ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

অশুভ শক্তির ভয়ে ভীত নই

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৫ এপ্রিল ২০১৮

অশুভ শক্তির ভয়ে ভীত নই

পহেলা বৈশাখ অসাম্প্রদায়িক সার্বজনীনন উৎসব। বাঙালী সংস্কৃতির সঙ্গে পহেলা বৈশাখ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকে না। সবাই এই উৎসবে অংশ নেয়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। এই দিন পথে, ঘাটে, মেলায়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যত লোক সমাগম হয়। অন্য কোন উৎসবে এত লোক হয় না। মেয়েদের লাল পাড়ে সাদা শাড়ি হাতে কাচের রং বেরঙের চুড়ি কপালে লাল টিপ আর ঠোঁটে লাল টুকটুকে লিপস্টিক দেখা যায়। ছেলেরা সাদার ওপর লাল পাঞ্জাবি পরে। ছেলে মেয়েদের এই বর্ণিল সাজ শহরের রূপটাই পাল্টে দেয়। এই অদ্ভুত মন মাতানো মুগ্ধতা খেলা করে সর্বত্র। এমন বর্ণিল উৎসব আর হয় না। তাই এমন আনন্দ উৎসবের সময় বেঁধে দেয়া সমীচীন নয়। নিরাপত্তার একটা ব্যাপার আছে। তাই হয়তো সময় বেঁধে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই একটা দিন কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারে না? এতটুকুন সক্ষমতা কি তাদের নেই? এমনিতেই মানুষের জীবন থেকে আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নানা কারণে যান্ত্রিক হতে বাধ্য হচ্ছে। শুধু পহেলা বৈশাখই ব্যতিক্রম। এদিন মানুষ তার শিকড়ের কাছে ছুটে যায়। মন প্রাণ খুলে আনন্দ করে। বাচ্চারা বিশুদ্ধ সংস্কৃতির ছোয়া পায়। পহেলা বৈশাখ অনেকে দূরে ঘুরতে যায়। দূরের মেলা দেখতে যায়। সময় বেঁধে দিলে তাদের অসুবিধা হবে। আর ওই দিন যানবাহন স্বল্পতা তো থাকেই। সব জায়গায় অপরাধ তো হয় না। যেখানে লোক সমাগম বেশি সেখানে ঝুঁকি থাকে। তাই মেলাগুলোতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন করলেই হয়। সিসি ক্যামেরা লাগিয়েও দেখা যায়। বিজিবি কে তো বিভিন্ন সময় টহল দিতে দেখা যায়। প্রয়োজনে তাদেরকে কাজে লাগাতে অসুবিধা কোথায়? স্কাউট, আনসার সদস্যরা আছেন দেশজুড়ে। তাদের সহায়তাও নেয়া যেতে পারে। সময়ের ব্যারিকেড থাকলে এই আনন্দ উৎসব মলিন হয়ে যাবে। ম্লান হয়ে যাবে। জনমতে একটা ভীতি বিরাজ করবে। দ্রুত ফিরতে হবে এই টেনশনে আনন্দ মাটি হয়ে যাবে। মেলার আয়োজন যারা করবেন তারা চরম বিপদে পড়বেন। কারণ পাঁচটার মধ্যে মেলা শেষ করা অসম্ভব বিষয়। অশুভ শক্তির ভয়ে যদি সময় নির্ধারণ করা হয় তাহলে সেটা আমাদের পরাজয়। কোনভাবেই এটা মেনে নেয়া যায় না। তাই অধিকাংশ মানুষের কথা ভেবে সময়সীমার ব্যাপারটি তুলে নেবার দাবি জানাচ্ছি। বানারীপাড়া, বরিশাল থেকে
×