ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী যত সেবা আছে, সব মানুষের হাতে পৌঁছে দেব ॥ জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

সরকারী যত সেবা আছে, সব মানুষের হাতে পৌঁছে দেব ॥ জয়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক পরিকল্পনা আছে। দেশের সরকারী যত সেবা আছে, তা দেশের সকল মানুষের হাতের মধ্যে পৌঁছে দেব। ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব। দেশের মানুষকে আর সরকারী দফতরে আসতে হবে না। এটাই হচ্ছে আমাদের স্বপ্ন। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কবরী হলে সরকারী তথ্য ও সেবা প্রদানে এবং সামাজিক সমস্যার প্রতিকারে কল সেন্টার ৩৩৩ (ট্রিপল-থ্রি) উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ‘সরকারী তথ্য ও সেবা সবসময়’ স্লোগানকে সামনে নিয়ে কল সেন্টার ৩৩৩ চালু হল। এখন থেকে সরকারী বিভিন্ন তথ্য সেবা, কর্মকর্তাদের তথ্য, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিকার এবং পর্যটন ও জেলা সম্পর্কিত যেকোন তথ্য যেকোন সময় দেশ ও দেশের বাইরে থেকে ট্রিপল থ্রি’তে ফোন করে নিতে পারবে। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, দেশকে এগিয়ে নেয়াই হচ্ছে আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশ্য। এটা আমরা ধীরে ধীরে সময় নিয়ে করতে রাজি না। আমাদের স্বপ্ন ছিল, আমরা দেশবাসীকে ওয়াদা করেছিলাম। আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তার ১৫ বছরের মধ্যেই আমরা দেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব। সেটা আমরা ২০২১ সালের কয়েক বছর আগেই করে ফেলেছি। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ আর দরিদ্র দেশ নয়। আমাদের যে টার্গেট ছিল তার থেকে তিন চার বছর আগেই আমরা করে ফেলেছি। কারণ আমরা কাজের গতিতে বিশ্বাস করি। এখন আমাদের স্বপ্ন আছে যে, বাংলাদেশকে একটা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব। আমরা টার্গেট নিয়েছি ২০৪১ সালে। তবে আশা আছে তার আগেই হয়ে যাবে। যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে। এই গতিতে কাজ করতে গেলে অনেক সমস্যাও দেখা দেয়। অনেক চ্যালেঞ্জস আসে। চ্যালেঞ্জেগুলো ওভারকাম করতে হয়। আমরা মনে করি, এটা আমাদের দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র আরও বলেন, বর্তমান সরকারের কাজের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের মানুষের সেবা করা। দেশের মানুষের জীবনের উন্নয়ন করা। আর এটা শুধু যাদের হাতে মোবাইল আছে কম্পিউটার আছে শুধু তাদের জন্য না। এটা হচ্ছে, দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনের উন্নয়নে পরিবর্তন আনা, দারিদ্র্যমুক্ত করা, ক্ষুধামুক্ত করা, সকলকে শিক্ষা দেয়া, সকলের আয় বাড়ানো। দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ যাতে সরকারী সেবা সহজে পায়, সেটাই ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি মূল উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনিমার্ণে বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে জয় বলেন, সবাই তো সব সেবা, ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে সেই মুহূর্তে নেয়ার প্রয়োজন হবে না। হয়ত সময়ও নেই। তাই সেখানে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, মোবাইল ফোন করে যাতে মানুষ সেই মূহূর্তে সেবা পেতে পারে। তার জন্য আমরা প্রথমে গত ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধন করলাম ৯৯৯ সার্ভিস। তবে তার সঙ্গেও মানুষের তথ্যের প্রয়োজন। আমরা চাই না মানুষ তথ্যের জন্যও এই ৯৯৯ সার্ভিসে কল করুক। কারণ কেউ যদি ৯৯৯ লাইন ব্যস্ত রাখে, যার হয়ত জীবনের একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, সে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাই ৯৯৯ শুধুমাত্র তাদের জন্যই থাকুক। সেকারণে আমরা এই তথ্য সেবার জন্য ৩৩৩ সার্ভিসটি উদ্বোধন করছি। এটা উদ্বোধন করতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আরও অনেক সেবা আছে। আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক পরিকল্পনা আছে যে, দেশের সরকারী যত সেবা, দেশের সব মানুষের হাতের মধ্যে আমরা পৌঁছিয়ে দেব, ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব। আপনাদের সরকারী দফতরে কোন কারণেই আর আসতে হবে না। এটাই হচ্ছে আমাদের স্বপ্ন। এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন। এই ৩৩৩ সার্ভিস হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের আরেকটি ধাপ এগিয়ে গেলাম। বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকব। আওয়ামী লীগকে যতদিন আপনারা ভোট দিয়ে ক্ষমতায় রাখবেন, আমরা এই দ্রুত গতিতেই দেশকে এবং আপনাদের জীবনকে উন্নয়ন করতে থাকব। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সম্প্রতি ফোরজি চালু করা নিয়ে চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয়ের প্রশংসা করেন। এ বিষয়ে জয় বলেন, আজকাল ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগ। আমি বাংলাদেশে ছিলাম না। তবে প্রতিমমুহূর্তে ওয়াশিংটন ডিসিতে বসে আমি ই-মেইল ও এসএমসে যোগাযোগে ছিলাম। কাজ যাতে স্থগিত না থাকে। দেশ যাতে আগাতে (এগিয়ে) থাকে। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান, রবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন। ট্রিপল থ্রি সার্ভিস সম্পর্কে অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রেজেন্টেসন করেন এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি এ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।
×