ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকে নারীর সুরক্ষা

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১২ এপ্রিল ২০১৮

ফেসবুকে নারীর সুরক্ষা

ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা একদিকে যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে নারী নির্যাতনকারীর সংখ্যা। ফেসবুকে নারীদের সম্পর্কে অশ্লীল ছবি পোস্টিং দিয়ে নারীদের নিগ্রহ করা হচ্ছে। নারীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, ব্লকমেইল করা, গভীররাতে অশ্লীল কথাবার্তার মাধ্যমে নারীকে উত্ত্যক্ত করা হয়। পোস্টে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েও নারীকে প্রতিনিয়ত হেনস্তা করা হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বটে কিন্তু আসলে এর কার্যকারিতা তেমন একটা আছে বলে মনে হয় না। আসল কথা হলো যতদিন পর্যন্ত এসব অমানুষদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন না হবে ততদিন পর্যন্ত এই নির্যাতনের হাত থেকে নারী রেহাই পাবে না। দিনে দিনে ফেসবুকে যেভাবে নারী নিগ্রহের ঘটনা বাড়ছে এতে সন্দেহ করার কোন কারণ নেই। একদিন এই নির্যাতনকারীরা নারীদের রাতের ঘুম হারাম করে দেবে যদি না সরকার ও তার প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্ত্রিমূলক ব্যবস্থা না নেয়। স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটি মেয়েকে যদি অহরহ ফেসবুকে নিগ্রহ বা নির্যাতন করা হয় তাহলে তার মানসিক অবস্থা কি হতে পারে তা কি একবারও আমরা ভেবে দেখেছি? অনেক সময় সে মেয়েটির বাবা-মা কিংবা অভিভাবকবৃন্দ এই বিষয়ে কিছুই জানেন না, আর জানলেও বা কি? এই অভাবনীয় দুর্দশার কথা ওই মেয়েটি কাকেই বা বলবে আর বলেই বা কি লাভ। আমরা দেখেছি বছর কয়েক আগে কথায় কথায় দুর্বৃত্তরা মেয়েদের গায়ে এসিড মারত। এখন যেহেতু এসিড মারার শাস্তি মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে আর কয়েকটি ক্ষেত্রে এটা কার্যকরও করা হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে দেশে এসিড সন্ত্রাসের সংখ্যা বেশ কিছুটা কমেছে, আগের মতো আর নেই। যদিও এই অপরাধ সমাজ থেকে একেবারেই নির্মূল করা যায়নি। দেশের ইন্টারনেট ৩জি থেকে ৪জিতে উন্নীত করা হয়েছে। এটা একটা সুসংবাদ বটে, কিন্তু ফেসবুকের হয়রানি কিভাবে কমানো যায় কিংবা একেবারে থামানো যায় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে নজর দিতে হবে যাতে এ কেলেঙ্কারির ভাইরাস সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করতে না পারে। সুশিক্ষা আর কুশিক্ষা এ দুটোতে আকাশ-পাতাল প্রভেদ। কুশিক্ষার আশ্রয় নিয়ে যে সকল যুবক-যুবতীরা কিংবা বয়স্ক লোকেরা এই ধরনের নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবিলম্বে খুঁজে বের করা উচিত। শুধু খুঁজে বের করলে চলবে না, আইনের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে তারা ভবিষ্যতে এহেন অপরাধ আর না করে কিংবা করতে সাহস না পায়। উন্নতির জন্য শুধু পুরুষই নয়, নারীরাও এর অর্ধেক অংশের দাবিদার। তাই নারীদের যথোপযুক্ত নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা না করলে দেশ তথা সামাজিক উন্নয়ন কিছুতেই সম্ভব নয়। বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ এই নিয়ে যে তর্ক-বিতর্ক ছিল তা এখন আর নেই। বিজ্ঞানকে এখন আর অভিশাপ বলা চলবে না। কিছু দুর্বৃত্তের অপকর্ম বিজ্ঞানের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া যাবে না, দেয়া ঠিকও হবে না। তাই ফেসবুকে যারা নারীদের নির্যাতন করছে আসুন আমরা সকলেই তাদের খুঁজে বের করি, আর তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করি। কলাবাগান, ঢাকা থেকে
×