক প্রেমিকরা ঘুরে বেড়িয়েছেন। পায়ে পা লাগছিল। গায়ে গা। তবে কেউ কারও যন্ত্রণার কারণ হননি। বরং সব ভুলে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল বাঙালী। এ সময় কারও হাতে ছিল বাঁশি। কারও হাতে একতারা। অনেকেই ঢোল বাজিয়ে বর্ষবরণের আনন্দ প্রকাশ করেছেন। নাচছিলেন কেউ কেউ। পুরো রাস্তা জুড়ে বসেছিল বৈশাখী মেলা। একই রকম দৃশ্য চোখে পড়েছে শহর ঢাকার অন্য সব রাস্তা, পার্ক, উদ্যানে। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটি দিন। এই আনন্দ এই হাসিরাশি বাঙালীর সব ঘরে পৌঁছে যাক। অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক। এমন সুন্দর বেঁচে থাকার বাংলাদেশ হোক। এগিয়ে যাক। দিনভর শোনা গেছে এমন প্রত্যাশা। ছায়ানটের সঙ্গে শুরু ॥ বহু বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারও রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছায়ানট। ঘুম থেকে উঠেই শহরের মানুষ হেঁটে এখানে আসতে শুরু করেন। সোয়া ছয়টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। বটবৃক্ষের নিচে বিশাল মঞ্চ। সেখানে হাঁটু ভাঁজ করে বসেছিল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। একইভাবে বসেছিলেন বড়রা। প্রথমেই ছিল বাঁশি বাদন। রাগ আহীরভাঁয়রো শুনিয়ে মুগ্ধ করেন মর্তুজা কবির মুরাদ। পরে একক ও সম্মেলক কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেড়শ’র বেশি শিল্পী। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, লালন, দ্বিজেন্দ্র লাল রায়, সুকান্তর গান করা হয় অনুষ্ঠানে। ছিল লোকগীতি। শাহ আব্দুল করিম, জালাল উদ্দীন খাঁ, কছিম উদ্দিনের মতো লোক সাধকদের গান ছিল বাড়তি পাওয়া। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সন্জীদা খাতুন। তিনি বলেন, জন্মসূত্রেই এ মাটি আমাদের একান্ত আপন। সেই মাটির বুকে শিকড়ের মতো পা ডুবিয়ে মাটি-মাতাকে শ্রদ্ধা জানাব আমরা। এমন স্বভাবসম্মত প্রক্রিয়ায় বেড়ে উঠে আত্মপরিচয়ে প্রত্যয়ী আর প্রতিষ্ঠিত হব আমরা, বাংলাভূমির সর্বজন। আবার, মাটির রসে পুষ্ট হয়ে আকাশের দিকেও হাত বাড়াব আমরা। আলো আর বাতাসের তেজ আর স্নিগ্ধতা সর্ব অঙ্গে মেখে আমাদের সত্তা সঞ্জীবিত হয়ে উজ্জ্বলতর হবে। মাটি আর আলো-বাতাসের রসসম্পদ সব মিলে আমাদের করে তুলবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ। এভাবে শাশ্বত মানব হবার পথের অভিযাত্রা সফল হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস, পাহাড়-সমতল-প্রান্তর, নদী-সমুদ্র, বৃক্ষ-লতা, ফুল-ফল, পাখপাখালি আমাদের পরম প্রিয়, প্রিয় এদেশের সকল মানুষ। পরস্পর সংবদ্ধ থেকে আমরা বিশ্বকেও যুক্ত করে নেব আমাদের সঙ্গে। শিকড়ের মাটিতে দৃঢ়বদ্ধ থেকে বিশ্বায়নের ফলে পাওয়া সত্য-সুন্দরকে আত্মগত করে ঋদ্ধ হব আমরা। ‘বিশ্বায়ন’ আজ আমাদের কাছে বাস্তব সত্য। এ শব্দ নিন্দা অর্থে উচ্চারণ করছি না। বিশ্বের সঙ্গীতে-সাহিত্যে-শিল্পকলায়-দর্শনে-বিজ্ঞানে যে মহান অর্জন তার আস্বাদ নেব আমরা। আত্মস্থ করতে হবে সকল মানবিক অন্তরসম্পদ। সেই সত্য-সুন্দর সমৃদ্ধ করবে আমাদের। দেশী মানসের সঙ্গে বিশ্বের মানসের সহজ যোগেই মানবের কল্যাণ ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করে বক্তব্য শেষ করেন সন্জীদা খাতুন। চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ॥ ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই মানুষের ¯্রােত নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের দিকে। বর্ষবরণের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যোগ দেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। অনেকে আগেভাগে এসে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। অপেক্ষা করছিলেন। আর তারপর সকাল নয়টায় শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার এবারের প্রতিপাদ্য ছিলÑ মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি। এই সেøাগানে বের করা হয় সবচেয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। প্রধান আকর্ষণ ছিল বাঁশ ও কাঠের তৈরি আটটি বিশালাকৃতির স্ট্রাকচার। সামনের দিকে ছিল সূর্য। নতুন সূর্যের আলোয় অন্ধকার পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শোভাযাত্রায় ছিল বাঙালীর লোকজ সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ। বাঙালীর সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতিকে সবার উপরে স্থান দেন শিল্পীরা। শোভাযাত্রায় অংশ নেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য আক্তারুজ্জামান, চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হুসেইনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুষদের ডিন শিল্পী নেসার আহমদ বর্তমান সময়ের কিছু সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। আমরা সোনার মানুষ চাই। সেই মানুষ না হলে সোনার বাংলা হবে না। ঋষিজ’র বর্ষবরণ ॥ সঙ্গীত সংগঠন ঋষিজ’র আয়োজনে বহু বছর ধরে বর্ষবরণ উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় শিশুপার্কের সামনে নারকেল বীথি চত্বরে সকালে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একাধিক মঞ্চে শিল্পকলা একাডেমি ॥ বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছিল পালাগান, পদ্মার নাচন ও গম্ভীরা। পরে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন একাডেমির সহায়তায় মিরপুর ২ নম্বর সেকশনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মিরপুর সাংস্কৃতিক ফোরাম। উত্তরার রবীন্দ্র সরণি ও লেকপাড়ে ছিল একই রকম আয়োজন। এ আয়োজনেও সহায়তা করে শিল্পকলা একাডেমি। একইদিন বেলা ৩টায় বাহাদুরশাহ্ পার্কে ছিল বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ ॥ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এবারও আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। চ্যানেল আইয়ের সহায়তায় অনুষ্ঠান আয়োজন করে সঙ্গীত সংগঠন সুরের ধারা। এখানে এক হাজার গায়ক গায়িকা একসঙ্গে গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেন। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রার পর এ আয়োজনটি রাজধানীর পহেলা বৈশাখের আয়োজনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আয়োজনের শুরুটা করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। ‘প্রভাতের প্রথম প্রহরে ওঠো ওঠোরে’ গেয়ে নববর্ষকে স্বাগত জানান তিনি। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারও শিল্পীরা সম্মেলক গান করেন। ছিল নৃত্যায়োজন। বৈশাখের হরেক পণ্য সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয় বেশ কয়েকটি স্টল। নগরজুড়ে বৈশাখী মেলা ॥ বছরের প্রথম দিন লোক ঐতিহ্য মেনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০ দিনব্যাপী কারুশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। বাংলা একাডেমির বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাহারি পণ্যের পসরা সাজায় লোক শিল্পী ও কারিগররা। কাঁচের চুড়ির দোকানগুলোতে ছিল তরুণীদের প্রচ- ভিড়। শিশু একাডেমি সংলগ্ন দোয়েল চত্বরে বসেছিল কুটিরশিল্প মেলা। ধানম-িতে মেলার আয়োজন করে জয়ীতা। মনিপুরীপাড়ায় আয়োজন করা হয় পাটপণ্য মেলার। সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজন ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। শনিবার ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রিপোর্টার্স ইউনিটি ॥ রিপোর্টারদের সংগঠন রিপোর্টার্স ইউনিটি সেগুন বাগিচা কার্যালয়ে বৈশাখী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। সরকারী কর্মসূচী ॥ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরকারীভাবে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের বঙ্গভবনে সংবর্ধনা জানান। বিকেলে গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া পাঁচটি বিভাগীয় শহর, ঢাকা মহানগর, দেশের সব জেলা-উপজেলায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা ও গ্রামীণ লোকজ মেলার আয়োজন করে সরকার। কারাগার, হাসপাতাল ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, শিশুদের নিয়ে ঐতিহ্যবাহী বাঙালী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কারাবন্দীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। শুভ হালখাতা ॥ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিবার পহেলা বৈশাখে হালখাতা খুলেছেন পুরনো ঢাকার সনাতন ব্যবসায়ীরা। নবোদ্যমে যাত্রা শুরু করেছেন। বায়তুল মোকাররম এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এদিন আমন্ত্রণ করেছিলেন তাদের নিয়মিত ক্রেতাদের। ইসলাম পুরের কাপড়ের গদিতে হয়েছে শুভ হালখাতার আনুষ্ঠানিকতা। এদিন পাইকারি ক্রেতারা পাওনা শোধ করেছেন। সেইসঙ্গে পণ্য কিনে নতুন হিসাব খুলেছেন অনেকে। সব মিলিয়ে দারুণ আনন্দঘন পরিবেশের শুরু। শুরুর মতোই শেষ হোক। সবার জীবনে কল্যাণ বয়ে আনুক ১৪২৫ বঙ্গাব্দÑ এই ছিল প্রথম দিনের প্রত্যাশা।
×