ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

নববর্ষের উপহার ॥ জোঁকের মুখে চুন

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

নববর্ষের উপহার ॥ জোঁকের মুখে চুন

লেখার উপস্থাপনাটা ব্যতিক্রম হবে এ জন্য যে, লেখাটা যেদিন ছাপা হবে সেদিন বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ। বৃহস্পতিবার যখন লেখাটা তৈরি করছি তখন সামনে দৈনিক কাগজগুলোর প্রধান শিরোনাম ‘কোটা প্রথা বাতিল, সংসদে প্রধানমন্ত্রী’। এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সুযোগে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির গভীর চক্রান্তে লিপ্ত মুখোশধারী রক্তচোষা জোঁকের মুখে চুন লেপটে দিয়ে দিলেন। বর্ষায় কালো কালো এক প্রকার জোঁক মানুষের পায়ে কামড়ে ধরে রক্ত চোষে, বিশেষ করে যারা পানিতে কাজ করে তাদের। ঐ জোঁকের মুখে চুন বা লবণ দিলে তারা পড়ে যায়। চক্রান্তকারীরা ভেবেছিল কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে এটি সহজেই দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া যাবে এবং যার মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের মাঝে অনুপ্রবেশ করে অন্তত তিনটি দাবি আদায় করা সম্ভব হবে : ক. খালেদা জিয়ার মুক্তি খ. তারেক জিয়ার সাজা মওকুফ গ. কেয়ারটেকার সরকার আদায় কিন্তু বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে সাহসী, চৌকস, সবচেয়ে দূরদর্শী দুজন প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায়। কয়েকদিন আগে একটি খবরে দেখলাম জার্মানির ইলেকশনে এঞ্জেলা মেরকেলের পাশে শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে পোস্টার করা হয়েছে ভোট পাওয়ার জন্য। শেখ হাসিনার কাছে তাই ঐ সব চক্রান্ত কোন বিষয় নয়। তাঁর কাছে বিষয় হলো বাংলাদেশ, বাঙালী জাতি ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। শেখ হাসিনা সহজেই চিহ্নিত করলেন এই আন্দোলনে কোটা সংস্কারের আড়ালে মূলত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জঙ্গীগোষ্ঠীর রাজপথে নামা। কোটার সঙ্গে কোনভাবেই সম্পর্ক নেই, তবুও মুখোশ পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল-মিটিং করা, যা সহজেই উন্মোচিত হয়ে গিয়েছিল : ক. ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে হামলা, ভাংচুর, আসবাবপত্র তছনছ। খ. হামলাকারীরা অনেকেই মুখোশ পরা ছিল, ঠিক একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভেতর যেভাবে আলবদর-আলশামসরা মুখোশ পরে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে হত্যা করেছিল। গ. ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে যেমন কোটার কোন সম্পর্ক নেই, দায়ও নেই, তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সম্পর্ক, দায় কোনটাই নেই। তবু কেন চারুকলায় হামলা? এ হামলা বাংলা নববর্ষের আনন্দোৎসবের ওপর হামলা। বিশেষ করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ ওপর হামলা। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ এরই মধ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটি জঙ্গীদের গাত্রদাহ। তাই তারা চারুকলায় হামলা করল। অস্বীকার করি না বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে গিয়ে একটু-আধটু বাড়াবাড়ি হচ্ছে। এই যেমন পয়লা বৈশাখে মাটির শানকিতে করে পান্তা-ইলিশ খাওয়া। তাতে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যরাই বেশি। মনে হয় নিজেদের একদিনের বাঙালিয়ানা জাহির করার জন্য এই পান্তা-ইলিশ একটা মাধ্যম এবং এই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার জন্য ১০/১২ হাজার টাকা একটা ইলিশের দাম উঠেছিল বলে শুনেছি। রাজধানীতে পশ এলাকাগুলো থেকে লুঙ্গি-ফতুয়া পরে দামী গাড়ি করে প্রভাতে রমনার বটমূলে বাঙালিয়ানার মহড়া প্রদান, এমনি বাড়াবাড়ি যে হচ্ছে