ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দন্ত্যস রওশন

গল্প- আজ পাখিরা বই পড়বে

প্রকাশিত: ০৭:০২, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

গল্প- আজ পাখিরা বই পড়বে

বইমেলার আকাশ। সেদিন খুব ভিড় হয়েছে মেলায়। ইভা হঠাৎ আকাশের দিকে তাকাল। অনেক পাখি উড়ছে আকাশে। ‘মা, দেখো কত পাখি উড়ছে।’ মা মিতু রহমান আকাশের দিকে তাকালেন। ‘তাই তো। অনেক পাখি।’ ইভা জানতে চায়। ‘মা কি পাখি ওগুলো?’ ‘চিল হতে পারে।’ বাবা আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘মনে হয় বাদুর।’ ইভার বড় ভাই তালহা বলল, ‘মনে হয় অতিথি পাখি।’ ইভা বলল, ‘মা, ওরা কি বই পড়ে?’ মা হাসেন। ‘হয় তো পড়ে। তা না হলে মেলার আকাশে ঘুরে ঘুরে উড়ছে কেন।’ বাবা তাড়া দেন। ‘এই, সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি বই বাছাই কর।’ তালহা কিনল তিনটা বই। আর ইভা কিনল পাঁচটা বই। মা বই কিনলেন। বাবা বই কিনলেন। সবার হাতে বইয়ের প্যাকেট। ইভার প্যাকেট থেকে একটি বই কথা বলে উঠল। ‘পাখিদের জন্য একটা বই কেন।’ ইভা অবাক হয়ে বলল, ‘বাবা, আমার বই কথা বলছে।’ বাবা ইভার হাত ধরে ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আম্মু, কি সব বলছ। বই কি করে কথা বলবে?’ বই আবার বলল, ‘ইভা, পাখিদের জন্য একটা বই কিনে দাও না...।’ ‘বাবা। প্লিজ। আরও একটা বই কিনতে হবে।’ ইভা বাবাকে বইয়ের দোকানের কাছে নিয়ে গেল।’ ‘পাখিদের জন্য বই আছে?’ ইভা জানতে চায়। লোকটি বসে ছিলেন। দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। পাখিদের ওপর বই আছে। ‘তিনি একটা বই বাড়িয়ে দেন ইভার দিকে।’ বইটায় অনেক পাখির ছবি। ইভা শব্দ করে পড়ল, ‘বাংলাদেশের পাখি।’ ‘বাবা, এটা নিবো।’ বাবা বললেন, ‘কত দাম?’ ‘দু’শ’ টাকা।’ বাবা বইটা কিনে দিলেন। বইটা হাতে পেয়ে ইভা সেটা আকাশের দিকে ছুড়ে দিল। সেটা দেখে পাখিগুলো নিচের দিকে উড়ে আসতে লাগল। মা বললেন, ‘বইটা ছুড়ে দিলে কেন?’ ইভা ভেবেছিল বইটা উড়ে যাবে পাখিদের কাছে। না। সেটা পড়ে গেল মেলার মাঠে। বইটা পড়ে আছে মেলার মাঠে। সেটার দিকে লোকজন তাকাচ্ছে। একজন বলল, ‘মনে হয় ওর বইটা পছন্দ হয়নি।’ বইটার দিকে তাকিয়ে ইভার সে কি কান্না। ‘বাবা গেলেন বইটা তুলতে, আর অমনি অবাক ব্যাপার। বইটা উড়তে থাকল আকাশের দিকে। ইভা দু’হাতে চোখ মুছে সে কি খুশি। বাবা, মা, তালহাও অবাক হয়ে তাকাল। বইটা পাখির মতো উড়ে যাচ্ছে। আর পাখিরা বইটার দিকে আসছে। ‘কি মজা আজ পাখিরা বই পড়বে।’ ইভা আনন্দে লাফিয়ে উঠল। অলঙ্করণ : প্রসূন হালদার
×