ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

থাকছে না ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ১১ এপ্রিল ২০১৮

থাকছে না ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ায় যোগাযোগ অবকাঠামো ঠিক রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ স্টিলের সরঞ্জামের বেইলি ব্রিজ অপসারণ করে শক্ত কাঠামোর কনস্ট্রাকশনের পাকা সেতু নির্মিত হচ্ছে। বগুড়ায় এ ধরনের বেইলি ব্রিজের সংখ্যা ২৮। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে অতিঝুঁকিপূর্ণ ১১টি বেইলি ব্রিজ অপসারণ করে সেই স্থানে রিইনফোর্সড সিমেন্ট কংক্রিটে (আরসিসি) প্লেন সিমেন্ট কংক্রিট (পিসিসি) গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে চারটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ত্রিশ বছর আগে ১৯৮৮’র বড় বন্যার পর বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে সড়ক যোগাযোগ ভেঙ্গে পড়লে জরুরী ভিত্তিতে বিদেশী সহযোগিতায় সাময়িকভাবে ছোট নদী খালের ওপর বেইলি ব্রিজ নির্মিত হয়। ইতোমধ্যে তার কয়েকটি অপসারিত হয়েছে। বর্তমানে রয়েছে ২৮টি বেইলি ব্রিজ। এর কয়েকটি কয়েক দফায় ভেঙ্গে পড়ে। জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমে মেরামত করে এগুলো সচল রাখা হয়েছে। বগুড়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান জানিয়েছে, দীর্ঘদিনের বেইলি ব্রিজগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এগুলো আর থাকবে না। পর্যায়ক্রমে অপসারণ করে সেই স্থানে আরসিসি পিসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকারের দুইটি প্রকল্পের আওতায় বেইলি ব্রিজ অপসারণের কাজ চলছে। এই বেইলি ব্রিজগুলো মেরামতের সরঞ্জামও এখন আর পাওয়া যায় না। বেইলি ব্রিজের ওপর দিয়ে ওভারলোডে ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আছে। তারপর চলছে। এ অবস্থায় ভার সইতে না পেরে তা ভেঙ্গে পড়ে। সর্বশেষ গেল ৪ এপ্রিল বগুড়া ধুনট সড়কের মাঠবাড়িয়ায় একটি খালের ওপর নির্মিত ৬২ মিটার বেইলি ব্রিজে রডবাহী ট্রাক উঠলে তা ভেঙ্গে পড়ে। এরপর বিকল্প সড়কে অনেকটা ঘুরে ছোট যানবাহন চলতে হয়। এর আগেও গত ২৪ জানুয়ারি ওই ব্রিজের পাটাতন ভেঙে পড়ায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ধুনট উপজেলার কুশারবাড়ি খালের ওপর নির্মিত ৬০ মিটার দীর্ঘ বেইলি ব্রিজটি গেল ১৬ মার্চ খালের পানিতে ভেঙ্গে পড়ে। এছাড়া বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কের খলিশাকুড়া খালের ওপর নির্মিত বেইলি সেতুটি ২০১৬ সালের ২৩ নবেম্বর ভেঙ্গে পড়ে। ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় নগরীর সঙ্গে সারিয়াকান্দি, গাবতলী ও সোনাতলা উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এভাবে মাঝে মধ্যে কোন না কোন বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ায় সড়ক যোগাযোগে বিঘœ ঘটছে। এই বেইলি ব্রিজগুলো এখন আর টিকছে না। জীবনমানের গতি বেড়েছে। প্রশাসনসহ অন্যান্য কর্মসূচী উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে বিস্তৃত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগের গুরুত্ব বেড়েছে। বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। এই অবস্থায় বেইলি ব্রিজগুলো অতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। দীর্ঘ ব্যবহারে এই সেতুগুলো এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেতুগুলোর পাটাতন ও বিভিন্ন অংশ নড়বড়ে হয়ে আছে। মাঝে মধ্যেই খুলে পড়ছে বা বিকল হয়ে যাচ্ছে। একই ব্রিজ বারবার জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করার পর হালকা যানবাহনের জন্য চলাচলের উপযোগী হয়। এর ওপর দিয়েই চলে ভারী যানবাহন। ফলে ব্রিজের ট্রানজাম ও স্টিল টেকিং (পাটাতন) নষ্ট হয়ে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
×