ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া যুদ্ধ বাধতে পারে ॥ মস্কোর হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া যুদ্ধ বাধতে পারে ॥ মস্কোর হুঁশিয়ারি

সিরিয়ায় সামরিক হামলার বিপদ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে রাশিয়া। দুমায় সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের বিমান হামলা শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে বলেও শঙ্কা তাদের। জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভেসেলি নেবেনজিয়া বৃহস্পতিবার সিরিয়ায় হামলা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার হচ্ছে যুদ্ধের বিপদকে প্রতিহত করা, বলেন তিনি। সিরিয়ার পরিস্থিতিকে খুবই বিপজ্জনক অ্যাখ্যা দিয়ে নেবেনজিয়া বলেন, আন্তর্জাতিক শান্তিকে ঝুঁকির মুখে ফেলার দায় বহন করতে হবে ওয়াশিংটনকে। আসাদ সমর্থক বাহিনী রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর। যদিও সিরীয় সরকারী বাহিনীর মিত্র রাশিয়া এ ধরনের পদক্ষেপের ব্যাপারে আগে থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা কোন সম্ভাবনাকে বাদ দিচ্ছি না, বৃহ¯পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক সেরে সাংবাদিকদের বলেন নেবেনজিয়া। সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর উপস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোন ধরনের সামরিক পদক্ষেপ বিপদের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও মন্তব্য তার। নেবেনজিয়ার আগে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধানও সিরিয়ায় হামলার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছিলেন, রুশ স্থাপনা ও সেনাদল হুমকির মুখে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করা হবে এবং যেসব স্থাপনা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হবে, তাও গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। পশ্চিমের দেশগুলোর সম্ভাব্য হামলা বিষয়ে শুক্রবারও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বান করেছেন নেবেনজিয়া। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা এখনও দুমায় সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলার কি ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো যায়, তা খতিয়ে দেখছে। রাসায়নিক অস্ত্র নিরোধ আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিকেল উইপন্স (ওপিসিডব্লিউ) জানিয়েছে, দুমায় বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহৃত হয়েছিল কিনা তা অনুসন্ধানে তাদের বিশেষজ্ঞরা সিরিয়ায় যাচ্ছে। শনিবার থেকে ওই বিশেষজ্ঞ দল কাজ শুরু করবে। এদিকে সিরিয়ার দুমায় গত সপ্তাহান্তে সিরিয়া সরকারের রাসায়নিক অস্ত্র হামলার প্রমাণ আছে বলে দাবি করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তবে সব প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ হয়ে গেলেই সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ করা হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পশ্চিমা দেশগুলো দুমায় ওই রাসায়নিক হামলার জবাবে সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করেছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। টিভিতে এক সাক্ষাতকারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, গত সপ্তাহে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে... অন্ততপক্ষে ক্লোরিন ব্যবহার হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। আর সেটি প্রয়োগ করেছে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার। এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পেলে সেখানে হামলার হুমকি দিয়েছিলেন এবং সিরিয়া সরকারের রাসায়নিক অস্ত্রভা-ারগুলোকেই হামলার লক্ষ্য করা হবে বলে শাসিয়েছিলেন। সিরিয়া অভিযানে ফ্রান্স শামিল হবে কিনা সাক্ষাতকারে এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, এ পদক্ষেপ কতটা উপযোগী এবং কার্যকরী হবে তা বিচার-বিশ্লেষণ করে ঠিক সময়মতোই আমাদের সে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ফ্রান্স এবং মার্কিন কর্মকর্তারা একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং পছন্দমতো সময়েই আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যখন আমরা আমাদের পদক্ষেপটিকে সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে করব তখনই তা করতে হবে। সিরিয়ার অস্ত্র স্থাপনাগুলো হামলার লক্ষ্য হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, আমাদের সব তথ্য যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেন, গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয় এমন কোন কাজ ফ্রান্স করবে না। কিন্তু ফ্রান্স কোন সরকারকে তাদের যা খুশী তাই করতে দিতে পারে না কিংবা আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ হয় এমন কোন ঘৃণ্য কাজও করতে দিতে পারে না।
×