ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসো হে বৈশাখ ॥ বর্ষবরণে বর্ণাঢ্য আয়োজন

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

এসো হে বৈশাখ ॥ বর্ষবরণে বর্ণাঢ্য আয়োজন

মোরসালিন মিজান ॥ ওই বুঝি কালবৈশাখী/সন্ধ্যা-আকাশ দেয় ঢাকি/ভয় কী রে তোর ভয় কারে, দ্বার খুলে দিস চার ধারে...। চার ধারে যত দ্বার যত জানালা সব আজ খোলা। হঠাৎ জমা কালো মেঘ দূর হয়েছে। বাঙালীর উদার অসাম্প্রদায়িক চেতনার উজ্জ্বল আলোয় অগ্নিবাণে পুড়েছে অন্ধকার। এসো এসো উৎস স্রোতে গূঢ় অন্ধকার হতে/এসো হে নির্মল কলকল্ ছলছল্...। সত্য সুন্দর নির্মল দিন এসেছে। উগ্রবাদ, ধর্মান্ধতা, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের নোংরা রাজনীতি পরাজিত হয়েছে। শেকড়ের শক্তিতে রুখে দাঁড়িয়েছে বাঙালী। আজ শনিবার ১৪২৫ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। পহেলা বৈশাখ। বর্ষবরণ নয় শুধু, বাঙালীর অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎসব। মহোৎসবে যোগ দেবে সারাদেশ। তপোবহ্নির শিখা জ্বালো জ্বালো/নির্বাণহীন নির্মল আলো...। অফুরান এই আলোয় আজ উদ্ভাসিত হবে বাংলাদেশ। যখন মুখোশের আড়ালে মুখ, মেধার নামে মূর্খের চাষ, অশিক্ষা, যখন দেশপ্রেমের পরীক্ষায় সেই একাত্তর সালে পাস করে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করার স্পর্ধা দেখাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রজন্ম, যখন কল্যাণ রাষ্ট্রের চিন্তা থেকে বাংলাদেশকে টেনে হিঁচড়ে নামানোর ভয়ঙ্কর ঐক্য, যখন ইতিহাস থেকে বিচ্যুত বিভ্রান্ত তারুণ্য শুধু নিজের জন্য বাঁচতে চায়, যখন নারীর বিরুদ্ধে নারীকেই দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে, যখন দুর্গম পাহাড়ে বেঁচে থাকার কঠিন সংগ্রামকে স্বীকার করা হয় না, প্রতিবন্দ্বীদের আগলে রাখার মতো মানবিক চিন্তা যখন মার খাচ্ছে তখন নতুন এক তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়েছে বৈশাখ। এ বৈশাখ জোট বাঁধার। প্রতিবাদের প্রতিরোধের। লোক ঐতিহ্যের প্রধান শক্তি অসাম্প্রদায়িকতা মানবিক মূল্যবোধ সাম্য সুন্দর শান্তির বাণী নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বৈশাখ। আজ হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির আলোয় নতুন করে জ্বলে উঠবে বাঙালী। দ্রোহের আগুনে শাণিত হবে। বাঙালীর চেতনাবিরোধী অপশক্তি রুখতে নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নেবে বাংলাদেশ। বছরের প্রথম দিনে আজ নতুন নতুন স্বপ্ন বুনবে বাংলার কৃষক। হালখাতা খুলবে ব্যবসায়ীরা। সরকারী ছুটির দিনে রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে চলবে লোকজ ঐতিহ্যের নানা উৎসব অনুষ্ঠান। বাংলা নববর্ষের এই সূচনালগ্নে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক কৃষির। এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সাল প্রবর্তন করেন স¤্রাট আকবর। তার আমলেই প্রবর্তন হয় বাংলা সাল। এখন তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত। বঙ্গাব্দের মাস হিসেবে বৈশাখের প্রথম স্থান অধিকার করার ইতিহাসটি বেশি দিনের না হলেও, আদি সাহিত্যে বৈশাখের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। দক্ষের ২৭ কন্যার মধ্যে অনন্য সুন্দরী অথচ খরতাপময় মেজাজসম্পন্ন একজনের নাম বিশাখা। এই বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারেই বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখের নামকরণ। বৈদিক যুগে সৌরমতে বৎসর গণনার পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। সেখানেও সন্ধান মেলে বৈশাখের। পেছনের যত ক্ষত ভুলে এ মাসেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে বাঙালী। সেই শুভ সূচনা হয় পহেলা বৈশাখে। কবিগুরুর ভাষায়Ñ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা...। পুরনো দিনের শোক-তাপ-বেদনা-অপ্রাপ্তি-আক্ষেপ ভুলে অপার সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করবে। দুই হাতে অন্ধকার ঠেলে, সকল ভয়কে জয় করার মানসে নতুন করে জেগে উঠবে বাঙালী। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সকল শেণী-পেশার মানুষ আজ একাত্মা হয়ে গাইবেÑ এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ...। আনন্দে উৎসবে মাতবে গোটা দেশ। কবিগুরুর ভাষায়Ñ নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে/শুভ্র সুন্দর প্রীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে...। একই আনন্দের বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে নজরুল লিখেছেন- তোরা সব জয়ধ্বনি কর/তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়/ তোরা সব জয়ধ্বনি কর...। আবহমান কাল ধরেই চলছে বৈশাখ বরণের আনুষ্ঠানিকতা। প্রকৃত রূপটি দৃশ্যমান হয় গ্রামে। একসময় গ্রামবাংলায় চৈত্রসংক্রান্তি ছিল প্রধান উৎসব। বছরের শেষ দিনে তেতো খাবার খেয়ে শরীর শুদ্ধ করতেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। নির্মল চিত্তে প্রস্তুত হতেন নতুন বছরে প্রবেশ করার জন্য। এখনও বৈশাখ বরণের অংশ হিসেবে বাড়িঘর ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করেন গৃহিণীরা। অদ্ভুত মুন্সিয়ানায় আল্পনা আঁকেন মাটির মেঝেতে। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন সবাই। স্নান সারেন। নতুন পোশাক পরেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে যান। ঘরে ঘরে সাধ্যমতো বিশেষ খাবার রান্না করা হয়। থাকে পিঠা-পুলির আয়োজন। আজ হাটে-মাঠে-ঘাটে বসবে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা। নানা রকম কুটির শিল্প, খেলনা, মিষ্টিসহ বাহারি পণ্যে স্টল সাজানো হবে। বিভিন্ন এলাকায় থাকবে নৌকা বাইচ, লাঠিখেলা কিংবা কুস্তির মতো ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। নাগরিক জীবনেও বিপুল আনন্দ যোগ করে পহেলা বৈশাখ। বর্ষবরণের দিন সব শহরেই আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য উৎসব অনুষ্ঠানের। ধর্ম-বর্ণ ভেদ ভুলে অসাম্প্রদায়িক উৎসবে মাতে বাংলা। ষাটের দশকে বাঙালী চেতনাবিরোধী অবস্থানের প্রতিবাদে রাজধানী শহর ঢাকার রমনা বটমূলে শুরু হয় বৈশাখ উদযাপন। এর মাধ্যমে বাঙালী আপন পরিচয়ে সামনে আসার সুযোগ পায়। পরবর্তী সময়ে বাঙালীর রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উত্থান ঘটে পহেলা বৈশাখের। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিবসটি বর্তমানে বাঙালীর জাতিসত্তায়, চেতনায় ও অনুভবের জগতে গভীরভাবে বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের বলাটি চমৎকার। তিনি বলেছেন, আমাদের অধুনাতম নববর্ষ এ দেশের গ্রীষ্মকালীন উৎসব ও কৃষি উৎসব উদযাপনের একটি বিবর্তিত নব সংস্করণ। এর এতিহ্য প্রাচীন কিন্তু রূপ নতুন, নতুন সংস্কার, নতুন সংস্কৃতি, নতুন চিন্তাধারা অবারিত স্রোতে যুক্ত হয়ে সৃষ্টি করেছে এমন এক নতুন আবহ যাকে একটা দার্শনিক পরিমন্ডল বলে উল্লেখ করতে হয়। এ পরিমন্ডলে পুরাতন বিলীন জীর্ণস্তূপ নিশ্চিহ্ন, মিথ্যা বিলুপ্ত ও অসত্য অদৃশ্য। আর নতুন আবির্ভূত নবজীবন জাগরিত সুন্দর সম্মিত ও মঙ্গল সম্ভাবিত কালবৈশাখীই এর প্রতীক। সে নববর্ষের অমোঘ সহচর। নবসৃষ্টির অগ্রদূত সুন্দরের অগ্রপথিক ও বিজয়কেতন। ছায়ানটের সঙ্গে দিন শুরু ॥ বাঙালীর বর্ষবরণ মানেই ছায়ানট। অন্তত শুরুটা ছায়ানটের সঙ্গে না করলেই নয়। এবারও পহেলা বৈশাখ ভোর বেলায় মানুষেরে স্রোত নামবে রমনা বটমূলে। এবার ৫১তম আয়োজন। বরাবরের মতো এবারেও অনুষ্ঠান শুরু ভোর সোয়া ছয়টায়। বাঁশিতে ভোরের রাগালাপ দিয়ে সূচনা করা হবে। দেড় শ’র বেশি শিল্পী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠান চলবে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ। থাকবে ১৬টি একক গান। ১২টি সম্মেলক গান। ২টি আবৃত্তি। এ প্রসঙ্গে ছায়ানটের সভাপতি সন্জীদা খাতুন বলেন, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিছক গান গাওয়া নয়, বাঙালিত্বের সাধনা। আজ এ উদ্দেশ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এবারের পহেলা বৈশাখের প্রেক্ষিত তুলে ধরে তিনি বলেন, পাকিস্তান আমাদের দেশটাকে স্বার্থকভাবে শেষ করতে পেরেছিল। তাই এখনও এত লড়তে হচ্ছে আমাদের। মুক্তিযুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। স্বাধীনতার আন্দোলন স্থির কাজ নয়। নিয়ত সাধনার বিষয়। এই সাধনা করে যেতে হবে। তা না হলে আমরা হেরে যাব। এ অবস্থায় সংস্কৃতিকে হাতিয়ার করে আবারও সকলকে যুদ্ধে নামার আহ্বান জানান তিনি। বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা ॥ বর্ষবরণ উৎসবের আরেকটি প্রধানতম আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা। বহু বছর ধরে বর্ণাঢ্য এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। আজ পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টার পর বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলা থেকে বের হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল চত্বর ঘুরে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এর উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। একই ধরনের আয়োজন করছে দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজ। এর ফলে ঢাকায় নয় শুধু, সারাদেশেই মঙ্গলের বার্তা ছড়িয়ে পরবে বলে আশা করা হচ্ছে। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা হয়েছে ৮টি স্ট্রাকচারাল ফর্ম। বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির পুতুলগুলোকেই বিশেষভাবে সামনে রেখেছেন আয়োজকরা। মাছ, বক, মহিষসহ বিভিন্ন প্রাণীর আদল গড়া হয়েছে বাঁশ দিয়ে। বরাবরের মতো এগুলোই হবে শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ। তবে এরইমধ্যে একদফা আক্রান্ত হয়েছে চারুকলা। সরকারী চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের মধ্যে যে মৌলবাদী অংশটি ঢুকেছিল, সেটি কয়েকদিন আগে হামলে পড়ে চারুকলায়। তিনটি গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রজন্ম। মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে বহুকালের ক্ষোভ। সেই ক্ষোভ মেটাতে বাঙালীর লোক ঐতিহ্যের নানা উপাদান দিয়ে সাজানো চত্বর তছনছ করে। শোভাযাত্রা আয়োজনের তহবিল গঠনের লক্ষ্যে জয়নুল গ্যালারির সামনে প্রতিদিন ছবি আঁকেন শিল্পীরা। ছবিগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়। জঙ্গী মানসিকতা থেকে এরা মঙ্গল শোভাযাত্রার স্ট্রাকচারাল ফর্মগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে। অবশ্য চারুকলা অনুষদের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও শিল্পীদের আন্তরিক চেষ্টায় সবকটি কাঠামো শেষতক আপন চেহারায় দাঁড়িয়েছে। এবারের আয়োজন সম্পর্কে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজক চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন বলেন, আমাদের প্রস্তুতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছিল। কারা করেছে, জানি না। তবে মৌলবাদী গোষ্ঠী সব সময়ই এর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, আমরা থেমে থাকিনি। আজ মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে। এবারের আয়োজনের থিম ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।’ সোনার মানুষ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সকল বাঙালীকে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। ঋষিজর অনুষ্ঠান শিশু একাডেমির সামনে ॥ ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী শিশুপার্কের পাশে নারকেলবিথী চত্বরে বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করবে। আয়োজনের শুরুতেই দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেবে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। এরপর থাকবে অন্যান্য দলের পরিবেশনা। রাষ্ট্রপতির বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে দেশবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের ঐক্যকে আরও সুসংহত করবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষি, ব্যবসা, পার্বণসহ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বাংলা সনের ব্যবহার ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বাঙালীর জীবনে বাংলা নববর্ষের আবেদন তাই চিরন্তন ও সর্বজনীন। সকল অশুভ ও অসুন্দরের ওপর সত্য ও সুন্দরের জয় কামনা করেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রীর বাণী ॥ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বাঙালী সংস্কৃতির যে চর্চা হয় তা আমাদের জাতিসত্তাকে আরও বিকশিত করে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগায়। শেখ হাসিনা বলেন, বর্ষবরণের উৎসবে এ চেতনাকে নস্যাত করার জন্য স্বাধীনতার আগে ও পরে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। আঘাত করা হয়েছে বার বার। বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক শক্তির কোন অপচেষ্টাই সফল হয়নি। বাঙালী জাতি নববর্ষকে ধারণ করেছে তার জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে। নববর্ষে রাজনীতির নামে আগুনে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নতুন বছরে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
×