ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সময় বেঁধে দেয়া কেন! সৈয়দ রশিদ আলম

সামজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বর্ষবরণে সময় বেঁধে দেয়া

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৫ এপ্রিল ২০১৮

সামজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বর্ষবরণে সময় বেঁধে দেয়া

প্রত্যেক জাতি প্রতিবছর একটি নির্ধারিত দিনকে বর্ষবরণ দিন হিসেবে পালন করছেন দীর্ঘদিন থেকে। পারস্য থেকে এই বর্ষবরণের উদ্ভব হয় বলে মনে করা হয়। পারস্য যা বর্তমানে ইরান নামে পরিচিত এক সময় দেশটি জরাথ্রুস্ট অনুসারীদের দেশ ছিল। তখন নওরোজ উৎসব পালন করা হতো। ইরানে ইসলামের আগমনের পরও এখনও নওরোজ উৎসব পালন করা হয়। এই উৎসবকে ইরানীরা প্রাণের উৎসব মনে করেন। এই উৎসব পালনের মধ্যে তারা প্রাচীন ধর্মের কোন অজুহাতকে বর্ষবরণ পালন করার ক্ষেত্রে বাধা মনে করেন না। সেখানে দিনব্যাপী দিবসটি পালনা করা হয়। ১ জানুয়ারি ইংরেজী নববর্ষ একইভাবে বিশ্ববাসী ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে নয় নতুন দিন হিসাবে পালন করছেন। এই অনুষ্ঠান পালন করতে গিয়ে নির্ধারিত সময় সীমাকে অনুসরণ করছেন না। ১ বৈশাখ আমাদের দেশের একটি সর্বজনীন উৎসব। এখানে সব ধর্মের, বর্ণের গোত্রের মানুষ একত্রিত হয়ে দিনটি পালন করেন। বাংলাদেশের পাহাড়ী বাসিন্দারা তিন দিন থেকে ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব যা তাদের ভাষায় বৈসাবী উৎসব হিসাবে পালন করেন। সেখানেও কোন সময়সীসা বেঁধে দেয়া হয় না। উৎসব পালন করবেন এর মধ্যে যদি সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় তখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসবে বর্ষবরণ কি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত? আর যদি না হয় তাহলে এবার ১ বৈশাখ পালন করার ক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে বিকেল ৫টার মধ্যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। কার ভয়ে নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে? অতৃপ্ত অবস্থায় যদি কোন বর্ষবরণ পালন করা হয় তখন সেখানে প্রাণের উৎসব আর থাকবে কিভাবে? বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চূড়ান্ত বন্ধনকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়ার জন্য উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তারা ১ বৈশাখ অনুষ্ঠান পালন করাকে বিধর্মীদের অনুষ্ঠান মনে করেন। যেহেতু তারা নিজেরাই ধর্মের অনুশাসন থেকে বের হয়ে এসেছে, তারা ইতোমধ্যে পশুতে পরিণত হয়ে গেছেন, যে কারণে তাদের ভেতর পশুচিত্ত কাজ করছে। এই নিম্ন শ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভয়ে কখনই আমাদের প্রাণের ১ বৈশাখ উৎসবকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত পালন করার ক্ষেত্রে সময়সীমা বেঁধে দেয়া সমর্থনযোগ্য নয়। মিরপুর, ঢাকা থেকে
×