ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করা হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১১ এপ্রিল ২০১৮

কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করা হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারী চাকরিতে নিয়োগে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আগামী বাজেট ঘোষণার পর কোটা সংস্কারে হাত দেয়া হবে। তিনি বলেন, তবে এটাও ঠিক কোটা থাকতে হবে, কোটা রাখা হবে। কত শতাংশ থাকবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশের (আইসিবি) লভ্যাংশ হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ওই সময় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান ভ্যাট আদায় নয়, তবে যেসব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় মুনাফা করছে তাদের আয়কর দিতে হবে। মুহিত বলেন, ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার হওয়া উচিত, তবে কোটা থাকতে হবে। কোটা থাকার কারণটা হলো যারা পশ্চাদপদ, ‘দে হ্যাব টু বি লিফটেড।’ বাংলাদেশ এটা নিয়ে সারাজীবন ধরে যুদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, আমরা ব্যাকওয়ার্ড দেশে ছিলাম, আমাদের সুযোগ-সুবিধা কম। এখন যেটা (কোটা) হয়েছে অনেক বেশি বোধ হয় হয়ে গেছে। আমাদের মন্ত্রীরাও বলেছেন-এটা সংস্কার করা উচিত। এটা সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। ‘বাট কোটা মাস্ট বি দেয়ার ফর ডিসএ্যাডভান্স পিপল।’ তবে এমন করা উচিত নয় যে, কিছুই পায় না। অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটা একটা বড় সংখ্যা। বড় সংখ্যায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ‘বাট উই ডোন্ট হ্যাব মুক্তিযোদ্ধা ক্যান্ডিডেটস।’ আমরা সিদ্ধান্ত দিয়েছি যে, যেখানে ফুলফিল হচ্ছে না, সেখানে অন্য লোককে নেয়া যাবে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য মোট মেধা কোটা ৪৫ শতাংশ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, মহিলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ। অবশিষ্ট সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ১০ শতাংশ। ‘ইঁস ভেরি ব্যাড।’ এটা সত্যিকারে ফেয়ার নয়। ‘ইট হ্যাজ টু বি রি-এক্সামিন।’ তিনি বলেন, আমিও সেই কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি যে, আমরা এটা রি-এক্সামিন করব, আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের পর। তিন বিসিএসে কোটার শূন্যপদে মেধাবীদের নিয়োগের তথ্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, দেখা যাচ্ছে কোটাপূর্ণ হয় না। ৩৩তম বিসিএসে ৭৭ শতাংশ, ৩৪তম বিসিএসে ৭৬ ও ৩৬তম বিসিএসে ৭০ শতাংশ নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সমাজে পিছিয়ে পড়াদের এগিয়ে নিতে কোটা থাকতে হবে। তবে এ সংখ্যা নিয়ে আলোচনা হতে হবে। অর্থমন্ত্রী আরও জানান, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপ করা হবে না তবে মালিকদের ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) দিতে হবে। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোন ইনকাম ট্যাক্সের আওতায় নেই। তবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক মুনাফা করছে, তাই তাদের আয়কর দিতে হবে। এ সময় আইসিব’র পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার আহমেদ, মানিক চন্দ্র দে, সালমা নাসরিন, যুগ্ম-সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি বোধ হয় একটু ভুল বলে ফেলেছিলাম। এর আগে আমরা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট আরোপ করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে সেটা বাস্তবায়ন করিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপের বিরুদ্ধে টানা কয়েকদিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। ওই সময় ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনে নিয়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কাগজে কলমে অলাভজনক বলা হয়-এক্ষেত্রে কিভাবে আয়কর দেবে এমন প্রশ্নের উত্তরে মুহিত বলেন, সব সময় অলাভজনক বলা হয় না। অনেক সময় অলাভজনক বলতে চেষ্টা করা হয়। সেখানে ফাঁক-ফোকর দেখবে ইনকাম ট্যাক্সের লোকেরা। তিনি বলেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যত টাকা লাভ করবে তার ওপর ইনকাম-ট্যাক্স দিবে।
×