ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হামলার দায় রাশিয়া এড়াতে পারে না ॥ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর

সিরিয়ার রাসায়নিক হামলায় হত ৭০

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৯ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ার রাসায়নিক হামলায় হত ৭০

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি দুমায় বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস হামলায় অন্তত ৭০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক ব্যক্তি। উদ্ধারকর্মীরা বলছে পূর্ব গাউতার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এ শহরে গ্যাস আক্রমণে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়ে থাকতে পারে। এদিকে রবিবার পূর্ব গাউতায় বিদ্রোহী অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা হয়েছে। এএফপি, বিবিসি ও আলজাজিরা। উদ্ধারকর্মী ও চিকিৎসকরা বলছেন সিরিয়ার পূর্ব গাউতার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রত দুমা শহরে বিষাক্ত গ্যাস আক্রমণে অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারী সংস্থা ‘হোয়াইট হেলমেট’ একটি বেজমেন্টে মৃতদেহের ছবিসহ একটি টুইট করেছে। এতে বলা হয়েছে যে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এই তথ্য অন্য কোন উৎস থেকে স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের সরকার রাসায়নিক হামলার অভিযোগকে ‘অতিরঞ্জন’ বলে দাবি করেছে। এর আগে হোয়াইট হেলমেট প্রথমে দাবি করেছিল মৃতের সংখ্যা ১৫০ জন হতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সরকারী বাহিনীর হামলা সম্পর্কে ‘ভয়াবহ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, রাসায়নিক হামলা ব্যবহার করা হয়ে থাকলে সিরিয়ার মিত্র হিসেবে যুদ্ধ করা রাশিয়াকে দায়ী করা উচিত। পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, ‘নিজেদের লোকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করার ইতিহাস রয়েছে রাশিয়ার। অগণিত সিরীয়র ওপর রাসায়নিক হামলা করার দায় নিতে হবে রাশিয়াকে।’ সরকার বিরোধী ‘গাউতা মিডিয়া সেন্টার’ টুইটে বলেছে, এক হাজারের বেশি মানুষ এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা বলছে একটি পিপের মধ্যে করে হেলিকপ্টার থেকে একটি বোমা ফেলা হয় সেখানে। ওই পিপায় বিষাক্ত রাসায়নিক সারিন ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পূর্ব গাউতা অঞ্চলের একমাত্র বিদ্রোহী অধ্যুষিত শহর দুমা বর্তমানে সরকারী বাহিনী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। একাধিক চিকিৎসা সেবাদানকারী, পর্যবেক্ষক ও উদ্ধারকর্মীরা রাসায়নিক হামলার সত্যতা যাচাই করেছেন। তবে কতজন নিহত হয়েছেন ও ঠিক কি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। সিরিয়ার হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ইউনিয়ন অব মেডিক্যাল রিলিফ অর্গানাইজেশন্স। দামাস্কাস রুরাল স্পেশালিটি হাসপাতালের বরাত দিয়ে সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে যে সেখানে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন সরেজমিন অনুসন্ধান থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে মৃতের সংখ্যা ১৮০ জন হয়ে থাকতে পারে। ক্রমাগত বোমাবর্ষণের কারণে এই সংখ্যা নিশ্চিতভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার পর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা বলেছে এই প্রতিবেদন দুমার দখল নেয়া জাইশ আল ইসলাম বিদ্রোহীদের তৈরি। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলেছে, ‘জাইশ আল ইসলাম’ পতনের মুখে আছে। তাই তাদের সমর্থিত সংবাদ মাধ্যমগুলো সিরিয়ান আরব সেনাবাহিনীর অভিযান থামানোর উদ্দেশ্যে গ্যাস আক্রমণের মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে।’ পূর্ব শেষ বিদ্রোহী অধ্যুষিত শহর দুমা। রাশিয়া সমর্থিত সিরিয়ান সরকারী সেনাবাহিনী ঘেরাও করে আছে শহরটি। বিদ্রোহীদের সঙ্গে মস্কোর একটি আলোচনা বিফল হলে শুক্রবার থেকে তীব্র মাত্রার অভিযান শুরু হয় সেখানে। আলোচনা বিফল হওয়ার আগে জাইশ আল ইসলামের সদস্যদের দুমার নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে রাখার জন্য করেছিল। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজাভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস নামের পর্যবেক্ষক দল বলেছে সরকারী বাহিনীর বিমান হামলায় শুক্রবার ৪০ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার নিহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। সিরিয়ার সরকারী গণমাধ্যম বলেছে বিদ্রোহীদের বোমাবর্ষণে রাজধানী দামেস্কে ৬ জন নিহত হয়েছে ও ৩৮ জন আহত হয়। জাইশ আল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ১৮ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া অভিযানে অন্তত ১৬শ’ মানুষ নিহত হয়।
×