না বলব না। কিন্তু এসবের সঙ্গে পয়লা বৈশাখের কার্যত কোন সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক নেই একদিনের বাঙালিয়ানার মহড়ায়। এবারের কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনে এবং চারুকলায় হামলার সঙ্গে অতীতের রমনা বটমূলের হামলা (যাতে অন্তত ১০/১২ জন নিহত হয়েছিলেন) কোথাও না কোথাও মিল আছে। বেশ কয়েক বছর আগে চারুকলায়ও এমনি হামলা হয়েছিল, হামলা হয়েছিল যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে (সেখানেও কয়েকজন নিহত হন)। রাষ্ট্রনেতা শেখ হাসিনার কাছে এসব ঘটনা অজানা নয়, তাই তিনি প্রথমেই ‘জোঁকের মুখে চুন’ দিয়ে দিলেন রক্ত চোষার আগেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো বুদ্ধিজীবী জোঁকরা এখন কি বলবেন? গত বুধবার বিকেল থেকে ঢাকার বাতাসে একটা কথা ভেসে বেড়াচ্ছে। জিয়া-খালেদার সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিপরায়ণ পুত্র (জানামতে) সাজা গলায় নিয়ে লন্ডনে পলাতক তারেকও এই আন্দোলনে ‘ফুঁ’ দিয়েছিল। শোনা যায়, তারেকের কথা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের সঙ্গে, যারা সাদা দল করেন এবং বিভিন্ন চ্যানেলে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে কথা বলেন, বিশেষ করে খালেদা-তারেকের মুক্তির জন্য গলা ছেড়ে কথা বলেন, যার বেশিরভাগই অসত্য। প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণার পর সেই শিক্ষকদের কি অবস্থা? মা-বেটা দু’জনই অশিক্ষিত। তার উপর অসৎ, দুর্নীতিবাজ। তারপরও কিছু শিক্ষক ম্যানেজ করে ওদের পক্ষে কথা বলান। সংক্ষেপে বললে বলতে হয়- ওরা ’৭৫ পরবর্তী প্রজন্ম এবং চরম আওয়ামী লীগ বিরোধী। এদের আওয়ামী লীগ বিরোধিতা কখনও-সখনও স্বাধীনতা বিরোধিতার পর্যায়ে পড়ে। খড়-কুটা ধরে বাঁচতে চায়। আর সে কারণেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চক্রান্তকারীদের এতটুকু সময় দেননি। রক্তচোষা জোঁকের মুখে চুন বা লবণ দিয়ে মাথা নামিয়ে দিলেন। সবচেয়ে বড় কথা শেখ হাসিনা অঞ্চলে অঞ্চলে সমতার জন্য প্রতিটি জেলায় কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে চলেছেন। যাদের ঢাকায় থেকে লেখাপড়া করার সঙ্গতি নেই তারা স্থানীয় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়ে শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেয়া ডিজিটাইজেশনের সুযোগ নিয়ে সরকারী চাকরিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন এবং কোটার সুযোগে নিয়োগও পেতে পারতেন। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, পাহাড়ী ও দ্বীপ জেলার প্রার্থীরা কি ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকতে পারবেন? শেখ হাসিনা কোটা বাতিল করে তাদেরও স্বাধীনতা দিয়ে দিলেন। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুযোগ-সুবিধার প্রশ্নে দেশের প্রতিটি অঞ্চল, প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাতে সমতা বজায় থাকে সেজন্য কোটা প্রথা প্রবর্তন করেছিলেন। যাদের কোটা প্রথা তারাই যখন চায় না, তখন এটা রাখারও কোন যৌক্তিকতা নেই। এরপরও মাদার অব হিউম্যানিটি বা মানবিকতার জননী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধী প্রজন্মের কথা ভোলেননি। তাদের কিভাবে উন্নত অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সমানতালে হাঁটার যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা দেয়া যায় সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন। এই-ই শেখ হাসিনা, এই-ই মুক্তিযুদ্ধের বাংলার প্রধানমন্ত্রী, সাহসী রাষ্ট্রনেতা। তবে এটা ঠিক রাজাকার-আলবদর-আলশামস ও তাদের পূর্বসূরি মুসলিম লীগ, জামায়াত এবং তাদের পৃষ্ঠপোষক খালেদা-তারেক তথা বিএনপি দলগতভাবে একটা ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও বাঙালিয়ানার ওপর কুঠারাঘাত করতে