ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভৈরবে গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

ভৈরবে গণহত্যা দিবস আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব, ১৩ এপ্রিল ॥ ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন হলেও ভৈরবের জন্য দিনটি বেদনাবিধুর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকবাহিনী গুলি করে হত্যা করে ভৈরবের ৫ শতাধিক মানুষকে। উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের আলগড়া খেয়াঘাট এলাকায় চালানো হয় এই নির্মম হত্যাযজ্ঞ। সেদিন শত শত মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় ব্রহ্মপুত্র নদ। অপরদিকে পাকসেনারা ভৈরবের অসংখ্য মানুষকে মেঘনা নদীর তীরে দাড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। শহীদদের স্মরণে ওখানে গড়ে উঠেছে স্মৃতিসৌধ। ভৈরব শহরকে দখল করতে সেদিন পাকিস্তানী বাহিনীর জল, স্থল ও আকাশ পথে ভৈরব বন্দরকে ঘিরে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করতে থাকে। বোমার আতঙ্কে শহর ছেরে পালায়নরত শত শত মানুষ ব্রহ্মপুত্র নদ পার হওয়ার জন্য সমবেত হয় আলগড়া খেয়াঘাটে। এ সময় আলগড়া খেয়াঘাটে পানাউল্টারচরে হেলিকপ্টার থেকে পাকসেনারা গুলি ছোড়ে। শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর এলাকায় ছত্রীসেনা নামে। সেই ছত্রীসেনারা ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে ভৈরব শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তারাই একটি দল ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল লাইন ধরে শহরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পানাউল্লাহরচর খেয়া ঘাটে নৌকায় পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকা শত শত মানুষ দেখে ওই এলাকায় গিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে কয়েকশত মানুষকে। রক্তের বন্যা বয়ে যাওয়া খেয়াঘাটে মৃতদেহগুলো কাছাকাছি একটু উঁচু জমিতে মাটি চাপা দেয় সৈন্যরা। আহতদের অনেকেই মারা যায় আবার অনেকেই পঙ্গু হয়ে আলগড়া খেয়াঘাটে বীভৎস স্মৃতি নিয়ে এখনো বেঁচে আছে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এলেই স্বজন হারানো বেদনায় আনেকেই নীরবে কাঁদে। নীরবে মুছে চোখের জল। সারা দেশে যখন বাংলার ঐতিহ্য শুভ নবর্ষের উৎসব চলে তখনই এই ব্রহ্মপুত্র নদ ও মেঘনা নদীর এলাকার মানুষের মনে নেমে আসে বিষাদের ছায়া।
×