ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশজুড়ে বৈশাখী বাজার

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১০ এপ্রিল ২০১৮

দেশজুড়ে বৈশাখী বাজার

রহিম শেখ ॥ ক’দিন পরেই পহেলা বৈশাখ। নতুন বর্ষকে বরণ করে নিতে এখন সর্বত্রই চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উৎসব ঘিরে ঘরে-বাইরে, শহরে-গ্রামে ব্যাপ্তি ছাড়িয়েছে নানামুখী অর্থনৈতিক কর্মকা-। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সরকাী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মতে, পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গতি ফিরেছে অর্থনীতিতে। আগে এই উৎসবে অর্থনীতির প্রভাব খুব একটা চোখে পড়েনি। কিন্তু এখন নতুন পোশাক থেকে শুরু করে খাবার দাবারেও বেশ পরিবর্তন এসেছে। বিক্রেতারা বলছেন, বৈশাখে বেচাকেনার পরিমাণ ঈদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। জানা গেছে, বৈশাখী অর্থনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে বৈশাখী ভাতা। যা সরকার কয়েক বছর ধরে চালু করেছে। ইতোমধ্যে বৈশাখী ভাতা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে চলে গেছে। পাশাপাশি বেসরকারী খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোও এই ভাতা দেয়ার বিষয়টি অনুসরণ করছে। একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বৈশাখী ভাতা তৃতীয়বারের মতো তারা পেয়েছেন। এই ভাতার বেশিরভাগ অংশ ব্যয় করে ছেলেমেয়েদের পছন্দের কাপড় চোপড় কিনতে। এর পাশাপাশি পহেলা বৈশাখের দিন একটু ভাল মন্দ খাবারের জন্য বাজেট তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য নিদিষ্ট পরিমাণ বরাদ্দ রাখেন। বৈশাখ বরণ উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী মেলা। বাংলা একাডেমিতে বিসিক যে মেলাটি আয়োজন করে সেখানে বেচাকেনার পরিমাণ প্রায় কয়েক লাখ টাকার। এর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে যে মেলার আয়োজন করা হয় সেখানেও আয়ের পরিমাণ কম হয় না। নিজস্ব ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিয়ে ফ্যাশন হাউসগুলো তৈরি করছে বাহারি পোশাক-আশাক। নানা রকমের সুতি শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টি শার্টসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকে ভরে উঠছে সারদেশের পোশাক হাউসগুলো। নারী পুরুষ ভেদে পোশাকের কদর বেড়ে যায় সর্বত্র। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্যমতে, রাজধানীসহ সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার বুটিক ও ফ্যাশন হাউস রয়েছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জ, সদরঘাট, জিঞ্জিরা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হচ্ছে বৈশাখী পোশাক। এসব পোশাক এখন শোভা পাচ্ছে রাজধানীসহ সারাদেশের ফ্যাশন হাউসে। বেইলি রোড এখনও টাঙ্গাইলের শাড়ির দোকানের সুনাম রয়েছে। বৈশাখ এলেই এখানে সব শ্রেণীর মেয়েদের আনাগোনা বেড়ে যায়। একটাই কারণ গরমে সূতি কাপড় কেনা। যা বেইলি রোডের দোকানগুলোতে অনায়াসে পাওয়া যায়। এই উৎসব ঘিরে প্রতিটি দোকান বেশ জমজমাট। বিক্রিও বেড়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র এই বৈশাখে তাদের কেনাকাটার পরিমাণ ঈদের চেয়ে কোন অংশ কম নয়। এখানেও কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মী নাজমুল জানালেন, বৈশাখ ঘিরে বাহারি সব শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও টি-শার্ট আনা হয়েছে। এগুলোর বিক্রিও ভাল হচ্ছে। একই কথা বললেন, আজিজ সুপার মার্কেটের কে-ক্র্যাফটের বিক্রেতা বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, বৈশাখ উৎসব ঘিরে তাদের পোশাকে ডিজাইন ও রঙে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। ধীরে ধীরে ক্রেতা বাড়ছে। বৈশাখের আগে তাদের সব পোশাক বিক্রি হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করলেন।
×