ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে বৈশাখে মাতছে রেস্তরাঁ

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

চট্টগ্রামে বৈশাখে মাতছে রেস্তরাঁ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বৈশাখের মেন্যু থেকে বাদ পড়েছে ইলিশ। তাই পান্তা আর চিংড়ি সেইসঙ্গে বেগুন ভর্তা বৈশাখী খাবারের তালিকায়। শুনে জ্বিভে পানি এসে যায়। এমন সব রকমারি দেশীয় খাবারের আয়োজন নিয়ে বাংলা বর্ষ ১৪২৫-কে বরণ করতে প্রস্তুত চট্টগ্রামের হোটেল, মোটেল আর রেস্তরাঁ। যেখানে এতদিন থাই বাংলা আর চাইনিজের ছড়াছড়ি ছিল মাত্র একদিনের জন্য হলেও পহেলা বৈশাখের দুপুরের আর রাতের খাবার চলবে বাংলা খাবারের পরিপূর্ণ আয়োজন। রেস্তরাঁগুলো প্রস্তুত থাকছে বাংলা খাবারের পরিপূর্ণতা নিয়ে। ‘মেতে উঠি উৎসবে আর বৈশাখে আনন্দে’ এমন আকর্ষণীয় স্লোগান নিয়ে বাংলা খাবারের তালিকা। চট্টগ্রামের কয়েকটি রেস্তরাঁয় পহেলা বৈশাখের দুপুর আর রাতের খাবারের মেন্যু করা হয়েছে। আবার কোন কোন রেস্তরাঁ যেন সাদা ভাত আর কোরাল মাছের ঝোলকে প্রাধান্য দিয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। সেইসঙ্গে থাকছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শুঁটকির ভর্তা। খাবারের পাশাপাশি সেই আয়োজনে থাকছে বাংলার চিরায়িত পল্লী আর ভাওয়াইয়া গানের জমজমাট আসর। এসো হে বৈশাখ, এসো হে বৈশাখ ‘মেতে উঠি উৎসবে বৈশাখে আনন্দে’ এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বৈশাখকে বরণ করে নিতে চট্টগ্রাম শহরজুড়ে বাংলা সংস্কৃতির শত বছরের ধারা চলমান রয়েছে। আবার গত কয়েক বছর ধরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে কর্ণফুলীর মোহনায়ও চলবে বাংলা বর্ষ ১৪২৫ কে বরণের পালা। নগরীর বিভিন্ন ব্যুফে রেস্তরাঁগুলোতে ‘যত পারেন তত খান’ এমন আয়োজন সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চলবে পান্তা আর গলদা চিংড়ির আয়োজন। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলবে বাংলা খাবারের চমকপ্রদ আয়োজন। চট্টগ্রামে বিভিন্ন রেস্তরাঁর আইটেমের মধ্যে রয়েছে- পান্তা ভাত, খুদের ভাত, সাদা ভাত, ভুনা খিচুড়ি, আর খাসির তেহেরি। মাছের মধ্যে রয়েছেÑ মলা, ঢেলা, কই, ইলিশ, শিং, রুই, লইট্টা, মাগুর, বোয়াল, শোল, টাঁকি, বাটা, পোয়া ও পুঁটি মাছ। ভর্তার মধ্যে রয়েছে- চিংড়ি শুঁটকির ভর্তা, ছুরি শুঁটকি ভর্তা, আনাজ কলার ভর্তা, পেপে ভর্তা, থানকুনি পাতার ভর্তা, আলু ভর্তা, শিমের ভর্তা, চাপা শুঁটকি ভর্তা, টাঁকি মাছের ভর্তা, কাঁচা আমের ভর্তা, লইট্টা শুঁটকির ভর্তা, বৈশাখী ভর্তা। এ ছাড়াও থাকছে সবজির পাঁচমিশালি ভর্তা। ভাজার মধ্যে রয়েছে- লাল শাক, পালং শাক, ঢেঁড়স, কুমড়া, পটোল, কাঁকরল, পাটের শাক ও আলু ভাজা। মাংসের মধ্যে রয়েছেÑ হাঁস, গরু, মুরগি, কবুতর, কোয়েল পাখি ও খাসির মাংস। এছাড়াও গরুর নলা এবং চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের মাংসও থাকছে দুপুর ও রাতের খাবারের সঙ্গে। পিঠা পায়েসের মধ্যে রয়েছেÑ পাটি সাপটা পিঠা, পাক্কন পিঠা, ডিমের পিঠা, চিতই পিঠা, নারিকেলের পিঠা, সুজি পিঠাসহ বাঙালী ঘরনার নানা পিঠা। ভাত খাবার পর মিষ্টি খাবারের মধ্যে থাকছেÑ রসগোল্লা, হরেক রকমের মিষ্টি, শাহী জিলাপি, গুড়ের পায়েস, মিষ্টি দই, টক দই, ফিরনীসহ নানা মিষ্টান্ন খাবার। খাবারের পর অনেকে মিষ্টান্ন খাবার খেতে পছন্দ করে না তাই অনেকে দেশীয় ফলের স্বাদ নিতে পছন্দ করেন। খাবারের পর দেশীয় ফল তথা- বাংলা কলা, চাপা কলা, বাঙ্গি, তরমুজ, পেঁপে, কাঁঠাল ও আনারস প্রধান। এ ব্যাপারে কয়েকটি রেস্তরাঁর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাঙালি খাবারের পূর্ণ নিশ্চয়তায় এবারের বৈশাখের প্রথম দুপুর আর রাতের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। শতাধিক ঘরোয়া আইটেমে চট্টগ্রামবাসীর পছন্দের মেন্যু ও প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। গ্রাম বাংলার সেই খাবারের স্বাদ আমরা আমাদের খাবারে তুলে ধরতেই ব্যুফের আয়োজন করেছি। জ্বিভের স্বাদ মিটে যাবে আমাদের এই আয়োজনে। যশোরে বৈশাখ বন্দনারপ্রস্তুতি স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, বিদায় লগ্নে চৈত্র। চৌকাঠে বৈশাখ। ঐতিহ্যসমৃদ্ধ পয়লা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। সংস্কার, সংস্কৃতি ও লোকবিশ্বাসে ভরপুর বর্ণিল উৎসবের দিন। এদিন আপামর বাঙালী নতুন স্বপ্নে, নবীন আশ্বাসে মেতে ওঠে বৈশাখী নববর্ষে। ঘনিয়ে আসা ঐতিহ্যময় বৈশাখী উৎসবে মেতে উঠতে উন্মুখ হয়ে আছে বাঙালী। আর তাই বরাবরের মতো যশোরবাসীকে নিয়ে বৈশাখ বন্দনায় মেতে উঠতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে শীর্ষ সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী। প্রায় চার শ’ উদীচী শিল্পী উৎসবের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে। পয়লা বৈশাখের দিন সূর্যোদয় লগ্নে শহরের পৌর উদ্যানে সমবেত হবে উদীচী শিল্পীরা। ভোরের প্রসন্ন বাতাসে তবলার লহরি, হারমোনিয়াম আর রাখালিয়া বাঁশির সুর তুলে ভৈরবী রাগের সঙ্গে বৈশাখ নামের রাজপুত্র-দিনটিকে আহ্বান জানাবে উদীচী। ‘বৈশাখ আমার ঐতিহ্য, বাঙালীয়ানার রীতি, শতবর্ষের গাছের ছায়ায় বাঁচুক সংস্কৃতি’ সেøাগানকে উপজীব্য করে এবারের বর্ষবরণ উৎসবের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
×