ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মঞ্চে আসছে প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজনা ‘হাসনজানের রাজা’

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

মঞ্চে আসছে প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজনা ‘হাসনজানের রাজা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিয়মিতভাবে বছরে একটি হলেও রবীন্দ্র নাট্যচর্চার ঘোষণা দিয়ে নাট্যদল গঠন করলেও মাঝে মাঝেই অন্য প্রযোজনাও মঞ্চে আনে প্রাঙ্গণেমোর। এরই ধারাবাহিকতায় আগে চারণকবি মুকুন্দ দাশকে নিয়ে ‘লোক নায়ক’ নামে নাটক প্রযোজনা করেছিল প্রাঙ্গণেমোর। নিয়মিতভাবে নতুন নাটক প্রযোজনার ধারাবাহিকতায় অচিরেই মঞ্চে আসছে প্রাঙ্গণেমোর দলের ১৩তম প্রযোজনা। প্রাঙ্গণেমোর মানেই নতুন এবং চমকে ভরা প্রযোজনা। তাদের প্রযোজনায় থাকে নানা কারিশমা, অভিনয় কিংবা মঞ্চ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা তো থাকেই। সে হিসেবে প্রাঙ্গণেমোরের নতুন প্রযোজনা মানেই দর্শকদের আলাদা আগ্রহ। সেই আগ্রহ নিবৃত্ত করতে দর্শকদের সামনে নতুন প্রযোজনা হিসেবে প্রাঙ্গণেমোর মঞ্চে আনছে নতুন নাটক। নতুন নাটকের নাম ‘হাসনজানের রাজা’। দল সূত্রে জানা গেছে আগামী ২০ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে প্রাঙ্গণেমোরের নতুন প্রযোজনা ‘হাসনজানের রাজা’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। পরদিন একই সময় নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী হবে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে। ‘হাসনজানের রাজা’ লিখেছেন শাকুর মজিদ। নাটকের নির্দেশনা দিচ্ছেন অনন্ত হীরা। ‘হাসনজানের রাজা’ নাটকে অভিনয় করবেন রামিজ রাজু, আউয়াল রেজা, মাইনুল তাওহীদ, সাগর রায়, শুভেচ্ছা রহমান, সবুক্তগীন শুভ, জুয়েল রানা, আশা, প্রকৃতি, প্রীতি, সুজয়, নীরু, সুমন, বাঁধন ও রুমা। নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন ফয়েজ জহির। সঙ্গীতের পরামর্শক হাসন রাজার গানের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী সেলিম চৌধুরী। সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন রামিজ রাজু। আলোক পরামর্শক ঠান্ডু রায়হান, আলোক পরিকল্পনা করেছেন তৌফিক আজীম রবিন। পোশাক পরিকল্পনায় নূনা আফরোজ। ‘হাসনজানের রাজা’ নাটকটি নির্মিত হচ্ছে বিখ্যাত গীতিকবি হাসনরাজার জীবনী অবলম্বনে। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষ্মণ শ্রী আর সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন হাসন রাজা। তিনি ছিলেন মরমি গীতিকবি। এবার তাকে মঞ্চে নিয়ে আসছে প্রাঙ্গণেমোর। হাসন রাজাকে নিয়ে নাটকের এই দলটি নাটক তৈরি করছে। হাসন রাজা (১৮৫৪-১৯২২) বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার একজন সামন্তপ্রভু ছিলেন। মা-বাবা উভয়ের কাছ থেকে পাওয়া বিশাল জমিদারির মালিকানা চলে আসে কিশোর বয়সে। অর্থ, বেহিসাবি সম্পদ আর ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। জাগতিক লোভ-লালসা, ক্ষমতায়ন, জবরদখল করেও তিনি তার প্রতিপত্তি বাড়ানোর কাজে প্রবৃত্ত ছিলেন। এক সময় হাসন রাজার ভেতরের ভ্রান্তি ঘুচে যায়। মধ্য পঞ্চাশে এসে তিনি ভিন্ন এক মানুষে পরিণত হন। তার বোধ হয়, এ জগৎ-সংসারের সব অনাচারের মূলে আছে অতিরিক্ত সম্পদ। কিছুদিনের জন্য অতিথি হয়ে আসা মানুষেরা আসলে মহাশক্তির কাছে একেবারে নশ্বর। তিনি তার সম্পদ জনকল্যাণের জন্য উইল করে দিয়ে কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে হাওড়ে হাওড়ে ভাসতে থাকেন। আর এর মধ্যে খুঁজতে থাকেন সেই মহা পরাক্রমশীল স্রষ্টাকে। সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজতে খুঁজতে একসময় আবিষ্কার করেন, নিজের মধ্যেই তার বাস। তার যে পিয়ারীকে সবাই হাসনজান বলে জানে, সেই আসলে হাসন রাজা। জগতের মানুষের কাছে যিনি রাজা বলে চিহ্নিত ছিলেন, হাসন রাজার কাছে সে কেউ নয়। বরং পিয়ারী হাসনজানের ভেতরেই প্রকৃত হাসন রাজা বিরাজমান ছিলেন। এমনা কাহিনীই ‘হাসনজানের রাজা’ নাটকে তুলে ধরা হবে।
×