ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়ল পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৫ এপ্রিল ২০১৮

উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়ল পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রায় এক দশক পর করাচীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনটাকে স্মরণীয় করে রাখল পাকিস্তান। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের টি২০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করল সরফরাজ আহমেদের দল। ছোট্ট ফরমেটের ‘নাম্বার ওয়ান’ (র‌্যাঙ্কিংসেরা) পাকিদের কাছে পাত্তাই পেল না ক্যারিবীয়রা। শেষ ম্যাচে জেসন মোহাম্মদরা হেরেছে ৮ উইকেটে। আন্দ্রে ফ্লেচারের (৫২) ফিফটিতে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান করেছিল উইন্ডিজ। দুই ওপেনার ফখর জামান (৪০) ও বাবর আযমের (৫১) ব্যাটিং-তা-বে ১৬.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। প্রথম দুই ম্যাচে সরফরাজদের জয় ১৪৩ ও ৮২ রানের ব্যবধানে। হোক না ক্রিস গেইল, জেসন হোল্ডার, কার্লোস ব্রেথওয়েহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৯ সালের পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ পেয়েই খুশি করাচীর ক্রিকেটপাগল মানুষ। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে সেটিই উল্লেখ করেছেন দুই অধিনায়ক। করাচী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৯ বল খেলে শূন্য রানে ফিরে যান চ্যাডউইক ওয়ালটন। অভিজ্হ মারলন স্যামুয়েলসের সঙ্গে আন্দ্রে ফ্লেচারের ৭২ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় অতিথিরা। দুটি করে ছক্কা-চারে ৩১ রান করা স্যামুয়েলসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন তরুণ লেগস্পিনার শাদাব খান। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরই রানআউট হয়ে ফিরে যান ফ্লেচার। এই ওপেনারের ৪৩ বলে খেলা ৫২ রানের ইনিংসটি গড়া ৩টি ছক্কা ও ৪টি চারে। ৬ রানের মধ্যে অভিষিক্ত আন্দ্রে ম্যাককার্থি, ফ্লেচার ও রোভম্যান পাওয়েলকে হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে দলকে দেড় শ’ রানে নিয়ে যান দিনেশ রামদিন। ঝড় তোলা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ১৮ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৩ রান করে। ২৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে শাদাবই পাকিস্তানের সেরা বোলার। রান তাড়ায় পাকিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ফখর ও বাবর। ৫.২ ওভারে গড়েন ৬১ রানের বিস্ফোরক এক জুটি। মাত্র ১৭ বলে ৬ চার ও দুই ছক্কায় ৪০ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে আউট হন ফখর। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরের বলেই একই পথ ধরেন বাবর। ৪০ বলে তার ৫১ রানের ইনিংস গড়া ৬টি চার দিয়ে। বাকিটা সহজেই সারেন হুসাইন তালাত ও আসিফ আলি। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে দুইজনে গড়েন ৪১ রানের জুটি। ২৮ বলে ৩ চারে ৩১ রানে অপরাজিত তালাত। আসিফ ১৬ বলে ২৫। প্রথম ম্যাচে ২০৩ রান করে প্রতিপক্ষকে ৬০ রানে অলআউট করে সরফরাজ আহমেদের দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের যেমন সেটি ছিল টি২০তে নিজেদের সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জা, বিপরীতে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। পরেরদিনই দ্বিতীয় টি২০তে রেকর্ডটা ২০৫ রানে উন্নীতি করে তারা। এবার জয় ৮২ রানে। দুই অধিনায়কই জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনে করাচীর দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেই খুশি তারা। ২০০৯ সালে লাহোরে সফরকারী শ্রীলঙ্কার টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর দেশটিতে হাতে গোনা যে কটি ম্যাচ হয়েছিল তার সবকটিই ওই লাহোরে। দীর্ঘদিন পর এই সিরিজ দিয়ে করাচীতে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। রেকর্ড রান আর ৩-০তে জয়ের পথে ফখর-বাবররা উৎসবটা রঙিন করে দিলেন। টি২০তে এ নিয়ে টানা সপ্তম সিরিজ জিতলো পাকিস্তান। সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত কোন সিরিজ হারেনি দলটি। ফেবারিট না হয়েও ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতলেও পরবর্তীতে ওয়ানডেতে সময়টা খুব একটা ভাল না গেলেও টি২০তে দারুণ করছে পাকিরা। ১৩০ রেটিং নিয়ে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে তারা। সেরা পাঁচে পরের চারটি স্থানে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। স্কোর ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ॥ ১৫৩/৬ (২০ ওভার; ফ্লেচার ৫২, স্যামুয়েলস ৩১, ম্যাককার্থি ৫, পাওয়েল ২, জেসন ১৩, রামদিন ৪২*, পল ১*; নওয়াজ ১/২৬, উসমান ১/৩৪, আশরাফ ১/৩৩, শাদাব ২/২৭)। পাকিস্তান ॥ ১৫৪/২ (১৬.৫ ওভার; ফখর ৪০, বাবর ৫১, তালাত ৩১*, আসিফ ২৫*; এমরিট ১/২৪, স্মিথ ১/৩৮)। ফল ॥ পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ফখর (পাকিস্তান)। সিরিজ ॥ তিন ম্যাচের টি২০ পাকিস্তান ৩-০তে জয়ী। সিরিজসেরা ॥ বাবর (পাকিস্তান)।
×