ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পারলেন না ব্লেক, চমক সিমবিনের

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ১০ এপ্রিল ২০১৮

পারলেন না ব্লেক, চমক সিমবিনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় জুড়েই তিনি উসাইন বোল্টের ছায়া হয়ে ছিলেন। একইসঙ্গে অনুশীলন করেছেন। কিন্তু ইনজুরি আর ডোপ বিতর্কে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পাননি। তবে ইয়োহান ব্লেক স্প্রিন্ট ইতিহাসে সর্বকালের দ্বিতীয় সেরা গতিধর মানব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ১০০ মিটারে ৯.৬৯ টাইমিং গড়ে। আবার ২০০ মিটারেও ১৯.২৬ সেকেন্ড টাইমিংয়ে তিনি কিংবদন্তি বোল্টের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে। বোল্ট গত বছর অবসরে চলে যাওয়ার পর এখন তাই ব্লেকের দিকেই সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল। কমনওয়েলথ গেমসে তিনিই ছিলেন ফেবারিট। কিন্তু কিংবদন্তি বোল্টের উপস্থিতিতে তাকে হতাশ করতে চমকে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আকানি সিমবিন। ১০.০৩ সেকেন্ড টাইমিংয়ে স্বর্ণ জয় করেন সিমবিন। তার স্বদেশী হেনরিখো ব্রুইন্টজিয়েস রৌপ্য এবং ব্লেক জিততে পেরেছেন ব্রোঞ্জ। অপরদিকে, মেয়েদের ১০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর মিশেল লি আহয়ি। অনেকের মধ্যেই অবশ্য হা-হুতাশ রয়েছে সর্বকালের সবচেয়ে গতিধর মানব বোল্টের অনুপস্থিতির কারণে। কিন্তু ব্লেকই সেই আক্ষেপ ঘোচাবেন এমন প্রত্যাশায় বুক বেধেছিলেন অনেকে। আর বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সের প্রধান সেবাস্তিয়ান কো দাবি করেছিলেন অনেক উদীয়মান তারকা আছেন যারা নিজেদের নৈপুণ্যে ভুলিয়ে দিতে সক্ষম হবেন বোল্টের ঘাটতি। ব্লেককে অনুপ্রাণিত করতে গোল্ড কোস্টে উপস্থিত হয়েছিলেন বোল্ট। কিন্তু কমনওয়েলথ গেমসে ক্যারিয়ারের প্রথম স্বর্ণপদক জেতা হলোনা ব্লেকের। বোল্ট পরবর্তী যুগে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে প্রথম পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেন ব্লে ২৮ বছর বয়সী ব্লেক। অথচ ফাইনালে নামার ঠিক আগ মুহূর্তে কিংবদন্তি বোল্ট ব্লেককে আশীর্বাদ করে জানালেন তার ওপর পরিপূর্ণ আস্থা রেখে বলেছিলেন, ‘তোমার ওপর আমার আস্থা আছে, তুমিই জিতবে।’ সেই আস্থার মূল্য দিতে পারেননি তার বন্ধু ব্লেক। অথচ সেমিফাইনালে দুর্দান্ত টাইমিং গড়েছিলেন ব্লেক। তিনি ১০.০৬ সেকেন্ড টাইমিংয়ে শেষ করে অন্য সব প্রতিযোগীর চেয়ে অনেকখানি এগিয়ে থেকেই উঠে যান ফাইনালে। ২৮ বছর বয়সী এ জ্যামাইকান তারকাকে অন্যতম উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হয় বোল্টের। কারণ ১০০ এবং ২০০ মিটারে সর্বকালের সেরা যেমন বোল্ট, তেমনি সর্বকালের সেরাদের মধ্যে উভয় দূরত্বে দ্বিতীয় অবস্থানে ব্লেক। ২০১১ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপসে ১০০ মিটারে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন তিনি। সেটি সর্বকনিষ্ঠ স্প্রিন্টার হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিশ্বরেকর্ড। সেই ব্লেকই চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছেন এমনটাই পারিপার্শ্বিকতা দেখে বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু সিমবিন ফাইনালে এসে নিজের সেরাটা উপহার দিলেন। মাত্র ১০.০৩ সেকেন্ড টাইমিংয়ে তিনি সবার আগে শেষ করলেন। এমনকি ব্লেক দ্বিতীয় স্থানও অর্জন করতে পারলেন না। তিনি সময় নিয়েছেন ১০.১৯ সেকেন্ড। জিতেছেন ব্রোঞ্জ। সিমবিনের সতীর্থ ও স্বদেশী হেনরিখো ১০.১৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য জিতেছেন। এটি সিমবিনের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন। এর আগে ২৪ বছর বয়সী এ স্প্রিন্টার ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে তিনি পঞ্চম হয়েছিলেন। আর ব্লেক জিতেছিলেন রৌপ্য। সেই ব্লেক এবার পাত্তাই পেলেন না। অথচ ফাইনালে নামার আগে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ব্লেক জানিয়েছিলেন প্রথম কমনয়েলথ গেমস স্বর্ণপদক জেতার প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা ও সমর্থন তিনি পেয়ে গেছেন বোল্টের কাছ থেকে। ২০১৪ সালের গ্লাসগোয় হওয়া কমনওয়েলথ গেমসে ইনজুরির কারণে অংশ নিতে পারেননি। ব্লেক বলেন, ‘জ্যামাইকা ছাড়ার আগে তিনি ট্র্যাকে এসেছিলেন। সে সময় বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ায় যখন আসব যদি না জিততে পার তাহলে তোমার সমস্যা হবে! আমার কোন কমনওয়েলথ পদক নেই। এখন আমার ট্রফির বাক্সে এখান থেকে একটি পাওয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উসাইন বোল্ট আমাদের উত্তরসূরি হিসেবে রেখে গেছেন তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা এখন সেটাই করার জন্য উদগ্রীব।’ কিন্তু সেসব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলেন তিনি। অপরদিকে মেয়েদের ১০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর মিশেল ১১.১৪ সেকেন্ড টাইমিং নিয়ে, ক্রিস্টানিয়া উইলিয়ামস ১১.২১ সেকেন্ডে দ্বিতীয় এবং জ্যামাইকার গেয়ন ইভান্স ১১.২২ সেকেন্ড টাইমিংয়ে ব্রোঞ্জ জয় করেন।
×