ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখছে কৃষক

হাওড়ে বোরোর বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

হাওড়ে বোরোর বাম্পার ফলন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কিশোরগঞ্জের হাওড়গুলোতে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে নতুন ধান কাটা। এ বছর তুলনামূলক ধানের ফলন অনেক বেশি হওয়ায় গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। তবে সব ধান ঘরে তুলতে আরও কয়েকটা দিন অনুকূল আবহাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা। একই সঙ্গে ধানের ন্যায্য দাম পেতে চান কৃষক। গত বছর অকাল বন্যা ভাসিয়ে নিয়েছিল কৃষকের কষ্টে বোনা স্বপ্নের ধান। তখন ছিল শুধু কৃষকের কান্না আর হাহাকার। তবে প্রকৃতি এবার দু’হাত ভরে দান করেছে কৃষকদের। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনারাঙা পাকা ধান। তা দেখে কষ্টের সেই দিনগুলোর কথা ভুলে, আবারও নতুন স্বপ্ন দেখছেন তারা। ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠেছে হাওড়ের পর হাওড়। ইটনার ইরাবিরা হাওড়ের কৃষক মহির উদ্দিনের চোখমুখে আনন্দের ছাপ। তিনি বলেন, ‘গতবার ৫০০ কাঠা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। এবার চাষ করেছি ১২০০ কাঠা জমিতে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, কম করে হলেও ১২ হাজার মণ ধান পাব। কিন্তু গত বছর কোন ধান তুলতে পারেননি তিনি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমার মতো অনেক কৃষকই বেশি জমিতে ধান চাষ করেছেন এবার।’ ইটনা উপজেলার বিস্তৃত হাওড়ের বিভিন্ন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, গতবছর আগাম বন্যায় তাদের সব ধান পানিতে ডুবে যায়। তাই এবার শুরুতেই বোরো-২৮ ধান রোপণ করে ভাল ফলন পেয়েছেন তারা। শতকরা ৯৫ ভাগ ধান ইতোমধ্যে পেকে যাওয়াতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রকৃতির অবস্থা এখনও ভাল আছে। আরও ১০-১৫ দিন আবহাওয়া ভাল থাকলে এবার শতভাগ ধান কেটে নিয়ে যেতে পারার ব্যাপারে আশাবাদী তারা। কৃষকরা আরও জানান, ধানের বাম্পার ফলন যেমন হয়েছে, তেমনি যদি ন্যায্য মূল্য পাওয়া না যায় তাহলে কৃষকদের লোকসান গুণতে হবে। তাই হাওড়ের কৃষকদের জীবন-জীবিকা রক্ষার্থে সরকারকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। বর্তমানে ৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে ধান। তাই দাম নিয়েও স্বস্তিতে রয়েছে কৃষক। তারা মনে করেন, শেষ পর্যন্ত এ দামটাই যদি তারা পান তাহলেই খুশি হবেন তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে কিশোরগঞ্জে। প্রতিকূলতা জয় করে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধানের ফলন হয়েছে। গত বছরের বন্যার পর সব সময় কৃষকের পাশে ছিল কৃষি বিভাগ। সার ও বীজ থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রণোদনা কৃষকের হাতে পৌঁছানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৬৫ হাজার ২৮২ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে তার চেয়েও দুই হাজার হেক্টর বেশি জমিতে।’ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রথমবারের মতো কিশোরগঞ্জের হাওড়গুলোতে নতুন করে বহু বাঁধ নির্মাণ করেছে। আর তাতে কৃষকদের মাঝে সাহসের সঞ্চার হয়েছে।
×