ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমস শুরু

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৫ এপ্রিল ২০১৮

গোল্ডকোস্ট  কমনওয়েলথ  গেমস  শুরু

গোলাম মোস্তফা ॥ অবশেষে দীর্ঘ চার বছরের অপেক্ষার অবসান। বুধবার জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে হয়ে গেল ২১তম কমনওয়েলথ গেমসের বর্ণিল উদ্বোধন। এবারের স্লোগান ‘স্বপ্নকে ভাগাভাগি করি’। এই স্লোগানকে সামনে রেখেই বুধবার অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডকোস্টের কারারা স্টেডিয়ামে গেমসের উদ্বোধন করেন প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস। গোল্ডকোস্ট শহরকে বলা হয় ‘সার্ফিং প্যারাডাইস।’ তাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বড় একটি অংশ জুড়ে ছিল সার্ফিং নিয়ে উপস্থাপনা। কারারা স্টেডিয়ামে ম্যারাথন রানার ডেমিয়েন রিডার ব্যাটন হাতে প্রবেশ করার পর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হয় কমনওয়েলথ গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। গ্ল্যাসগো ২০১৪ কমনওয়েলথ গেমসের আয়োজক ছিল স্কটল্যান্ড। যে কারণে প্রথা অনুযায়ী স্টেডিয়ামে প্রথম প্রবেশের সম্মান পায় তারা। এবারের গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পতাকাবাহকদের মধ্যে ছিলেন ৩৯ জন পুরুষ আর ৩২ জন প্রমীলা খেলোয়াড়। এশিয়ান দলগুলোর মধ্যে মার্চ পাস্টে প্রথম দল হিসেবে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। আতশবাজির রোশনাই আর অস্টেুলিয়ার সয়মড়ীতশিল্পী কেটি নুনানের কণ্ঠে ‘ইউ আর ওয়েলকাম হিয়ার’ গানে মুগ্ধ করে বিশ্ববাসীকে। অন্যান্য শিল্পীর মধ্যে মঞ্চ মাতিয়েছেন র‌্যাপার মাউ পাওয়ারও। অস্ট্রেলিয়ার তারকা সঙ্গীতশিল্পী ডেল্টা গুডরিমের ‘ওয়েলকাম টু আর্থ’ গানের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এবারের আসরে কমনওয়েলথভুক্ত ৭১টি দেশের ৬ হাজার ছয় শ’রও বেশি এ্যাথলেট ও কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। আসরের মূল আয়োজক গোল্ডকোস্ট তবে ব্রিসবেন, কেয়ার্নস ও টাউন্সভিলেতেও অনুষ্ঠিত হবে বেশ কয়েকটি ডিসিপ্লিন। গেমসটির ইতিহাসে সর্বাধিক ডিসিপ্লিন অনুষ্ঠিত হবে এবার। মোট ২৩টি ডিসিপ্লিনের পাশাপাশি থাকছে ৭টি প্যারা স্পোর্টস। সবমিলিয়ে ২৭৫টি স্বর্ণপদক জয়ের জন্য লড়বে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের ক্রীড়াবিদরা। অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডকোস্টে ব্রিটেনের সাবেক ঔপনিবেশিক দেশগুলোর অংশগ্রহণে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এবারও অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের আসরে বাংলাদেশের পতাকাবহন করেন গত আসরের রৌপ্যজয়ী আব্দুল্লা হেল বাকী। বাংলাদেশের বহরে ছিল মোট ২৬ জন এ্যাথলেট। তবে ১২ জনের শূটিং দলটাই ছিল সবার বড়। এর আগে বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশের সাফল্যের মঞ্চ হয়েছে এই কমনওয়েলথ গেমস। ১৯৯০ সালে অকল্যান্ডের কমনওয়েলথ গেমসে শূটিংয়ের দলীয় ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন আব্দুস সাত্তার নিনি ও আতিকুর রহমান। ২০০২ সালে গুরুত্বপূর্ণ এই টুর্নামেন্টে জাতীয় সঙ্গীত বেজেছিল আসিফ হোসেনের সৌজন্যে। সর্বশেষ গ্ল্যাসগোতেও শূটিংয়ে রুপা জিতে দেশের মান রেখেছিলেন আব্দুল্লাহ হেল বাকী। এবারের আসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে সাঁতার, বক্সিং, শূটিং, ভারোত্তোলন, কুস্তি এবং এ্যাথলেটিক্সে। প্রতি চার বছর পরপর আয়োজন করা হয় কমনওয়েলথ গেমসের। সর্বাধিক ৫ম বারের মতো এই টুর্নামেন্টের আয়োজক অস্ট্রেলিয়া। ১৯৩৮ সালে প্রথম আয়োজন করার পর ১৯৬২, ১৯৮২ এবং সর্বশেষ ২০০৬ সালেও স্বাগতিক তারা। তবে কোন আঞ্চলিক শহরের উদ্যোগে এই প্রথম আয়োজিত হচ্ছে গেমসটি। ১৯৩০ সালে কানাডার হ্যামিল্টনে এককালের ব্রিটিশ রাজ্যভুক্ত ১১টি দেশের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয়েছিল কমনওয়েলথ গেমসের। সে সময়ে অংশ নেয় ৪০০ এ্যাথলেট।
×