ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভিডিও ফুটেজ দেখে ভিসির বাসায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১১ এপ্রিল ২০১৮

ভিডিও ফুটেজ দেখে ভিসির বাসায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলাকারীদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। এই হামলাকারীরা ছাত্র কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করার কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থা। চিহ্নিত করার পর অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর ফেসবুকে যারা গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আইসিটি আইনে মামলা হবে। কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা কখনোই ছাত্র সমাজের হতে পারে না। এখানে কোন রাজনৈতিক দলের ইন্ধন রয়েছে। কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যারা ফেসবুকে মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে মামলা হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ইমরান এইচ সরকার ছাড়া অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাতে বাসায় বসে আমি আন্দোলনের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছিলাম। এক পর্যায়ে ফেসবুকে দেখলাম একজন মারা গেছে। তখন আমি খুব আহত হই। তাৎক্ষণিক খবর নিলাম ঘটনাটা সত্য কি না। এর মধ্যে দেখলাম, খবরটা ভাইরাল হয়ে গেছে। এটি কেন্দ্র করে গভীর রাতে ছাত্ররা আবার সমাবেত হতে থাকল। তাদের মুখে মুখে সেøাগান এলো, ‘আমার ভাই মরলো কেন?’ পরবর্তীতে দেখলাম, যার মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছে সে নিজেই ফেসবুকে জানিয়ে দিল যে, সে মরেনি। এটা মিথ্যা খবর। তিনি আরও বলেন, এই যে ভুয়া তথ্য দিয়ে ছাত্রদের উত্তেজিত করা এবং গভীর রাতে ছাত্রদের সমাবেত করা- সবগুলো ঘটেছে, আমার মনে হয় মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে। যিনি এই কাজ করেছেন তাকে আমরা শনাক্ত করব। তারপর আইসিটি আইনে মামলা হবে। পরিষ্কার কথা। কারণ এ ঘটনার পর অনেক কিছু ঘটেছে। গভীর রাতে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসেছে। আমরাও তো অনেক ইস্যুতে আন্দোলন করেছি। কিন্তু কখনও রাত ৯টা কিংবা ১০টার পর রাস্তায় নামিনি। কিন্তু এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা গভীর রাতে রাস্তায় নেমেছে। গুজব ছড়ানো ব্যক্তি তো চিহ্নিত, তিনি একা নন, আরও কয়েকজন থাকতে পারে। সবগুলোকেই আমরা দেখব। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তারা নাকি মারপিট করছে। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ছাত্রলীগ মারপিটের সঙ্গে জড়িত ছিল না। এসব অপপ্রচার চালিয়ে পরিস্থিতি উত্তেজিত করার পরিকল্পনা ছিল। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনে হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তদন্ত চলছে, হামলাকারীরা কিছুটা চিহ্নিত হয়েছে। বাকিরাও চিহ্নিত হবে। এর বিচার করতেই হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে ঢাবি উপাচার্যের বাস ভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে উপাচার্যের বাসভবন পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, এ হামলা যে পরিকল্পিত সেটি প্রমাণিত। কারণ, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বিকল করে দেয়া হয়েছে। এটি একাত্তরের বর্বরতাকেও হার মানায়। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম হামলা হয়েছিল। কিন্তু ভিসির বাসভবন কখনও আক্রান্ত হয়নি। এমনকি স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও এমন ঘটনা ঘটেনি।
×