ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন ১১ ও ১২ মে

প্রকাশিত: ০৫:০০, ৬ এপ্রিল ২০১৮

ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন ১১ ও ১২ মে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ নানা জল্পনা কল্পনা আর নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে হচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। আগামী ১১ ও ১২ মে সংগঠনটির ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। এর আগে ২৪ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ২৬ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ২৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সম্মেলন হবে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তারিখ ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাইফুর রহমান সোহাগ। লিখিন বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আরও গতিশীল ও বেগবান করার লক্ষ্যে আগামী ১১ এবং ১২ মে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। গত ৩১ মার্চ ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন নাটকীয়তার কারণে ৩১ মার্চ হয়নি দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২৯তম সম্মেলন করতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি। ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি কতটুকু সফল এমন প্রশ্নের জবাবে নিজেদের মেয়াদে ছাত্রলীগকে সফল হিসেবে দাবি করেছেন সাইফুর রহমান সোহাগ। তিনি বলেন, ‘আমি তো মনে করি শতভাগ সফল। এরপরে কিন্তু ব্যর্থতা থাকে না। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে আমি নিজেকে ব্যর্থ মনে করছি না। আমরা যদি কোনও ভুল করে থাকি, তা আপনারা (সাংবাদিক) দেখবেন। তা ধরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আপনাদের।’ নিজের মেয়াদে ছাত্রলীগকে সফল দাবি করলেও বিভিন্ন সময়ে এই মেয়াদেই ছাত্রলীগের নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘কোন মানুষের শুধু একটি পরিচয়ই বহন করে না। কোন বিভাগের দুই বন্ধুর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে মারামারি হয়েছে। তারা দুজনই ছাত্রলীগের কর্মী। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও তারা সংশ্লিষ্ট। এখন এই ঘটনার শিরোনাম কোনটা হবে, তার সিদ্ধান্ত আপনারাই (সাংবাদিকরা) নেন। আপনারা লিখবেন ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, বিষয়টি কিন্তু তা নয়। শিরোনামের নেগেটিভ-পজিটিভ বিষয় নিয়ে আমরা ভাবি না।’ সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময় ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজন করার জন্য কোন ধরনের চাপ ছিল, পরে সম্মেলন করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘এ সময়ে সম্মেলন আয়োজন করাকে অবশ্যই ভাল চোখে দেখছি। কিসের চাপ? আমাদের একমাত্র অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’ ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন নাকি মনোনয়নের মাধ্যমে আসবে এমন প্রশ্নের জবাবে সোহাগ বলেন, ‘আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই নতুন নেতৃত্ব আসবে। গঠনতন্ত্রের পরেও আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বলবেন, সেভাবেই হবে।’ নির্দেশ থাকার পরও গত মার্চ মাসে সম্মেলন না করার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সোহাগ বলেন, ‘আপনারা এখনকারটা বিচার করবেন। আমরা আমাদের একমাত্র অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই যা করার করেছি। তখন তো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আনুষ্ঠানিক কিছু ঘোষণা করেনি। এখন সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করছি। এরপর যদি সম্মেলন না হয়, তার দায়ভার আমাদের।’ নতুন নেতৃত্বে যারা আসবে, সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বয়স ২৭ বছরের নিচে থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন সাইফুর রহমান সোহাগ। এ বিষয়ে গঠনতন্ত্রে থাকা বিধান এবং শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের সব প্রস্তুতি থাকবে। তারপরও আমাদের একমাত্র অভিভাবক শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ীই সম্মেলন ও সবকিছু হবে।’ নিজেদের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে জাকির বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি সব কর্মকা-ে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা দুই ভাই (ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) মনে করি, ছাত্রলীগের যত অর্জন আছে তা কেন্দ্রীয় কমিটির সব নেতা ও ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর। অন্যদিকে সব ব্যর্থতার দায়ভার আমাদের দুজনের। তারপরও আমাদের সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ধারণ করবে দেশের ছাত্রসমাজ ও জনগণ।’ ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই সাইফুর রহমানকে সভাপতি ও এস এম জাকির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
×