ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাঞ্জাবিতে বৈশাখ

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ৬ এপ্রিল ২০১৮

পাঞ্জাবিতে বৈশাখ

পহেলা বৈশাখ বাঙালীর প্রাণের উৎসব। প্রাণের এ উৎসবে বৈশাখের রঙে নিজেকে সাজাতে ছেলেদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি। ভিন্নতা আনতে শার্ট, টি-শার্টেও লেগেছে বৈশাখী ছোঁয়া। পহেলা বৈশাখের সকালবেলা চারুকলা বা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যাওয়া, সন্ধ্যায় নানা নিমন্ত্রণ তো থাকেই। বৈশাখের সকালে আনন্দ উদযাপনে পাঞ্জাবিই সবচেয়ে আরামদায়ক ও মানানসই। বৈশাখের সকালে শুভ্র সাদা রঙের সুতার কাজের পাঞ্জাবি পরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারেন। এ ছাড়া হালকা হলুদ, নীল, কমলা, সবুজের মতো উজ্জ্বল রঙের পাঞ্জাবিও পরতে পারেন। নকশায় থাকতে পারে একই রঙের সুতার কাজ। আবার একরঙা পাঞ্জাবিতে করিয়ে নিতে পারেন ব্লকের কাজও। পাঞ্জাবি যদি শর্ট হয় তাহলে পরুন ধুতি সালোয়ার। ঝুল একটু বড় হলে বেছে নিন চুড়িদার সালোয়ার। ডিজাইন বা প্যাটার্ন যাই থাকুক না কেন, সকালবেলার পাঞ্জাবির কাপড় ও ডিজাইন হওয়া চাই হালকা ও আরামদায়ক। রাতের বেলা একটু ভারি কাজের জমকালো পাঞ্জাবি পরতে পারেন। এক ছাঁটের লং পাঞ্জাবি বেশি থাকছে এবার, পাশাপাশি সেমি লং পাঞ্জাবিও রয়েছে। পাঞ্জাবিতে এক রঙের ব্যবহার বেশি থাকলেও কলার, বাটন, প্লেট, চেস্ট এরিয়ায় ভিন্ন ডিজাইন ও কন্ট্রাস্ট চোখে পড়বে। লম্বা বা মাঝারি দৈর্ঘ্যরে পাশাপাশি জিন্সের সঙ্গে পরার উপযোগী শর্ট পাঞ্জাবিও রয়েছে। রাতের দাওয়াতে অভিজাত লুকে ভাল লাগবে সুতি, এ্যান্ডি ও সিল্কে হাতের কাজ ও এ্যাম্ব্রয়ডারি কাজের পাঞ্জাবি। ধুতির আদল কিংবা ফিউশনধর্মী পাঞ্জাবিও রাতের পার্টিতে দারুণ মানাবে। পাঞ্জাবির সঙ্গে আজকাল প্রিন্স কোট পরার চল বেড়েছে। একরঙা পাঞ্জাবির ওপর একটি প্রিন্স কোট চাপিয়ে নিলে রাতের দাওয়াতে আপনিও হয়ে উঠবেন গর্জিয়াস। বৈশাখে ছেলেদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি। এ ক্ষেত্রে সকালের দিকে হালকা কাজ ও নকশা আর রাতের দাওয়াতে ভারি কাজের পাঞ্জাবি বেছে নিতে পারেন। বৈশাখের উৎসবে লাল-সাদা পরতে চান অনেকেই। সে ক্ষেত্রে পাঞ্জাবিটা পরতে পারেন সাদার ভেতরে, সঙ্গে লাল পায়জামা আর লাল স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে নিলে বেশ লাগবে। রঙিন পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে জিন্স কিংবা সাদা পায়জামাতেও বেশ স্টাইলিশ লাগবে। বৈশাখের সারা দিন একই পোশাকে না থেকে সময় বুঝে পাল্টে নিতে পারেন। সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা পাঞ্জাবি পরলে দুপুর কিংবা বিকেলের আড্ডায় টি-শার্ট আরাম দেবে। এবার বৈশাখী ক্যাজুয়াল শার্টেও এসেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। লোকজ মোটিফ, টেপা পুতুল, সন্দেশ নকশা, হাঁড়ি, ঢোল-তবলা, কবিতাসহ নানা নকশায় অলঙ্কৃত হয়েছে বৈশাখের শার্ট। আরামের কথা মাথায় রেখে বেশিরভাগ শার্টই নকশা করা হয়েছে সুতি, ভয়েল, অরবিন্দুর মতো আরামাদয়ক কাপড়ে। ‘বৈশাখী উৎসবে চড়া রঙের শার্ট পরে সঙ্গে একটা ভিন্ন রঙের প্যান্ট পরা যেতে পারে। এ বছর শার্টে লোকজ মোটিফের ব্যবহার বেশি হয়েছে। হ্যান্ডপেইন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্টের মাধ্যমেই বেশিরভাগ নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে’ বলে জানান রং বাংলাদেশের ডিজাইনার ও স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস। বৈশাখী টি-শার্টে রং-নকশার বর্ণিলতা যেন ফুরানোর নয়। বলা যায় উৎসবের ক্যানভাস টি-শার্ট। ঢোল-তবলা, বাঁশি, প্রকৃতি, আল্পনা, কবিতার পঙ্ক্তিসহ বাঙালিয়ানা নানা মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বৈশাখী টি-শার্ট ও পলো টি-শার্টে। বেশিরভাগ ফ্যাশন হাউসেই শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়া এবং পাঞ্জাবিতেও থিমভিত্তিক কাজ হয়েছে। এ বছর বিশ্বরঙের বৈশাখী থিম সিনেমার পোস্টার দেখা যাবে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্টেও। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের স্বার্ণালি সময়ের ইতিহাস, কালজয়ী বিভিন্ন সিনেমার শিরোনাম, স্থিরচিত্র, পোস্টারসহ সিনেমার বিভিন্ন অনুষঙ্গের নকশা অন্যান্য পোশাকের মতো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছেলেদের পোশাকে। হালকা কাজের সুতির পাঞ্জাবি কিনতে পারবেন ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, তসর, এ্যান্ডি, সিল্কের ভারি কাজের পাঞ্জাবি ১ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার, প্রিন্স কোট ৬০০ থেকে ২ হাজার, বৈশাখী মোটিফের ক্যাজুয়াল শার্ট ৪০০ থেকে ১ হাজার ২০০, ফরমাল শার্ট ৮০০ থেকে ৪ হাজার, টি-শার্ট ২০০ থেকে ৩৫০ ও পলো টি-শার্ট ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
×