ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের জামিনের এখতিয়ার নিয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের পক্ষে মত হাইকোর্টের

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৫ এপ্রিল ২০১৮

ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের জামিনের এখতিয়ার নিয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের পক্ষে মত হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশেষ আইনে দায়ের করা মামলার বিচার শুরুর আগে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন দেয়ার এখতিয়ার আছে কিনা- এ প্রশ্নে মামলা নিষ্পত্তির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুর্নীতি মামলায় এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালের মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের মামলায় ব্যাংকটির এই দুই কর্মকর্তার জামিনের বিরুদ্ধে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। আদালতে এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসাদুর রউফ। দুদকের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। আদেশে বিচারক বলেন, ‘এ ধরনের বিশেষ আইনের মামলায় জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চের পৃথক সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে আপীল বিভাগের কোন সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি। ‘তবে কলকাতা হাইকোর্টের একটি নজির আমরা পেয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট জামিন দিতে পারে না। এ কারণে বৃহত্তর বেঞ্চে বিষয়টির নিষ্পতি হওয়া প্রয়োজন এবং আইনগত বিষয়গুলোও নিষ্পত্তি হওয়া দরকার বিধায় মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হলো।’ বিচারক বলেন, আগে এত বিশেষ আইন ছিল না। এখন যেহেতু হয়েছে, সেহেতু বিচার শুরুর আগে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন দেয়ার এখতিয়ার রয়েছে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। ‘সুতরাং এ মামলার আসামিদের জামিন প্রশ্নে সিদ্ধান্ত হবে পরে। আগে আইনী বিষয়ে নিষ্পতি হোক।’ দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি এখন তিন বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। সেখানেই জামিনের বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে। এবি ব্যাংকের আইনজীবী আসাদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু হাইকোর্ট জামিনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি, সেহেতু দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেয়া জামিন আপাতত বহাল থাকছে। তবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এ বিষয়ে বলছেন, হাইকোর্ট যেহেতু বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে, সেহেতু এখন প্রধান বিচারপতির আদেশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালকে নিম্ন আদালতের দেয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি রুল জারি করে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ দুই কর্মকর্তা যেন দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া ওই মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠাতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতকে নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই আদেশ দিয়েছিল। মতিঝিল থানায় গত ২৫ জানুয়ারি দায়ের করা এ মামলায় ওয়াহিদুল ও আবু হেনাকে জামিন দিলেও ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সাইদ আরেক আসামি সাইফুল হককে রিমান্ডে পাঠায়। বিষয়টি নজরে আসায় গত ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্ট ওই জামিনের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল দেয়।
×