ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিরিয়া সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি

নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে

জাতিসংঘ সিরিয়ায় বেসামরিক লোকের ওপর রাসায়নিক হামলা নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কটে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নিজ নিজ অবস্থানের নাটকীয় পরিবর্তনের ফলে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা হামলার ঘোষণা দেয়ার পর রাশিয়ার আহ্বানে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রিটেনও মন্ত্রিসভার জরুরী বৈঠক করেছে। খবর এএফপির। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বুধবার সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি নিরাপত্তা পরিষদ এই ধরনের সঙ্কট নিয়ে কোন রকম কূটনৈতিক সমাধানে আসতে না পারে তবে সবকিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। কেননা সময় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও ব্রিটেনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজ আমি নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের রাষ্ট্রদূতদেরকে বর্তমান সঙ্কট নিয়ে সৃষ্ট ঝুঁকির বিষয়ে আমার গভীর উদ্বেগের কথা পুনরাবৃত্তি করছি। পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিতে পারলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, যার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা জরুরী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া আসছে বলে হুমকি দেয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জাতিসংঘ। রাসায়নিক হামলা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাগযুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপটে সেখানে এখন মুখোমুখি সংঘর্ষের আশঙ্কায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এক পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছে, যদি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও রাশিয়াকে দায়ী করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন সেনা অভিযান চালানো হয় তবে আসাদবাহিনী দামেস্কের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ভবনগুলো ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে। বৈরুতে হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে রুশ রাষ্ট্রদূত মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে যে ঘোষণা দেন তারই প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প মারমুখো টুইট করেন। শুধু তাই নয় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মার্কিন সব সমরাস্ত্রকে সরিয়ে নেয়ার আহবানও জানান। ট্রাম্প তার টুইটে বলেন, যদি গত বছর সিরিয়ায় আগের শাস্তিমূলক হামলা অনুসরণ করা হয় তবে অভিযানটি শুরু হবে ভূমধ্যসাগরে থাকা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে। যা হবে চমৎকার, নতুন ও স্মার্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ায় সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলার জন্য রাশিয়া ও সিরিয়াকে দায়ী করেন। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সামরিক সঙ্ঘাতে জড়ানোর বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেননি। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স দুমায় শনিবারের হামলায় রাশিয়ার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প এখনও এই হামলার জবাবে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয় বিবেচনা করছেন। প্রেসিডেন্ট এই রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়া ও রাশিয়াকে দায়ী করেছেন। স্যান্ডারস বলেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হোয়াইট হাউসে বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস ও সিআইএ পরিচালক মাইক পম্পেও এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। ট্রাম্প সিরিয়ার ক্লোরিন ও সারিন অথবা সারিনের মতো বিষাক্ত গ্যাস উৎপাদনকারী এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা বিবেচনা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু সিরিয়ার সবচেয়ে স্পর্শকাতর সামরিক স্থাপনাগুলো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা সুরক্ষিত অথবা এমন সব স্থানে রয়েছে যেখানে রাশিয়া, ইরান ও সিরিয়ার নাগরিকরা একসঙ্গে কাজ করছে। এদিকে সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সিরিয়ার সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। যদিও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুদেশ ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার বিষয়ে একমত হন।
×