ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অন্যরকম সৌন্দর্যে সেজে উঠছে বন্দরনগরী

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৭ এপ্রিল ২০১৮

অন্যরকম সৌন্দর্যে সেজে উঠছে  বন্দরনগরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উন্নয়ন আর আধুনিকতায় অন্যরকম সৌন্দর্যে সেজে উঠছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। নগরীর সৌন্দর্য বাড়াতে নগরীর সবচেয়ে দীর্ঘতম আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের প্রতিটি স্তম্ভ কৃত্রিম সবুজ ঘাসে মোড়ানো হচ্ছে। ফ্লাইওভারের স্তম্ভগুলো ইতোপূর্বে যেখানে নানা ধরনের পোস্টার-ব্যানারে ঢেকে নোঙরা আবর্জনায় ভরপুর থাকত, সেসব স্তম্ভ এখন সবুজ ঘাসে নান্দনিকতা পাচ্ছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর সবচেয়ে বড় ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত। আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার নামের এই সর্বাধুনিক ফ্লাইওভারটিতে স্তম্ভ রয়েছে মোট ৯৩টি। এখন এসব স্তম্ভের প্রতিটি সবুজ কৃত্রিম ঘাস দিয়ে মোড়ানো হচ্ছে। ফ্লাইওভারের নিচে মাটিতে লাগান হচ্ছে গাঁদা, জারুল, সন্ধ্যা মালতী, বেলিসহ নানা ধরনের ফুলগাছ। ফ্লাইওভারের নিচে সড়কের দুপাশ দিয়ে চলাচলের সময় নগরবাসী নগরীর এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন। ফ্লাইওভারের প্রতিটি স্তম্ভ দেখেই যে কারও মনে হতে পারে রড-পাথরের পিলারে যেন ঘাস গজিয়েছে। বর্তমানে ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ৯৩টি স্তম্ভে কৃত্রিম ঘাস লাগান হলেও ক্রমান্বয়ে নগরীর চারটি ফ্লাইওভারের প্রতিটি স্তম্ভ এমন নান্দনিক সৌন্দর্যে সাজান হবে বলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় সিডিএ’র উদ্যোগে চট্টগ্রামে এখন ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ চলছে। ব্যাপক উন্নয়ন ও নান্দনিক সৌন্দর্যে বদলে যাচ্ছে এই নগরী। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নগরীকে বিশ্বমানের সৌন্দর্যে সাজান হচ্ছে। এমন নান্দনিক সৌন্দর্যে নগরীকে বদলে দিতে নগরীর দুই নম্বর গেট থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের টাইম স্কয়ারের মতো করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এই এলাকা এমন সুন্দর আর আলোকোজ্জ্বল করা হবে যাতে এখানে রাত-দিনের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে না। যান্ত্রিক শহরের মধ্যে বসবাস করেও নগরবাসী সবুজ প্রকৃতির মধ্যে বসবাসের অন্যরকম এখন অনুভূতি পাবে। এমন নান্দনিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ফ্লাইওভারের প্রতিটি পিলারকে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বিশেষ কৃত্রিম ঘাস (সিনথেটিক টার্ফ) বসিয়ে সাজান হচ্ছে। ফ্লাইওভারের নিচে গড়ে তোলা হচ্ছে নানা ধরনের ফুলের বাগান। এসব বাগানের মধ্যে দিয়ে জনসাধারণের চলাচলেরও রাস্তা রাখা হচ্ছে। চলতি ২০১৮ সালের মধ্যেই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন আধুনিকতায় চট্টগ্রামকে ভিন্ন এক নান্দনিক সৌন্দর্যের নগরী হিসেবে নগরবাসী দেখতে পাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম। অযৌক্তিক রুট পারমিটে রাজধানীর গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাস্তবতা বিবেচনা না করেই বাস মালিকদের একের পর এক রুট পারমিট দেয়ায় রাজধানীর গণপরিবহন খাতে সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপ্রয়োজনীয় অনেক রুটের সঙ্গে গড়ে উঠছে অসংখ্য বাস কোম্পানি। ফলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে পরিবহন খাত। যদিও বিআরটিএর দাবি, যৌক্তিক কারণেই দেয়া হয়েছে রুট পারমিট। রাজধানীর গণপরিবহনের স্থবিরতার চিত্র এখানকার বাসিন্দাদের কাছে নতুন কিছু নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা। কর্মব্যস্ত কিংবা ছুটির দিন। প্রতিনিয়তই যানজটের সঙ্গে মোকাবেলা করে পথ চলছেন তারা। এই যখন বাস্তবতা, ঠিক তখন বিআরটিএ চলছে উল্টো পথে। গত বছর রাজধানীর গণপরিবহনে রুটের সংখ্যা ছিল ১৭০টির মতো। তবে এক বছর না পেরুতেই এই সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে প্রায় তিন শ’ তে। প্রায় দুই কোটি মানুষের এই শহরে আয়তন যেমন কম, তেমনি রাস্তাও ছোট। কিন্তু রুটের কোন কমতি নেই এই নগরে। দেখা যায়, রাজধানীতে মোটাদাগে উত্তর-দক্ষিণমুখী বড় রাস্তা ৪টি। এগুলো উত্তরা, মিরপুর, গাবতলী থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে ঢাকার দক্ষিণে। এ ছাড়া পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী রাস্তা আছে অন্তত ২টি। তবে হাতে গোনা এই ক’টি বড় রুটে হিজিবিজি করে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রায় তিন শ’রও বেশি রুট। ২০১৪ সালে এএলজি নামের স্প্যানিশ একটি পরিবহন কোম্পানি ঢাকার গণপরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে রুট পুনর্বিন্যাসসহ একটি সুপারিশমালা পেশ করে সরকারের কাছে। তবে প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়নি সরকার। বিআরটিএ বলছে, মালিকদের চাহিদা থাকায় দেয়া হয়েছে রুট পারমিট। বিআরটিএ রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মোঃ মাহবুব-ই রাব্বানি বলেন, অবৈজ্ঞানিকভাবে রোড পারমিট দেয়া হয়, সেটা ঠিক নয়। সেই রুটের অবকাঠামো ও চাহিদা বিবেচনা করে পারমিট দেয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নগরীতে যানজট, যাত্রী-ভোগান্তি, বিশৃঙ্খলা আর গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণহীনতার পেছনে আছে রুটের এই অযৌক্তিক বিন্যাস। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলেন, একই করিডোরে মাল্টিপল অপারেটর থাকার কারণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বেড়েই চলছে। এতে করে জনগণ সুবিধা পাচ্ছে না। অপারেটর ও যাত্রী ছিনতাই করতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। উল্লেখ্য, বিআরটিএর তথ্য মতে, রাজধানীতে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা প্রায় সাড়ে একুশ হাজার।
×