ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনা, তদন্ত রিপোর্র্ট প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনা, তদন্ত রিপোর্র্ট প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে ল্যান্ড করার সময় রানওয়ের সোজাসুজি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্লেনটি বাঁ দিকে ছিটকে পড়ে। তারপর মুহূর্তে সেটিতে আগুন ধরে মাত্র তিন/চার মিনিটেই পুড়ে যায়। ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনার এক মাসের মাথায় প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। বৃহস্পতিবার সিভিল এভিয়েশান সদর দফতরে তদন্ত কমিটির বাংলাদেশের প্রধান সদস্য ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, উড়োজাহাজটিতে কোন যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। সেদিন আবহাওয়াও ভাল ছিল। পাইলটও যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন। তারপরও এই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। কেন ঘটেছে সেটা জানতে হলে নির্ভর করতে হবে ব্ল্যাক বক্স’র ওপর। তবে বিধ্বস্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে পাইলট ও এটিসির (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল) মধ্যকার কথোপকথনকে অস্পষ্ট বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি ৪৬ মিনিট দু’পক্ষের মধ্যে কথোপথন বন্ধ ছিল। দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ না করে পাঁচ পৃষ্ঠার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ব্ল্যাকবক্সসহ গুরুত্বপূর্ণ সব সরঞ্জাম বিচার বিল্লেষণের জন্য কানাডার ট্রান্সপোর্ট সেফটি বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ ও টাওয়ার কন্ট্রোলের মধ্যকার যোগাযোগ একটা সময় পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু পরে উভয় পক্ষের খুবই সামান্য যে কথোপকথন শোনা যাচ্ছে তা অস্পষ্ট। এতে নিশ্চিত করা হয়েছে, বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বেড়ার কিছুটা বাইরে দুই নম্বর রানওয়ের পূর্বাংশে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনার পর পরই তদন্তের জন্য নেপাল কর্তৃপক্ষ ‘এয়ারক্রাফট এ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন কমিশন, ২০১৮’ নামে তদন্ত কমিশন গঠন করে। কমিশন ৯ এপ্রিল রিপোর্ট প্রকাশ করে। বুধবার সিভিল এ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) কাছে প্রতিবেদনটি পাঠানোর পর বৃহস্পতিবার এ প্রেস বিফ্রিং করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে এবং অবতরণক্ষেত্র ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটির কার্যক্রমের জন্য পর্যাপ্ত ছিল। এ ছাড়া ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে অগ্নিনির্বাপক ও জরুরী সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে পাওয়া সব ডকুমেন্ট বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং সেসব চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। গত ১২ মার্চ ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের বেসরকারী বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। ওই দিনই উড়োজাহাজটি ৭১ জন আরোহী নিয়ে ঢাকা থেকে নেপালের উদ্দেশে যাত্রা করে। এতে নিহত ৫০ জনের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশী, ২২ জন নেপালি ও একজন চীনের নাগরিক।
×