ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গাজা সীমান্ত যে কারণে বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৯ এপ্রিল ২০১৮

গাজা সীমান্ত যে কারণে বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র

ইসরাইল-সংলগ্ন গাজা সীমান্তের কাছে ছয় সপ্তাহ ধরে চলে আসা বিক্ষোভ কর্সসূচী দ্য গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন ফিলিস্তিনী সংগ্রামে গভীরভাবে প্রোথিত অহিংস প্রতিরোধের এক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, বলেছেন আল জাজিরার সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা। হাজার হাজার ফিলিস্তিনী তাদের ভূমি ফিরে পাওয়ার দাবিতে ইসরাইলী সীমান্তের কাছে সমবেত হয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর ফিলিস্তিনীদের তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। তারা তা ফিরে পাওয়ার জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে দুসপ্তাহ ধরে। বিশারা বলেন, ফিলিস্তিনীরা তাদের দাবিতে বিক্ষোভ জানিয়ে আসছে কয়েক দশক ধরে। এ বিক্ষোভে কেউ কেউ সশস্ত্র। কেউ সহিংস ভূমিকায় ছিল এবং কেউ সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ বিক্ষোভ ছিল সংঘটিত আইন অমান্য আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, ঠিক আজ যা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, শুক্রবারের বিক্ষোভ সমাবেশ দেখে বোঝা যায়, ফিলিস্তিনীরা রাজনৈতিক দিক থেকে পরিপক্কতা অর্জন করেছে। একই সঙ্গে ইসরাইলীদের দেখা যায়, তারা পশ্চিম তীর ও অন্যান্য এলাকার ফিলিস্তিনীদের গাজায় তাদের ভাইদের সঙ্গে মিলিত হওয়া থেকে নিবৃত্ত করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র নস্যাতে ব্যস্ত। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনীদের পক্ষে পরিপক্কতা কাজ করছে। তারা তাদের আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক পথ বেছে নিয়েছে। কারণ, তারা গত শুক্রবার ইসরাইলী সীমান্তে যেন পিকনিক করছিল। তারা তাঁবু টানিয়ে চিৎকার করে গান গাইছিল। এ ধরনের কর্মসূচীতে ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ যদি বিরক্তিবোধ করে এবং বিষয়টা যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অগ্রগণ্যতা পায় তা হলেই হবে চমৎকার। বিশারা এরপর ইসরাইলের সাবেক বিচারমন্ত্রী ইয়োসি বেইলিনের তীব্র সমালোচনা করেন। বেইলিনকে এর মাত্র কয়েক মিনিট আগে নেটওয়ার্কে পাওয়া যায়। বেইলিন রূঢ় কণ্ঠে বারবার প্রশ্ন তুলছিলেন, ‘তারা আমাদের কাছ থেকে কী চায়?’ কয়েক দশক ধরে পশ্চিম তীর দখলে রাখার পর একজন সাবেক ইসরাইলী রাজনীতিবিদের কাছ থেকে এ ধরনের জিজ্ঞাসা বিস্ময়কর। সাংবাদিক বলেন, আমি অবশ্য বেইলিনের প্রশ্নের জবাব দেব। আমি মনে করি, ফিলিস্তিনীরা ন্যায়সঙ্গত অধিকার পেতে চায়। ফিলিস্তিনীরা স্বাধীনতা চায়। গাজায় জনগণ ড্রোন হামলা থেকে মুক্তি চায়। তারা মুক্তি চায় কামানের গোলা থেকে। তারা বোমা হামলার শিকার হতে চায় না। তারা অবরোধ থেকে মুক্তি চায়। তারা ইসরাইলী আলোচনার টেবিল থেকে সামান্য কিছু পেতে চায়। তারা তাদের ভূখন্ড ফিলিস্তিনের অংশ চায় যাতে তারা ইসরাইলীদের সঙ্গে সমতা নিয়ে দাঁড়াতে পারে। দ্য গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন ১৫ মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। ১৯৪৮ সালের এদিনে ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে উচ্ছেদ করা হয় হাজার হাজার ফিলিস্তিনীকে। ফিলিস্তিনীরা এজন্য দিবসটিকে ‘নাকবা’বা বিপর্যয় দিবস বলে পালন করে। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এসেছে, সত্যিকার ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের প্রায় ৫০ লাখ প্রত্যক্ষ বংশধরকে তাদের পূর্বপুরুষের ভিটিতে ফিরতে দেয়া হোক। ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করে যুক্তি দেখাচ্ছে যে, ফিলিস্তিনীরা যেখানে ফিরতে চায় তা এখন ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত এবং ইহুদীরা সেখানে সংখ্যাগুরু হয়ে ওঠেছে। -আলজাজিরা
×