ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুরান ঢাকায় চলছে হালখাতার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১২ এপ্রিল ২০১৮

পুরান ঢাকায় চলছে হালখাতার প্রস্তুতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে পুরনো লেনদেন মিটিয়ে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটিকে বরণ করে নেয়ার বাঙালী রীতি বহুদিনের। সময়ে ব্যবধানে সংস্কৃতির অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও সে হাওয়ায় খুব একটা প্রভাব পড়েনি পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের। তাই নতুন বছরে হিসাব নিকাশের শুভ সূচনা করতে হালখাতা উৎসবের আয়োজন চলছে পুরোদমে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, হালখাতা আয়োজনের সঠিক দিন নিয়ে বিভ্রান্তি থাকায় প্রতি বছরই আনন্দ উৎসবে কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে। যুগ যুগ ধরে চলতে থাকা এ দ্বিমত দূর করতে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান তাদের। প্রায় ছাব্বিশ বছর আগে ছোট্ট এই দোকানেই স্বর্ণের ব্যবসা শুরু করেছিলেন রাজধানীর তাঁতি বাজারের চন্দন দেবনাথের বাবা। কয়েক বছর আগে তার বাবা প্রয়াত হয়েছেন। তবে শক্ত হাতেই পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ব্যবসা আগলে রেখেছেন দুই ভাই। প্রতিবছরই চৈত্রের শেষ সময়ে নিজেদের হাতে দোকানটিকে ধুয়ে-মুছে এভাবে নতুন রূপ দেয়ার চেষ্টা করেন তারা। পাশাপাশি চলে পুরো বছরের লেনদেনের হিসেব-নিকেশ হালনাগাদের কাজ। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে বাঙালী সংস্কৃতির বহু অনুষঙ্গে পরিবর্তন এলেও সে হাওয়া খুব একটা টলাতে পারেনি পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের। ফলে তাঁতীবাজার, শাঁখারিবাজার, বাবুবাজারের দোকানগুলোতে পুরোদমে চলছে হালখাতার প্রস্তুতি। প্রাচীন ভারতের পঞ্জিকা অনুযায়ী হালখাতার দিনটি এপ্রিলের ১৫ তারিখ হলেও সরকারী হিসেবে ১৪ তারিখ। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান ব্যবসায়ীদের। এদিকে যুগ যুগ ধরে ব্যবসায়ের হিসাব রাখার ঐতিহ্যবাহী খাতা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। টালি আঁকা কাগজ লালসালুতে মুড়ে এভাবেই তৈরি হয় হালখাতা। কারিগররা জানান, অন্যান্য সময় বিক্রি কম থাকলেও হালখাতার সময় চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। হালখাতা উপলক্ষে এরই মধ্যে দাওয়াতের কার্ড পাঠানো হয়েছে ক্রেতাদের কাছে। থাকবে মিষ্টি-মিঠাই দিয়ে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা।
×