ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এডব্লিউডি পদ্ধতিতে পানি সাশ্রয় ॥ বাড়বে উৎপাদন

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

এডব্লিউডি পদ্ধতিতে পানি সাশ্রয় ॥ বাড়বে উৎপাদন

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ এ দেশের কৃষকদের উদ্ভাবিত একটি সনাতন পদ্ধতির নাম ‘পিঠ দেয়া’। ক্ষেত পর্যায়ক্রমে শুকানো ও সেচ দেয়ার মাধ্যমে পানি সাশ্রয় করা হয় এ পদ্ধতিতে। এতে ফলনও বাড়ে। এ পদ্ধতিরই আধুনিক রূপান্তর অলটারনেট ওয়েটিং এ্যান্ড ডায়িং (এডব্লিউডি)। আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) উদ্ভাবিত এ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষে ৪০ ভাগ পানি সাশ্রয় করা যায়। একই সঙ্গে উৎপাদন বাড়ে ২০ শতাংশ। জানা গেছে, ধান চাষের জন্য অনবরত দাঁড়ানো পানি রাখার প্রয়োজন নেই; বরং সেচ দেয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শুকিয়ে আবার সেচ দিলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। পদ্ধতিটির বর্ণনায় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ধানের ক্ষেতে ছিদ্র্রযুক্ত পর্যবেক্ষণ পাইপ বসানো হয়। এটি পিভিসি পাইপ অথবা বাঁশের ছিদ্রযুক্ত চোঙ্গাও হতে পারে। নলের ব্যাস ৭-১০ সেন্টিমিটার এবং নলটি ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হতে হবে। নলটির নিচের দিক থেকে ২০ সেন্টিমিটার ছিদ্রযুক্ত এবং ওপরের দিকের ১০ সেন্টিমিটার ছিদ্রবিহীন হবে। ছিদ্রগুলো হবে ১০ মিলিমিটার দূরে দূরে ৫ মিলিমিটার ব্যাসের। এক সারি ছিদ্র থেকে আরেক সারির দূরত্ব হবে ১০ মিলিমিটার। জমিতে নলটি এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যেন ছিদ্রযুক্ত অংশটি মাটির ভেতরে থাকে। আইলের পাশে সুবিধাজনক স্থানে নলটি স্থাপন করতে হবে, যাতে নিয়মিত পানির স্তর পর্যবেক্ষণ করা যায়। খেয়াল রাখতে হবে নলের ভেতরে যেন মাটি না থাকে। এভাবে প্রতিটি ক্ষেতে তিনটি নল স্থাপন করলে ভাল হয়। জমিতে পাঁচ সেন্টিমিটার পানি দাঁড়ালে সেচ বন্ধ করে দিতে হবে। দাঁড়ানো পানি শুকিয়ে গেলে নিয়মিত নলের ভেতর পানির স্তর পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পানির স্তর জমির লেভেল থেকে ১৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে গেলে আবার আগের মতো সেচ দিতে হবে। এ পদ্ধতি গ্রহণের সময় আগাছা নিয়ন্ত্রণে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। চারা রোপণের পর থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত টানা জমিতে ২-৪ সেন্টিমিটার দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে। আর ফুল আসা থেকে দুধ জমা পর্যন্ত দুই সপ্তাহ অবশ্যই পাঁচ সেন্টিমিটার দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে। এ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত একবার আগাছা পরিষ্কার করতে হতে পারে।সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, এ পদ্ধতি গ্রহণ করলে রোপণের প্রথম দিকেই একসঙ্গে কুশি বের হয়, যা পূর্ণমাত্রায় ফলন দেয়। কিন্তু সবসময় দাঁড়ানো পানি থাকলে কুশি বের হয় বিভিন্ন সময়ে। এতে সব কুশি ফলবতী হয় না। জমিতে ব্যবহার করা সারও পূর্ণমাত্রায় ফসলের কাজে লাগে।
×