ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত

ছাত্রলীগ নেত্রী এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৫:১১, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

ছাত্রলীগ নেত্রী এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। গুজবের ওপর ভিত্তি করে এশাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান। শুক্রবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এশাকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের এই তথ্য জানানো হয়। এ দিকে, বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। কবি সুফিয়া কামাল হলে ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সুফিয়া কামাল হলের বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা এশাকে অবরুদ্ধ করেন। এ ঘটনায় তাকে প্রথমে হল থেকে, পরে ছাত্রলীগ থেকে এবং সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কার ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে আবিদ আল হাসান বলেন, গুজবের কারণে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় এশাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে এশা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি নুসরাত জাহান ও নিশীতা ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার ইফফাতের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করল ছাত্রলীগ। ঘটনার দিন (মঙ্গলবার গভীর রাত) সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, ইফফাত প্রায়ই ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন চালাতেন। তবে এতদিন ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। আন্দোলনে যোগ দেয়ায় এ দিন রাতে বেশ কয়েকজনকে কক্ষে ডেকে চড়-থাপ্পড় দেন ইফফাত। রাতে ছাত্রীদের চিৎকার শুনে সেখানে যান উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোর্শেদা খানম। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মোর্শেদা কক্ষের জানালার কাঁচে লাথি মারেন। এতে তার পা কেটে যায়। খবর পেয়ে অন্য ছাত্রীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ইফফাতকে মারধর করে তাকে আটকে রাখেন। তাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন অনেকে। কেউ কেউ মোর্শেদার কেটে যাওয়া পায়ের ছবি তুলে ও ছাত্রী নির্যাতনের কথা লিখে ফেসবুকে শেয়ার করেন। মোর্শেদাকে প্রথমে সরকারী কর্মচারী হাসপাতাল ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ছাত্রী নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে হলের সামনে বিভিন্ন হলের ছাত্ররা জড়ো হয়ে ইফফাতের বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। ইফফাতকে বহিষ্কারের দাবিতে হলের ভেতরে ছাত্রীরা ও বাইরে কয়েক হাজার ছাত্র বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী হলে প্রবেশ করলে ছাত্রদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে ইফফাতকে বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আখতারুজ্জামান বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানালে ছাত্ররা ফিরে যান।
×