ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চৌহালী-বেলকুচিতে শতাধিক প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১০ এপ্রিল ২০১৮

চৌহালী-বেলকুচিতে শতাধিক প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই

সংবাদদাতা, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ, ৯ এপ্রিল ॥ বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষকের সংখ্যা দুইজন। এর মধ্যে একজনকে পালন করতে হচ্ছে প্রধান শিক্ষকের প্রশাসনিক দায়িত্ব। ফলে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন এক শিক্ষিকা। এ চিত্র চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে নেই প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে সহকারী তিনজন শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই বিদ্যালয়টির মতো যমুনার ভাঙ্গনে বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার ৪৮টি ও তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ বেলকুচি উপজেলার ৫৮টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছেন। জানা গেছে, চৌহালী উপজেলার ৪৮টি ও বেলকুচি উপজেলার ৫৮টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দুই থেকে আট বছর এ পদগুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে। এছাড়া দুই উপজেলার মোট ১৫৬ সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে প্রত্যেক মাসেই উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হচ্ছে। এতে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বেশির ভাগ বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর নতুন করে আর কাউকে পদায়ন করা হয়নি। বেলকুচি উপজেলার ষোলশত জাঙ্গালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন জানান, প্রশাসনিক কাজ নিয়ে প্রতিনিয়তই শিক্ষা অফিসে দৌড়াতে হয়। ন্যাশনাল সার্ভিসের দুই শিক্ষক নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে যেতে হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। অনেক সময় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের একত্র করে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এদিকে চৌহালীর কেকে পশ্চিম জোতপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেরাজুল ইসলাম আলম বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় অনেক সমস্যার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। মাসের অধিকাংশ দিনই উপজেলায় মিটিং ও রিপোর্টের কাজ থাকে। তারপর মাঝে মধ্যে আবার বিভিন্ন তথ্য-সংগ্রহসহ সরকারী কাজ করতে হয়। এতে অন্য শিক্ষকদের ওপরও চাপ বেড়ে যায়। চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এক নেতা জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া বিঘœ ঘটে। একজন সহকারী শিক্ষককে সব সময় প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষক প্রধানের দায়িত্বে থাকলে অন্য শিক্ষকেরাও তার কথা শুনতে বা মানতে চান না। এ কারণে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়টি প্রতি মাসেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
×