ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দুই মাসের মধ্যে চুক্তি করতে সময় বেঁধে দেয়া হলো ফরাসী কোম্পানিকে

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৯ এপ্রিল ২০১৮

দুই মাসের মধ্যে চুক্তি করতে সময় বেঁধে দেয়া হলো  ফরাসী কোম্পানিকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফরাসী কোম্পানি টেকনিপকে ইস্টার্ন রিফাইনারি (ইআরএল) দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজের চুক্তি করতে দুই মাসের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। রবিবার সচিবালয়ে বিদ্যুত, জ¦ালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এ সময় বেঁধে দেয়া হয়। টেকনিপ ২০১৫ সালের ১২ নবেম্বর ইআরএল-এর দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করে। কিন্তু কোম্পানিটি আড়াই বছরেও চুক্তি করতে পারেনি। দেশে জ¦ালানি তেলের পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ মেট্রিক টন থেকে ৪৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার জন্য ২য় ইউনিট নির্মাণ করতে চায় সরকার। প্রতিবছর দেশে ৫৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ও কেরোসিনের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ১৪ লাখ মেট্রিক টনের পরিশোধন ক্ষমতা রয়েছে। বাকি ৪০ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ¦ালানি তেল আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়। এতে প্রতি লিটার ডিজেল এবং কেরোসিনে ৬ থেকে ৭ টাকা লোকসান হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলে মনে করা হয়। জানতে চাইলে ইআরএল’এর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রথমে সমঝোতার পরে টেকনিপ প্রকল্পের সমীক্ষা এবং নক্সা প্রস্তুত করছে। এই সমীক্ষায় প্রকল্পটি নির্মাণে কত টাকা লাগবে তা বের হয়ে আসবে। সরকার তাদের দর দেখে সিদ্ধান্ত নেবে প্রকল্পটি টেকনিপকে দিয়ে নির্মাণ করা হলে লাভজনক হবে না দরপত্র আহ্বান করে অন্য কোম্পানিকে দিয়ে করালে লাভ হবে। এটি সরকারের উপর পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। এখনও সমীক্ষা শেষ করতে আরও এক মাস প্রয়োজন বলে জানান তিনি। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ১৯৬৮ সালে এই কোম্পানিটি ইআরএলের তেল শোধনাগার নির্মাণ করে দেয়। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়লেও দেশের সরকারী তেল শোধনাগার ইআরএলের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। ৪৭ বছর আগে এই কোম্পানিটি ইআরএলের তেল শোধনাগার তৈরি করে দিয়েছিল। যেখানে ৪৭ বছরে এই শোধনাগার পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দিয়ে এখন বছরে ১৪ লাখ টন তেল পরিশোধন করা হচ্ছে। যদিও ইউনিট-এর তেল পরিশোধন প্রকৃত ক্ষমতা ছিল ১৫ লাখ মেট্রিক টন। সময়ের পরিক্রমায় এই ক্ষমতা এক লাখ টন কমেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়েছিল এশিয়া অঞ্চলের সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া তেল পরিশোধন করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। বাংলাদেশের সামনেও সেই সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে মিয়ানমার বাংলাদেশ থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চল, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কায় পরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানির সুযোগ রয়েছে। সঙ্গত কারণে দেশে জ¦ালানি তেল পরিশোধন বাণিজ্যের সম্ভাবনা মাথায় রেখে সরকার এখাতে বিনিয়োগ করতে চায়। বৈঠকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি আনিক বুর্দিনকে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী বলেন, বছরের শেষে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মাঝামাঝি সময় থেকে নির্বাচন নিয়ে সরকার ব্যস্ত সময় পার করবে। এর আগেই আগামী দুই মাসের মধ্যে ইআরএল ২ নম্বর ইউনিট নির্মাণে চুক্তি করার সময় বেঁধে দেয়। বৈঠকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের জন্য ফ্রান্সের কোম্পানি টেকনিপের সঙ্গে দ্রুত চুক্তির বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
×