ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর ১১ হাজার মিনি ডাস্টবিন উধাও

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৭ এপ্রিল ২০১৮

রাজধানীর ১১ হাজার মিনি ডাস্টবিন উধাও

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে রাজধানীর সড়কগুলোতে প্রায় ১১ হাজার মিনি ডাস্টবিন বসিয়েছিল সিটি কর্পোরেশন। তবে এসব ডাস্টবিনের প্রায় সবই উধাও। এর মধ্যে বেশির ভাগ ডাস্টবিন চুরি হয়ে গেছে, আর কিছু ডাস্টবিন ব্যবস্থাপনার অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে। টিকে থাকা ডাস্টবিনগুলোর অবস্থাও জরাজীর্ণ। মেরামত বা পুনঃস্থাপন করলে কয়েকদিন পরই আবার ভেঙ্গে যায় বা চুরি হয়ে যায় এসব মিনি ডাস্টবিন। এগুলোতে ফেলা ময়লা পরিষ্কারও করা হয় না। ফলে ডাস্টবিনগুলো কোনও কাজেই আসছে না। বরং মেরামত আর পুনঃস্থাপনে খরচ বেড়েই চলেছে এসব ডাস্টবিনের পেছনে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, মেরামত করে বিনগুলো ব্যবহারের উপযোগী করা হবে। জানা গেছে, নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ২০১৬ সালে রাজধানীর সড়কগুলোতে বসানো হয় প্রায় ১১ হাজার মিনি ডাস্টবিন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একশ’টি করে মোট পাঁচ হাজার সাত শ’ মিনি ডাস্টবিন বসানো হয়। উত্তর সিটি কর্পোরেশনেও বসানো হয় পাঁচ হাজারের বেশি মিনি ডাস্টবিন। দুই সিটি কর্পোরেশনে ডাস্টবিনগুলো বসানোর কিছুদিন পরই সেগুলোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে নগরবাসী। তাদের অভিযোগ, ডাস্টবিনগুলো পরিষ্কার করা হয় না বলেই তারা সেগুলোতে খুব একটা ময়লা ফেলেন না। ফলে অধিকাংশ ওয়েস্ট বিনই খালি পড়ে থাকে। ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে বিনের নিচে ও আশপাশে। নগরবাসীর অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। অনেক বিনেই কয়েকদিনের ময়লা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কয়েকবার সংস্কার ও চুরি হওয়ার পর দুই সিটি কর্পোরেশনে বসানো অনেক ডাস্টবিন পুনঃস্থাপন করতে হয়েছে। এসব বিনের একেকটির দাম ছয় হাজার টাকারও বেশি। বিনগুলো মেরামত করতেও একেকটির পেছনে গড়ে খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকার বেশি। ফলে কাজে না আসলেও এসব বিনের পেছনে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশনকে। সম্প্রতি ফুটপাতের এসব মিনি ডাস্টবিন নিয়ে জরিপ চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকদের দিয়ে চালানো এ জরিপে দেখা গেছে, সংস্থার ৫ হাজার ৭০০টি বিনের মধ্যে ৫১ শতাংশ বিন রয়েছে। বাকি ২৭ শতাংশ বিন এখন মেরামতযোগ্য। আর ২২ শতাংশ বিনের কোনও হদিস নেই। একই চিত্র ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনেও (ডিএনসিসি)। সংস্থাটি এ নিয়ে কোনও জরিপ না চালালেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, মিনি বিনের এই বেহাল দশার অন্যতম কারণ ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। ফুটপাতে দোকান বসানোর জন্য অনেক বিন ভেঙ্গে ফেলেছেন তারা। কখনও কখনও কোথাও কোথাও ভাঙতে না পেরে বিনের মুখ উল্টো করে রাখা হয়, যেন কেউ বিনে ময়লা না ফেলে। অনেক সময় বিনের মুখ পলিথিন বা অন্য কিছু দিয়েও বেঁধে দেয়া হচ্ছে। সড়কের এসব বিনের বাইরে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নগরীর বিভিন্ন বস্তিতে বর্জ্য ফেলার জন্য ২০ হাজার ঢাকনাযুক্ত বিন সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু বিনগুলো উন্নতমানের হওয়ায় অনেকেই বর্জ্য না ফেলে ঘরের মালামাল রাখার কাজে ব্যবহার করছেন। জানতে চাইলে ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ‘মিনি ডাস্টবিনে সফলতা নেই, এটা বলা যাবে না। সড়কের পাশে থাকায় এগুলো বিভিন্ন সময়ে যানবাহনের ধাক্কায় ভেঙ্গে যায়। আবার কখনও হকাররা চুরি করে নিয়ে যায়। যেসব বিন নষ্ট হয়েছে, আমরা সেগুলো মেরামতের জন্য নোট দিয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে।’
×