ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, গ্যালাক্টিকোদের বিশ্বের সেরা দলের স্বীকৃতি বুফন-এ্যালেগ্রিদের, লালকার্ড দেখলেন ব্যর্থ দিবালা, শিষ্যদের প্রশংসায় জিদান, পিছিয়ে পড়েও সেভিয়ার মাঠে জয় বেয়ার্নের, জুভেন্টাস ০-৩ রিয়াল মাদ্রিদ, সেভিয়া ১-২ বেয়ার্ন মিউনিখ

জুভেন্টাসকে উড়িয়ে দিয়ে সেমির পথে রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ৫ এপ্রিল ২০১৮

জুভেন্টাসকে উড়িয়ে দিয়ে সেমির পথে রিয়াল মাদ্রিদ

জাহিদুল আলম জয় ॥ এক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে রুখতেই ত্রাহি অবস্থা জুভেন্টাসের। পর্তুগীজ সুপারস্টার ডালভাতের মতো বারবার অনায়াসে ইতালিয়ান দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে দুই গোল করে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তুরিনের ওল্ড লেডিদের। চলতি মৌসুমে ফাইনালে না হলেও কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হয়ে গেছে দু’দলের। মঙ্গলবার রাতে শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে নিজেদের মাঠে টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়ালকে আতিথ্য দেয় স্বাগতিক জুভেন্টাস। তুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে এবারও স্বাগতিকদের মেরুদ- ভেঙ্গে দিয়েছেন সি আর সেভেন। তার করা দৃষ্টিনন্দন জোড়া গোলের কল্যাণে জুভদের ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে ফেলেছে রিয়াল। ১১ এপ্রিল ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠ সান্টিয়াাগো বার্নাব্যুতে নিজেদের হয়তো সেমির লড়াইয়ের আগে ঝালিয়ে নিতে নামবেন রোনাল্ডো, রামোস, মার্সেলোরা। একই রাতে আরেক ম্যাচে সেভিয়ার মাঠে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলের দারুণ জয় নিয়ে ফিরেছে বেয়ার্ন মিউনিখ। এই জয়ে ফিরতি লেগে মিউনিখে স্বস্তি নিয়েই মাঠে নামবেন মুলার, লেভানডোস্কিরা। গত তিন মৌসুমের দুটিতেই কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রির অধীনে জুভেন্টাস ফাইনালে খেলেছে। গত বছর ফাইনালে জুভেন্টাসকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে রেকর্ড ১২তম ইউরোপিয়ান শিরোপা জয় করে রিয়াল। গত বছরের ফাইনালের লাইনআপের ওপরই আস্থা রাখেন রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। শুধু গ্যারেথ বেলের জায়গায় খেলান দারুণ ফর্মে থাকা ইস্কোকে। জুভেন্টাসের রক্ষণভাগকে বিভ্রান্ত করে বামপ্রান্ত দিয়ে ইস্কো বারবার রোনাল্ডোকে বল যুগিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় মিনিটে রোনাল্ডোকে আটকানোর সাধ্য ছিল না জুভ গোলরক্ষক ও অধিনায়ক জিয়ানলুইগি বুফনের। ৩৪ মিনিটে জুভেন্টাস সমতা ফেরানোর সুযোগ নষ্ট করে। মাত্তিয়া ডি শিগলিওর ক্রস থেকে গঞ্জালো হিগুয়াইন বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হন। এরপর দিবালার ফ্রিকিক থেকে হিগুয়াইনের শট দারুণভাবে রুখে দেন কেইলর নাভাস। এরপর রিয়ালের টনি ক্রুসের দূরপাল্লার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। বিরতির পরে দিবালাকে ফাউলের অপরাধে হলুদ কার্ড পাওয়া রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস আগামী ম্যাচে খেলতে পারবেন না। ৬৪ মিনিটে ড্যানিয়েল কারভাজালের ক্রস থেকে শূন্যে লাফিয়ে রোনাল্ডোর দৃষ্টিনন্দন বাইসাইকেল কিকটি অনেকদিন সমর্থকদের মনে গেঁথে থাকবে। এই গোলের পর আগের প্রায় পুরোটা সময় ধরে জুভ সমর্থকদের চোখের কাঁটা হয়ে থাকা রোনাল্ডোরকে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানান স্বাগতিক দর্শকরা। এই মিনিটখানেক পরই কারভাজালকে সামনে থেকে বাজেভাবে ট্যাকেলের অপরাধে দিবালা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এই সুযোগে ৭২ মিনিটে রোনাল্ডোর সহায়তা মার্সেলো বুফনকে ফাঁকি দিয়ে রিয়ালের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, ফুটবলের ইতিহাসে রোনাল্ডোকে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে অকপটেই বিবেচনা করা যায়। জুভেন্টাসের মাটিতে তাদের বিপক্ষে তিন গোল করা মোটেই সহজ নয়। কিন্তু দিনের শেষে এটি ছিল রিয়ালের টিমওয়ার্ক। এই ধরনের ফলাফল পেতে হলে একটি দল হিসেবে খেলতে হবে। অবশ্যই এই ফলাফলে জুভেন্টাস মোটেই খুশি নয়। কিন্তু জুভ সবসময়ই আমার হৃদয়ে আছে। জুভেন্টাস কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রি বলেন, এই ফলাফল মেনে নেয়া সত্যিই কঠিন। গত বছর কার্ডিফে ফাইনালে হারের পর এখন আমরা অনেক বেশি পরিণত। রিয়ালের মতো দলের বিপক্ষে ম্যাচে নামাটা আসলেই কঠিন। সম্ভবত বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষেই আমরা খেলেছি। এখন সবকিছুকে পেছনে ফেলে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আরেক ম্যাচে রামোন সানচেজ পিজুয়ানের নিজেদের মাঠে ৩২ মিনিটে পাবলো সারাবিয়ার গোলে সেভিয়া যখন এগিয়ে যায় তখন আরেকটি অঘটনের অপেক্ষায় ছিল স্বাগতিক সমর্থকরা। কিন্তু বেয়ার্ন একটু বেশি সৌভাগ্যবান ছিল। কেননা ৩৭ মিনিটে ফ্রাঙ্ক রিবেরির ক্রসে জেসুস নাভাসের আত্মঘাতী গোলে সমতা ফেরানোর পর দ্বিতীয়ার্ধে থিয়াগোর হেডে বেয়ার্নের জয় নিশ্চিত হয়। এগিয়ে যেয়েও এই হারে হতাশা প্রকাশ করেন সেভিয়া কোচ ভিনসেনজো মনটেলা। তিনি বলেন, প্রথমত বলতে হয় ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল না। আমাদের দলের ফলাফল (অন্তত ড্র) পাওয়াটা প্রাপ্য ছিল। বেয়ার্ন কোচ জাপ হেইঙ্কেস বলেন, সেভিয়ার সামনে গোলের সুযোগ ছিল। বিরতির আগে সমতায় আসাটা মানসিকভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে। এ কারণেই পরবর্তীতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আমরা নিতে পেরেছি।
×