ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদ

ভিসির বাসায় হামলা ও তারেকের নির্দেশনা একই সূত্রে গাঁথা

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

ভিসির বাসায় হামলা ও তারেকের নির্দেশনা একই সূত্রে গাঁথা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং দলের অন্যতম মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এবং তারেক রহমানের টেলিফোনে নির্দেশনা একই সূত্রে গাথা। এই দুটি ঘটনার আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। শুক্রবার সকালে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারী চাকরির কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণায় আন্দোলনকারীরা খুশি হয়ে তাকে মাদার অব এডুকেশন উপাধি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে ছাত্ররা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়েছে। কিন্তু সবাই খুশি হলেও বিএনপি খুশি হতে পারেনি। তারা এই আন্দোলনকে নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করতে চেয়েছিল। তাদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পরাজয় হয়েছে বিধায় তাদের এত গাত্রদাহ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় প্রকৃতপক্ষে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে পার্থক্য আছে। আমাদের গর্বিত সেনা বাহিনী হচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অর্থাৎ পুলিশ, র‌্যাবসহ যারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ তাদের দায়িত্ব। নিরাপত্তা বাহিনীর কাজ হচ্ছে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অথচ বিএনপি আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনীকে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ করাতে চায়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও আমাদের সেনাবাহিনীকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি একটি পরগাছা দলে রূপান্তরিত হয়েছে। তাদের নিজেদের কোন আন্দোলন নেই। নিজেরা কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে না। তারা অন্যদের আন্দোলনে খড়কুটার মতো আঁকড়ে ধরে টিকে থাকার চেষ্টা করে। অতীতে তেল গ্যাস রক্ষা কমিটির আন্দোলনে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব¡ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। সবশেষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আশ্রয় নেয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রলীগের সভানেত্রী ইফফাত জাহানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারাদেশ দেশের মৌলিক অধিকার ও সংবিধানের পরিপন্থী। তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করাও ঠিক হয়নি। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রলীগের সভানেত্রীকে যে প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, সেটি সঠিক ছিল না। ছাত্রলীগ তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে আমি মনে করি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’ তদন্ত ছাড়া ইফফাতকে বহিষ্কার করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘একটি ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর কোন ধরনের তদন্ত ছাড়া মৌখিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে দেয়ার মতো ঘোষণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান দিতে পারে এটি আমার কল্পনারও বাইরে। এটি দেশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, সংবিধানপরিপন্থী, যেটি সমীচীন হয়নি। যে কেউ অপরাধ করলে সেটির তদন্ত হতে হবে। তদন্তের পর শাস্তি হবে। এখানে কোন তদন্তই করা হয়নি।’ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদিকা ফরিদুন্নাহার লাইলি, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদিকা শামসুন্নাহার চাপা, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
×