পেরেছে। বাঙালিয়ানা, বাংলা নববর্ষ, পয়লা বৈশাখ এসব মূলত অসাম্প্রদায়িকতারই বিভিন্ন রূপ। জামায়াত-শিবির জঙ্গী বানিয়ে অসাম্প্রদায়িক মানুষের, লেখক-বুদ্ধিজীবীদের, প্রগতিশীল চিন্তকদের হত্যা করছে, করাচ্ছে। অবশ্য শেখ হাসিনা তাদের ব্যাপারে জিরো টরারেন্স বা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করে কঠোরভাবে দমন করে চলেছেন। সবই করছেন গণতন্ত্র, আইনের শাসন রক্ষা করেই। তারপরেও নববর্ষ এখন আর গ্রামে নেই, শহরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢুকে গেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিই মূলত পয়লা বৈশাখ, বাঙালিয়ানা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বর্ষবরণ, নববর্ষের মেলা তথা আনন্দোৎসব বিরোধী। এই শক্তিই ষাটের দশকের গোড়ার দিকে রবীন্দ্রসঙ্গীত বিরোধী ফতোয়া দিয়েছিল। যার প্রতিবাদে সেদিন ছায়ানট প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। একটা লেখায় দেখলাম ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করতো। কিন্তু হিজরী সন চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ও ফসলের সঙ্গে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদের খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য হতে হতো। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজী নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে ‘বঙ্গাব্দ’ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পয়লা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকতে হতো। পরদিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখে ভূমি মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিস্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হতো। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়, যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হলো বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হতো। হালখাতার দিনে দোকানদাররা তাদের ক্রেতাদের মিস্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষত স্বর্ণের দোকানে ও বড় বড় আড়তে। যদ্দুর জানা যায়, ১৫৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলায় মাসের হিসাব হতো হিজরী ক্যালেন্ডারের অনুকরণে। হিজরী ক্যালেন্ডার রচিত হতো চাঁদের গতি-প্রকৃতির ওপর, যা বাংলায় ফসল কাটা বা ঘরে তোলার সঙ্গে মিল ছিল না। যাতে করে সম্রাটের খাজনা আদায় এবং আড়তদার মহাজনদের হালখাতার সঙ্গে মিল ছিল না। তাই সম্রাট আকবরের সময় ফসল টাকা বা ঘরে তোলার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলা সনের প্রবর্তন করা হয়, যা বাংলায় গৃহীত হয়। এই খাজনা আদায় বা নতুন হালখাতা খোলা যাতে বিগত বছরের হিসাব থাকত, ক্রেতারা এসে বিগত বছরের দায় মিটিয়ে নতুন বছরের খাতায় নাম লেখাত এবং এ উপলক্ষে মিষ্টি খাওয়া হতো। উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হতো। এসব ক্ষেত্রেও সেকালে কিছু বাড়াবাড়ি পরিলক্ষিত হতো; কিন্তু সে সবের সঙ্গে যেমন পয়লা বৈশাখের মেলা আনন্দোৎসবের কোন যোগসূত্র ছিল না, একালেও তেমনি অসামঞ্জস্য বাড়াবাড়ি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আবার কিছু কিছু হাস্যকর ব্যাপারও রয়েছে, যেমন একটি গোষ্ঠী মনে করে সম্রাট আকবর তো বাঙালীও ছিলেন না, বাংলা ভাষাভাষীও ছিলেন না। কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়সই যেখানে ১০০ বছর নয় সেখানে এর অধীন চারুকলার আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা কি করে ‘হাজার বছরের বাঙালী সংস্কৃতি’ হলো? প্রিয় পাঠকগণ এসব মানুষকে কি বলা যাবে? মূর্খ, না অন্য কিছু? ঢাকা ॥ ১২ এপ্রিল ২০১৮ লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও সভাপতি জাতীয় প্রেসক্লাব [email protected]
×