ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বৈশাখ ঘিরে মাদক নির্মূলে বিশেষ অভিযান ॥ ৩১ ব্যবসায়ী আটক

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১২ এপ্রিল ২০১৮

বৈশাখ ঘিরে মাদক নির্মূলে বিশেষ অভিযান ॥ ৩১ ব্যবসায়ী আটক

গাফ্ফার খান চৌধুরী ॥ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সারাদেশে মাদক নির্মূলে বিশেষ অভিযান চলছে। সেই অভিযানে জব্দ হয়েছে প্রায় তিন লাখ ইয়াবাসহ আটক হয়েছে ৩১ মাদক ব্যবসায়ীকে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক এনে উর্দুভাষী অবাঙালীদের ঢাকায় থাকা বিহারি ক্যাম্পগুলোতে জমা করার তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিদিন ক্যাম্পগুলোতে সমন্বিত সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এমন অভিযানে মোহাম্মদপুরের ভেনেভা ক্যাম্পসহ অন্যান্য ক্যাম্পে মাদকের আগ্রাসন অনেক কমে গেছে। বদলে গেছে চিরচেনা সেই রূপ। আগে মাদক বেচাকেনা হতো প্রকাশ্যে। অনেকটা হাটের মতো বসত। এখন আর সেই অবস্থা নেই। অভিযানে মাদক সিন্ডিকেটগুলোর অধিকাংশ সদস্যই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে সারাদেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলছে। ঢাকায় চলছে বিশেষ অভিযান। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে এক সময়ের মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত জেনেভা ক্যাম্পের অন্যরূপ। আগের মতো চিরচেনা ভিড় নেই। কাবাবের দোকানের সামনে প্রকাশেই আগে মাদক বিক্রি হতো। মাদক ও মাদক বিক্রির টাকা লেনদেন হতো প্রকাশ্যেই। এখন আর হাঁকডাক নেই। তবে মাদক পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। অত্যন্ত গোপনে বেচাকেনা হচ্ছে মাদক। তবে তার পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক কম। আগে সন্ধ্যা নামলে সেখানে এক ধরনের মাদকের হাট বসত। এখন আর সেই দৃশ্য দেখা যায় না। ক্যাম্পবাসীরা বলছেন, মাদক নেই তা নয়। অত্যন্ত গোপনে দুই-একজন হয়তো মাদক বেচাকেনা করছে। তাও আবার খুব রিস্কের মধ্যে। কারণ ক্যাম্পের ভেতরে সাদা পোশাকে অনেক পুলিশের লোক ঘোরাফেরা করে। এ বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, মাদক নির্মূল কাজ করছি। কিন্তু ক্যাম্পগুলো এখনও পুরোপুরি মাদকমুক্ত করা যায়নি। তবে আগের যেকোন সময়ের তুলনায় চিত্র বদলে গেছে। অত্যন্ত গোপনে হয়তো দুই-একজন মাদক বেচাকেনা করছে। তাও নিমর্ূূল করার চেষ্টা করছি। মাদক সিন্ডিকেটের অধিকাংশ সদস্যকেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছি। পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলছেন, ক্যাম্পগুলো অত্যন্ত ঘিঞ্জি। এজন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদক এনে ক্যাম্পগুলোতে জমা করা হতো। ক্যাম্প থেকে সেগুলো আগে অন্যান্য জায়গায় পাঠাত। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রতিদিন ক্যাম্পে একাধিকবার অভিযান চালানো হচ্ছে। এজন্য মাদকের আগ্রাসন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। গ্রেফতারের পর জেল থেকে বেরিয়ে যারা শপথ নিয়ে অনেকেই ভাল হয়েছেন। তাদের মাদক বিরোধী অভিযানে সহযোগিতা করার জন্য রাখা হয়েছে। তবে তাদের উপর নজরদারি অব্যাহত আছে। মোহাম্মদপুর থানার ওসি মোঃ জামাল উদ্দিন মীর জনকণ্ঠকে জানান, প্রতিটি ক্যাম্পে মাদকবিরোধী কমিটি করা হয়েছে। মাদক নির্মূল কমিটি, ক্যাম্পের নেতৃবৃন্দ, জনতা ও পুলিশ মিলে অন্তত অর্ধশত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।
×