ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শূটিংয়ে আরেকটি রৌপ্য বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১২ এপ্রিল ২০১৮

শূটিংয়ে আরেকটি রৌপ্য বাংলাদেশের

রুমেল খান ॥ আগেই অনুমেয় ছিল গোল্ড কোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশ দল যদি কোন পদক অর্জন করে তাহলে সেটি হবে শূটিং ইভেন্ট থেকে। ঠিক সেটাই হয়েছে। তাও একবার নয়, দু’-দু’বার। প্রথমে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রৌপ্যপদক জেতেন আব্দুল্লাহ হেল বাকি। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার শূটিং থেকেই অর্জিত হলো আরও একটি পদক এবং সেটা রৌপ্যপদকই। তবে পার্থক্য হলোÑ এবারের রৌপ্যপদকটি এসেছে পিস্তল ইভেন্ট থেকে (৫০ মিটার)। আর রৌপ্যপদকের গর্বিত মালিক হচ্ছেন শাকিল আহমেদ। এই ইভেন্টেই ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ভারতের গুয়াহাটির কাহিলিপাড়া শূটিং রেঞ্জে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন তিনি। তার এই পদক অর্র্জনের বিশেষ মাহাত্ম্যও আছে। এই ইভেন্টে দীর্ঘ ২৮ বছর পর আবারও কোন পদক জিতলো বাংলাদেশী শূটাররা। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে এয়ার পিস্তল দলগত ইভেন্টে আতিকুর রহমান ও আব্দুস সাত্তার নিনি স্বর্ণ জিতেছিলেন। বুধবার বেলমন্ট শূটিং সেন্টারে ৫০ মিটার পিস্তল ইভেন্টে শাকিল ২২০.৫ স্কোর করে দ্বিতীয় হন। অস্ট্রেলিয়ার ড্যানিয়েল রেফাকোলি ২২৭.২ স্কোর করে স্বর্ণপদক জেতেন। আর ভারতের ওম মিতারওয়াল ২০১.১ স্কোর করে হন তৃতীয়। বাছাইয়ে অবশ্য শাকিল হয়েছিলেন চতুর্থ। বাংলাদেশের অন্য প্রতিযোগী আনোয়ার হোসেন লাভ করেন দশম স্থান। অথচ দুদিন আগেও শাকিল চরম হতাশ করেছিলেন। ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে হয়েছিলেন ষষ্ঠ। দুদিনের মাথায় বাকির মতো খুলনার এই ছেলে সবাইকে চমকেই দিলেন। যদিও ফেডারেশন শেষ পর্যন্ত আশা রেখেছিল। তারই প্রতিদান দিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শূটার শাকিল। শাকিল বাছাইয়ে ৫৪৫ স্কোর গড়ে চতুর্থ হয়ে ফাইনালে ওঠেন। পঞ্চম শট পর্যন্ত ৪৫.৯ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে ছিলেন। ১২ শট পর উঠে আসেন তৃতীয় স্থানে। ১৮ শট পরও ১৬৫.৮ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানেই ছিলেন। যদিও স্বর্ণজয়ী রেফাকোলি শাকিলের চেয়ে বরাবরই এগিয়ে ছিলেন। শেষ দুই শটের আগে যেখানে রেফাকোলির স্কোর ছিল ২০৮.৭, সেখানে শাকিলের ২০২.২। পদক জয়ের পর শাকিল বলেন ,‘অবশ্যই ভাল লাগছে। বাংলাদেশ থেকে ভাল প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমার লক্ষ্য ছিল পদক না হোক, আমার যে স্কোরটা ছিল সেটা যেন হয়। আমাদের টিমের প্রত্যেকেই তাদের সেরা স্কোর করেছে। কারণ এবার আমাদের প্রস্তুতি খুব ভাল ছিল।’ আগের ১০ মিটার ইভেন্ট নিয়ে এই পদক জয়ীর ভাষ্য, ‘আমার ১০ মিটার এয়ার পিস্তলেও ভাল পারফর্মেন্স ছিল। কিন্তু ফাইনালের কথা আগেভাগে কিছুই বলা যায় না। তারপরও চেষ্টা করেছিলাম, হয়নি। কিন্তু ৫০ মিটার পিস্তল ছিল আমার মূল ইভেন্ট। আশা করেছিলাম এখানে ভাল কিছু করব। এখানে যেটা চেয়েছি সেটাই করতে পেরেছি বাছাইপর্বে, ফাইনালেও। অনুশীলনে সবসময় যেটা মারি সেটাই মেরেছি।’ শাকিল আরও যোগ করেন, ‘আমি ২০১৬ সালে এসএ গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক জিতি। তখন থেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম কমনওয়েলথ গেমসকে। সেভাবেই প্রস্তুতি শুরু করি। ফেডারেশন থেকে সবধরনের সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছি। যা চেয়েছি তাই দিয়েছে। বাংলাদেশ আর্মিও আমাকে সহায়তা দিয়েছে। তবে বিশেষভাবে বলব ফেডারেশনের মহাসচিব অপু ভাইয়ের কথা। সবসময় তিনি আমাদের পাশে থেকেছেন। প্রতিযোগিতার সময় আমার অন্য সতীর্থরাও আমাকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ।’
×