ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে ॥ এক মাসের মধ্যেই মন্ত্রিসভায় উঠবে

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৬ এপ্রিল ২০১৮

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে ॥ এক মাসের মধ্যেই মন্ত্রিসভায় উঠবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার উচ্চ ব্যয় বহন করতে গিয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে অনেক পরিবার। এটি দেশের দারিদ্র্য বিমোচন মোকাবেলার পথে অন্যতম প্রধান অন্তরায় বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। তিনি বলেন, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের অতি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেই। দেশে স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় এর ৬৭ শতাংশই রোগীকে বহন করতে হয়। এই খরচের ৪০ শতাংশেরও বেশি অর্থ ব্যয় হয় ওষুধ ক্রয়ে। স্বাস্থ্য ব্যয় কমিয়ে আনতে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ জরুরী। রোগী এবং চিকিৎসকের স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন’ করছে। যা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই আইনটি কেবিনেটে উঠবে। দেশে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে। দারিদ্র্য সীমার এই তারতম্যের অন্যতম কারণ স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় বৃদ্ধি। স্বাস্থ্য ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হলে দেশে দারিদ্র্য সীমার মাত্রা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০১৮ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৭ এপ্রিল বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা : সবার জন্য, সর্বত্র’। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা এমন একটি বিষয় যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বত্র প্রয়োজনীয় মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পাবে এবং এই স্বাস্থ্যসেবা পাবার জন্য তাকে কোন আর্থিক ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হবে না। এর মূল লক্ষ্য হল-চিকিৎসা ব্যয় সমন্বয়ের মাধ্যমে রোগীর নিজস্ব পকেট থেকে খরচের পরিমাণ কমানো। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে ২০২৩ সালের মধ্যে পৃথিবীর আরও ১০০ কোটি মানুষকে অতি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং চিকিৎসাসেবার ব্যয় বহন করতে গিয়ে বছরে যে প্রায় ১০ কোটি মানুষ অতি দরিদ্র হয়ে পড়ছে তার সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সেমিনার আয়োজন, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, স্মরণিকা প্রকাশ, টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠান, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, প্রেস ব্্িরফিং, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, জারীগান, সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার উদ্যোগে প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ বছর জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঢাকাস্থ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য জেলা ও উপজেলায়ও বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হবে। লিখিত বক্তব্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রতি ৬০০০ জনগোষ্ঠীর জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বর্তমানে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে জনগণ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। উন্নত ও বিশেষায়িত চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল নির্মাণের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যাবৃদ্ধি এবং আধুনিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বলে জানান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।
×