ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অজ্ঞতা ও অসচেতনতা

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১২ এপ্রিল ২০১৮

অজ্ঞতা ও অসচেতনতা

ফেসবুক বর্তমানে অন্যতম সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যম। ঘরে বসেও সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার এই মাধ্যমটি তার নিজ বৈশিষ্ট্যগুণে পরিণত হয়েছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে। কিন্তু যে উদ্দশ্যে নিয়ে ফেজবুক ব্যবহার হওয়ার কথা তা থেকে এখন সরে এসে অনেকাংশে নেতিবাচক উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার হচ্ছে। সত্যিকার অর্থে আড্ডা কার না ভাল লাগে? কিন্তু এই আড্ডাই এখন চরম হতাশা, অশান্তি ও যন্ত্রণার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্ধু হতে গিয়ে অনেকের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেম-পরকীয়ার সম্পর্ক। এ আসক্তির জন্য স্বামী সংসারের প্রতি উদাসীনতা। হেলাফেলা নিত্য কাজে। এতে সন্দেহ দানা বাঁধে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। মনোমালিন্য ও ঝামেলা বাঁধে পরিবারের অভিভাবকসহ অন্য সদস্যের সঙ্গে। এ জন্য একদিকে অভিভাবকরা আদরের কন্যাদের যোগ্য পাত্রে পাত্রস্থ করতে পারছেন না অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে সাজানো সুখের সংসার। তরুণীরা সম্পর্কে জড়িয়ে হচ্ছে সর্বস্বান্ত। প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অনেকে দিচ্ছে প্রাণ। শিশু-কিশোরদের মাত্রারিক্ত আসক্তি পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এই ফেসবুকের মাধ্যমে কোথাও কোথাও উসকে দেয়া হচ্ছে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতা। প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নারী নিগ্রহের ঘটনা। প্রযুক্তি আমাদের সামনে বিশেষ সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিলেও কিছু মানুষ এর সুফল নেয়ার বদলে এর বিকৃত ব্যবহার করছে। বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে বা ওয়েবসাইটে বিভিন্ন জনের ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দিতে দেখেছি যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা সমাজে নানা রকম হয়রানির স্বাীকার হয়েছেন, হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন রকম অশালীন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বিভিন্ন ফেসবুক ইউজার বা অন্যান্য অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের উত্ত্যক্ত ও ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত, যার বেশিরভাগ শিকারই মূলত নারী। তথ্য-প্রযুক্তির সহজ লভ্যতার জন্য সব শ্রেণীর মানুষের কাছে এ সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এটির অপব্যবহার রোধে তরুণদের খারাপ ভাল দিক সম্পর্কে সচেতন করা যায়নি। অজ্ঞতা ও অসচেতনতায়ও ঘটে বিপত্তি। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি বা সাইবার নিরাপত্তা আইন থাকলেও আইনী অব্যবস্থাপনা ও প্রয়োগের অভাবে সমাজে অপরাধও অস্থিরতা বাড়ছে। ভুক্তভোগীরা যারা সাইবার অপরাধের শিকার তারা সঠিক আইনি ব্যবস্থা নিতে জানেন না। আবার অনেকে থানায় গেলেও ফল পান না। কারণ অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই জানেন না এ ধরনের অভিযোগ পেলে তার ঠিক কি করা উচিত। ফলে সাইবার কেন্দ্রিক অপরাধ বাড়ছে। তাই এই আইন সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ফেসবুক ও ইমেল বা অনলাইন ব্যবহারকারীরা যদি এ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার বিষয়গুলো ঠিকভাবে সেটিং করতে পারেন, তাহলে কেউ তাদের এ্যাকাউন্টের ক্ষতি করতে পারবে না। এর অপব্যবহার রোধে প্রথমেই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক নজরদারি। ব্যক্তি পর্যায়ে বজায় রাখতে হবে নৈতিকতা। পল্লবী, ঢাকা থেকে
×