ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ের নামে পাহাড় কাটা বন্ধের দাবি

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১২ এপ্রিল ২০১৮

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ের নামে পাহাড় কাটা বন্ধের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ের নামে ব্যাপক পাহাড় কাটা হচ্ছে। আর ওইসব পাহাড় কাটায় অর্থ সরবরাহসহ নানাভাবে সহযোগিতা করছে রোহিঙ্গাদের লালন পালনকারী বিভিন্ন দেশী-বিদেশী এনজিও। পাহাড় কাটার দায়ে এসব এনজিও ও এনজিও কর্মকর্তাদের তালিকা করা হবে। বনভূমি ধ্বংস ও বন্যপ্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য নিধনের জন্য সংশ্লিষ্ট এসব এনজিওদের ছাড় দেয়া যাবেনা। মামলা করে এদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাহাড় কাটা বন্ধ না করলে তাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে আশ্রয়ের নামে যে ভয়াবহ পাহাড় কাটা হচ্ছে তা বন্ধের দাবিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের বুধবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন হয়। এতে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ আনোয়ারুল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের পাহাড় কেটে আশ্রয় দেয়া এটা বড় ভুল সিদ্ধান্ত। এতে তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদফতর, পরিবেশবাদী সংস্থা ও পরিবেশবিদদের সম্পৃক্ত করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় স্থল নির্ধারণ করা প্রয়োজন ছিল। সমন্বয় না করে ইচ্ছেমতো পাহাড় কেটে রোহিঙ্গাদের বসতি আগামীতে মারাত্মক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, এমনিতেই রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা নানাভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এবার পাহাড় কেটে উখিয়া-টেকনাফকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। হাজার হাজার একর বনভূমি বিলীন তারাই করতে পারে যারা বাংলাদেশের মঙ্গল চাই না। রোহিঙ্গাদের বাঁচানোর নামে এদেশের ক্ষতি করতে চাই। এটার প্রমাণ হচ্ছে অনিন্দ্য সুন্দর কক্সবাজারের বনাঞ্চল থেকে মরুভূমিতে পরিণত করার অপতৎপরতা। কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন বলেন, উখিয়ার টিলায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নতুন করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয়ের জন্য ভয়াবহ পাহাড় কাটা হচ্ছে। প্রতিদিন অর্ধশত স্কেভেটর দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে পাহাড় কাটায়। ইঞ্জিনিয়ার কানন পাল বলেন, বন ও পরিবেশ রক্ষায় শুধু স্থানীয়রা নয়, দেশের সকল সচেতন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। উখিয়া-টেকনাফে যেভাবে পাহাড় কেটে যে অত্যাচার করা হচ্ছে, তা দেখে মনে হয় এসব বনভূমিতে সরকারের কোন মালিকানা নেই। নাজিম উদ্দিন বলেন, সুউচ্চ পাহাড় কেটে ৩ থেকে ৫ স্তরে তৈরি করা হচ্ছে প্লট। উখিয়া-টেকনাফের পাহাড়ের প্রায় ৮ হাজার একর বনাঞ্চল ইতোমধ্যে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। যা পরিবেশ ও বনমন্ত্রী, সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দেখেছেন। তারা দেখে বিস্মিত হয়েছেন। কিন্তু পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেননি। সেভ দ্য ন্যাচারের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এখন নতুন করে পুরো পাহাড় মরুভূমিতে পরিণত করার মিশনে নেমেছে রোহিঙ্গাদের লালন পালনকারী বিভিন্ন এনজিও। এতে বন্য হাতিসহ বন্যপ্রাণীরা জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। সংগঠনের নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ উর রহমান মাসুদের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন, কামাল উদ্দিন রহমান পেয়ারো, এস্তাক আহমদ, আজমল হুদা, সাংবাদিক মোহাম্মদ জুনাইদ, ডাঃ চন্দন কান্তি দাশ, রায়হান উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, রাজিব দেবদাশ, বিজয় কুমার ধর, মোঃ শহীদুল্লাহ, পিন্টু দত্ত, জুয়েল দত্ত, মিজানুর রহমান, সাংবাদিক আমিনুল হক আমিন, সাইফুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সংগঠক সোহেল রানা।
×