ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘ব্যাটল অব ব্রিটেনে’ লন্ডভন্ড ম্যানসিটি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ এপ্রিল ২০১৮

 ‘ব্যাটল অব ব্রিটেনে’ লন্ডভন্ড ম্যানসিটি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচটি নিয়ে ছিল তুমুল উত্তেজনা। ম্যাচের আগ পর্যন্ত সেটা বহাল ছিল। মাঠে প্রবেশের আগে ম্যানচেস্টার সিটির টিম বাসে লিভারপুল সমর্থকরা বোতল ছুড়ে মারে। কিন্তু এ্যানফিল্ডে ময়দানী লড়াইয়ে কিছুই করতে পারেনি পেপ গার্ডিওলার দল। বুধবার রাতে শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে ম্যানসিটিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে জার্গেন ক্লপের লিভারপুল। এই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার দৌড়েও এগিয়ে গেছে দ্য রেডসরা। অল-ইংল্যান্ড এই লড়াইয়ে গোলের বন্যা বয়ে যাবে এটা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে প্রিমিয়ার লীগের প্রায় নিশ্চিত চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জার্গেন ক্লপের দল যে এভাবে একচেটিয়া জয় তুলে নিবে তা ছিল আশাতীত। ১২ মিনিটে মিসরীয় তারকা মোহামেদ সালাহ’র গোল দিয়ে শুরু। এটি মৌসুমে সালাহ’র ৩৮তম ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সপ্তম গোল। এরপর একে একে এ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলেইন ও সাদিও মানের দুই গোলে প্রথমার্ধেই লিভারপুলের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। তৃতীয় গোলটিও সালাহ’র অবদান ছিল। তার ক্রসেই মানে হেড দিয়ে দলকে তৃতীয় গোল উপহার দেন। প্রথমার্ধের উজ্জীবিত লিভারপুলকে অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে দেখা যায়নি। এর কারণ হতে পারে সালাহ’র অনুপস্থিতি। কুচকির ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে ৫৩ মিনিটে মাঠ ছাড়েন মিসরীয় তারকা। আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের আগে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতার ফিটনেস নিয়ে চিন্তিত হতেই পারেন ক্লপ। এছাড়াও জর্ডান হেন্ডারসন নিষেধাজ্ঞার কারণে পরবর্তী ম্যাচ খেলতে পারবেন না। এরপরও পেপ গার্ডিওলার দলের বিপক্ষে ১৩ মোকাবেলায় ষষ্ঠ জয় লিভারপুলকে শেষ চারের পথে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে। সিটি কোচ গার্ডিওলা মাঝ মাঠে ইকে গুনডোগানের ওপর আস্থা রাখেন। এ কারণে সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ শুরু করতে পারেননি রাহিম স্টার্লিং। বিরতির পরে অবশ্য স্টার্লিং নামেন। দুই ইংলিশ জায়ান্টের দ্বৈরথে সব আকর্ষণ অবশ্য কেড়ে নেয় সালাহ’র গোল। ডানদিক থেকে ফিরমিনোর সহায়তায় সালাহ দারুণ এক গোলে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন। পর মুহূর্তেই সিটির ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু লিওরে সানে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। তার বাম পায়ের শট জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। সিটির এই সুযোগ হাতছাড়া হবার সুযোগে স্বাগতিক লিভারপুল বিরতির আগেই আরও দুই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। সিটির এমন ভরাডুবির পেছনে বাসে হামলার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। অনেকেই সমর্থকদের এই উগ্র আচরণকে দায়ী করেছেন। লিভারপুলের মাঠ এ্যানফিল্ডে খেলতে যাওয়ার সময় খেলোয়াড়দের বহন করা বাসটি লিভারপুল সমর্থকদের হামলার শিকার হয়। আতশবাজি ও আগুনের ফুলকি নিক্ষেপ করে বাসটির গতিরোধ করার চেষ্টা করে সমর্থকরা। গুজব ছড়ায়, সিটি কোচ গার্ডিওলার ওপরও হামলা করে এই ক্ষিপ্ত ভক্তরা। অবশ্য স্বয়ং সিটির খেলোয়াড়রা কোচের ওপর হামলার ব্যাপারটি গুজব বলে উড়িয়ে দেন। এমনকি বাসের ঘটনা ম্যাচে কোন প্রভাব ফেলেনি বলেও স্বীকার করেন তারা। ম্যাচের খারাপ ফলের জন্য তারা কোনভাবেই এ ঘটনাকে দায়ী করতে নারাজ। সিটির বেলজিয়াম তারকা ভিনসেন্ট কোম্পানি বলেন, বাসের ঘটনা আমাদের কোনভাবেই প্রভাবিত করেনি। আমাদের সঙ্গে এ ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি আমরা। মার্শেই পুলিশ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের দু’জন পুলিশ অফিসার এ ঘটনায় আহত হয়েছেন। আগে থেকেই ঘোষণা করা হয় সিটির এ্যানফিল্ডে যাওয়ার পথ পরিবর্তনের কথা। তাই ভক্তরাও আগে থেকে বুঝতে পারে কোন পথে সিটির কোচ যাবেন। গার্ডিওলা বলেন, এই ব্যাপারটা ঘটতে পারে, এমন ধারণা করা হয়েছে। সাধারণত যদি পুলিশ আগে থেকেই জানে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তাদের পক্ষে সেই ঘটনা ঘটতে না দেয়াটা সহজ কাজ হয়ে যায়। আমি লিভারপুল ও তাদের সমর্থকদের কাছে এমন উগ্র ব্যবহার আশা করিনি।
×