ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জানালেন ডিএমপি কমিশনার

ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলা পরিকল্পিত, হামলাকারীরা পেশাদার

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলা পরিকল্পিত, হামলাকারীরা পেশাদার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত। হামলাকারীরা পেশাদার। এ ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো প্রশিক্ষিত উর্ধতন কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সরকারী চাকরির কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো প্রশিক্ষিত উর্ধতন কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে, হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত পরিকল্পিত। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা শতভাগ পেশাদার। ভিসির বাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রীতিমতো অরাজকতা চালানো হয়েছে। এসব ঘটনা অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত। ভিসির বাসায় হামলার ধরণ খুবই পরিকল্পিত। কারণ হামলাকারীরা সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে। যা হামলাকারীরা যে প্রশিক্ষিত, তা প্রমাণ করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য মোতাবেক, হামলার সময় পাঁচ শতাধিক তরুণ সেখানে ছিল। তারা ভেতরে ঢুকে গেট ভেঙ্গে ফেলে। তাদের অনেকেরই মুখ কাপড় দিয়ে বাধা ছিল। পুরো বাড়িটির সব কক্ষই ভাংচুর করা হয়েছে। ঘরে হেন কোন জিনিসপত্র নেই, যা ভাংচুর করা হয়নি। বাথরুম ও রান্নাঘরও হামলকারীরা তছনছ করেছে। ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে। হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আনা হবে। যারা নৈরাজ্য চালানোর সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের কাছে সোর্পদ করা হবে। তাদের পার পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মোতাবেক, গত ৮ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে প্রায় দশ ফুট উঁচু দেয়ালের পূর্ব দিকের অন্তত ২০ ফুট জায়গার কাঁটাতার ছিড়ে ভেতরে ঢুকে প্রথমে ৫০-৬০ জন। প্রবেশকারীরা ভেতরের মূল গেটের তালা ভেঙ্গে ফেলে। এরপর গেট ভেঙ্গে অন্তত ৫শ’ লোক ঢুকে। তারা লাঠিসোটা, রড নিয়ে বাড়ির সবকিছু ভেঙ্গে ফেলে। পুরো বাড়িতে রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। বাড়িতে থাকা টাকা পয়সা স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়। গেটের দারোয়ানদের কাছে থাকা টাকাও লুটে নেয়। ফ্রিজের মাছ মাংস নিয়ে যায়। বাড়ির সামনে আসবাবপত্র পুড়ে ফেলে। বাড়ির পেছনে থাকা প্রক্টর ও এক মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের থাকা মোট দুইটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভিসির দুইটি গাড়ি ভাংচুর করে। ঘটনার পরদিন উপাচার্য আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীরা প্রাণনাশের জন্য এসেছিল। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, হামলার সঙ্গে বহিরাগতরা জড়িত। হামলাকারীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোন সম্পর্ক নেই। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। এমন ঘটনায় বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা চারটি পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে সার্বিক দিক খতিয়ে দেখার পাশাপাশি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
×