ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সঞ্চয় সপ্তাহ উদ্বোধনীতে এনবিআর চেয়ারম্যান

সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার বহাল রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৮ এপ্রিল ২০১৮

সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার বহাল রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকার সুবিধাভোগীদের আশা-আকাক্সক্ষার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের বর্তমান সুদের হার বহাল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। শনিবার সকালে এনএসসি টাওয়ার কমপ্লেক্স চত্বরে ‘সঞ্চয় সপ্তাহ-২০১৮’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। ‘চলো সবাই সঞ্চয় করি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় সহায়তা করি’ স্লোগানে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে সঞ্চয় সপ্তাহ। চলবে আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। সকাল ১০টায় উদ্বোধনী শেষে শোভাযাত্রা হয়। শোভাযাত্রাটি পল্টনে সঞ্চয় অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব, জিরো পয়েন্ট, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ঘুরে আবার প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। তাদের আশা-আকাক্সক্ষা সরকারের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের বর্তমান সুদের হার অক্ষুণœ রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তিনি বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদ হারের তারতম্য থাকলেও জনগণের স্বার্থে সহসাই সমন্বয় হবে না। কারণ, এই মাধ্যমেই বিনিয়োগ করে আর্থিক নিরাপত্তা পায় সাধারণ মানুষ। বলা হয়, ব্যাংকিংখাতের সুদ হার ৬ থেকে ৭ শতাংশ। তবে সঞ্চয়পত্রে এই হার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ। উচ্চসুদ হারের কারণে সরকারের ভর্তুকি বাড়লেও সাধারণ মানুষের স্বার্থে এ হারই চালিয়ে যেতে চেষ্টা করবে সরকার। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ লক্ষ্য ধরা হয় ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের আট মাসেই বিক্রি হয়েছে লক্ষ্যের ১০ শতাংশ বেশি। বছর শেষে যা গিয়ে দাঁড়াতে পারে ৪০ হাজার কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে শুল্ক ছাড়ও পাওয়া যায় বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক, ডাক বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়েই ৩৩ হাজার ১১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে। এই সময়ে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে মোট বিনিয়োগ এসেছে ৫৩ হাজার ৮৩১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল্য ও মুনাফা পরিশোধে সরকারের ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার ৭১১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে কেবল মুনাফা পরিশোধেই ব্যয় হয়েছে ১৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। মূল্য ও মুনাফা বাদ দিয়ে এ খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ১১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। যা গোটা অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ১০৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অধিদফতরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদী পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদী মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদী ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
×