ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কুমিল্লা মেডিক্যালের ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৫ এপ্রিল ২০১৮

কুমিল্লা মেডিক্যালের ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় এক প্রসূতির গর্ভের সন্তানকে দ্বিখন্ডিত করার ঘটনায় তদন্তে দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এই তদন্ত কমিটির দুই সদস্যের একজন হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি বিভাগের প্রধান; অন্যজন জাতীয় অধ্যাপক শায়লা খাতুন। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন, কুমিল্লা মেডিক্যালের পরিচালকসহ অস্ত্রোপচারকারী পাঁচ চিকিৎসক বুধবার আদালতের তলবে হাজির হলে তাদের ব্যাখ্যা শুনে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। প্রতিবেদন দাখিলের দিন ১১ এপ্রিল আদালতে সংশ্লিষ্ট পাঁচ ডাক্তারকে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দৈনিক জনকণ্ঠসহ কয়েকটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী মোঃ আসাদুজ্জামান। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার ফারহানা ইসলাম খান, আনিসুল হাসান ও সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ। জানা গেছে, জেলার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের সফিক কাজীর স্ত্রী জুলেখা বেগম (৩০) প্রসব বেদনা নিয়ে ১৭ মার্চ রাতে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন দুপুরে অপারেশন থিয়েটারে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ করুণা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল ওই অপারেশন করেন। ডাঃ নাসরিন আক্তার পপি, ডাঃ জানিবুল হক, ডাঃ দিলরুবা শারমিন ও ডাঃ আয়েশা আফরোজসহ অন্যরা অপারেশনে অংশ নেন। প্রসূতির স্বামী সফিক কাজী বলেন, প্রসব বেদনায় ছটফট করলেও ডাক্তাররা আমার স্ত্রীকে সিজারের কোন উদ্যোগ নেননি। পরদিন দুপুরে জুলেখার সিজার করা হয়। এ সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন এবং আমার স্ত্রীর জরায়ু কেটে ফেলা হয়। তিনি আরও জানান, ওইদিন হাসপাতালের একজন দারোয়ান এসে তার কাছে মৃত নবজাতককে মাটিচাপা দেয়ার জন্য ৫০০ টাকা চান। পরে তিনি ৩০০ টাকা দেন। ওই দারোয়ান নবজাতকের মরদেহ মাটিচাপা দেয়ার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পান তার সন্তানের মাথা কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি মোবাইলে নবজাতকের ছবি তুলে রাখেন। এরপর দারোয়ান হাসপাতালের অদূরে নিয়ে নবজাতককে মাটিচাপা দেন। অপারেশনে অংশ নেয়া হাসপাতালের ডাঃ নাসরিন আক্তার পপি, ডাঃ আয়েশা আফরোজ, ডাঃ জানিবুল হক, ডাঃ দিলরুবা শারমিন সাংবাদিকদের জানান, প্রসূতির গর্ভের সন্তান মৃত ও অস্বাভাবিক পজিশনে ছিল। কিন্তু শিশুটির হাত-পা জরায়ু মুখ দিয়ে বের হয়ে আসায় বাধ্য হয়ে অপারেশনের মাধ্যমে মৃত শিশুর দেহ ও মাথা বিচ্ছিন্ন করে আলাদাভাবে বের করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা জরায়ু কেটে ফেলি। অপারেশনের আগে এসব বিষয়ে প্রসূতির স্বামীর অনুমতি নেয়া হয়েছে এবং এতে ডাক্তারদের অবহেলা ছিল না বলে তারা দাবি করেন।
×