ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বমহিমায় উজ্জ্বল স্টিফেন্স

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ৪ এপ্রিল ২০১৮

স্বমহিমায় উজ্জ্বল স্টিফেন্স

গত মৌসুমে হঠাৎ করেই বিশ্ব টেনিসের পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসেন স্লোয়ানে স্টিফেন্স। ইনজুরির কারণে দীর্ঘ ১১মাস বাইরে থাকার পর টেনিস কোর্টে ফিরেই বাজিমাত করেন তিনি। টেনিসের উন্মুক্ত যুগের মাত্র পঞ্চম অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে কোন গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হন ২৫ বছরের এই তরুণী। চোট কাটিয়ে মাত্র ৬৯ দিন পর কোর্টে নেমে অপ্রত্যাশিতভাবেই ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পান তিনি। সেই শিরোপা জয়ের পর কেটে যায় আরও ছয় মাস। এই সময়ে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছিলেন না তিনি। পথ খুঁজছিলেন আবারও কীভাবে লাইম লাইটে আসা যায়। ঠিক তখনই অপ্রত্যাশিতভাবে মায়ামি ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিভাবান টেনিস তারকা। শনিবার জেলেনা ওস্টাপেঙ্কোকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো মায়ামি মাস্টার্সের শিরোপা জিতেন স্টিফেন্স। ফাইনালে এদিন তিনি ৭-৬ (৭/৫) এবং ৬-১ গেমে ওস্টাপেঙ্কোকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। শুধু তাই নয়, ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ছয়টি ফাইনালে খেলে তার সবকটিতেই জয় তুলে নিয়েছেন তিনি। বিশ্ব টেনিসের প্রায় সব তারকারাই অংশ নেন মায়ামি ওপেনে। সবাইকে পরাজিত করেই ফাইনালের টিকিট কেটেছিলেন ওস্টাপেঙ্কো আর স্টিফেন্স। গত ১২ মাসে উভয় তারকাই ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের পর মায়ামি ওপেনেও উপহার দেন দুর্দান্ত পারফর্মেন্স। যদিওবা উভয়ের জন্যই ফাইনালটা খুব একটা সহজ ছিল না। প্রথম সেটে আটবার সার্ভিস ব্রেক হয়েছে, সব মিলিয়ে হয়েছে ১২টি। ফ্রেঞ্চ ওপেনের চ্যাম্পিয়ন লাটভিয়ার ষষ্ঠ বাছাই ওস্টাপেঙ্কো এক ঘন্টা ৩২ মিনিটের ম্যাচে ৪৮টি আনফোর্সড এরর করেছেন। অন্যদিকে ইউএস ওপেনজয়ী স্টিফেন্স করেছেন ২১টি। শেষ পর্যন্ত স্টিফেন্সই জয়ী হয়েছেন। ওস্টাপেঙ্কোকে হারিয়ে ফাইনালে উঠার আগে আরও তিন গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী টেনিস তারকাকে। তারা হলেন বেলারুশ সুন্দরী ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা, বেলারুশ সুন্দরীকে সেমিফাইনালে হারান আমেরিকান তারকা। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করেন এ্যাঞ্জেলিক কারবারকে। ২০১৬ সালে জার্মানির এই টেনিস তারকাই কোর্ট কাঁপিয়েছিলেন। সে মৌসুমে দুটি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের পাশাপাশি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও দখল করে নিয়েছিলেন স্টেফি গ্রাফের এই উত্তরসুরী। তারও আগে মায়ামির শেষ ষোলোতে স্টিফেন্স পরাজিত করেন উইম্বলডনের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গারবিন মুগুরুজাকে। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের ফলে র‌্যাঙ্কিংয়েও অগ্রগতি হয়েছে তার। প্রথমবারের মতো ডব্লিউটিএ র‌্যাঙ্কিয়ের শীর্ষ ১০ এ উঠে এসেছেন তিনি। সোমবার নতুন করে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তার অবস্থান নবম। শিরোপা জয়ের পাশাপাশি র‌্যাঙ্কিংয়েও অগ্রগতি হওয়ায় স্টিফেন্সের উচ্ছ্বাসটা একটু বেশিই। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘ম্যাচের শুরুটা ভাল না হলেও প্রথম সেটে জয়ের পরে আমার আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। অনেক দিন ধরেই শীর্ষ ১০’এ আসার চেষ্টা করেছি। এজন্য আমি দারুণ খুশি।’ স্টিফেন্সের আগে অবশ্য আর কোন পরিবর্তন হয়নি। এক থেকে আট পর্যন্ত সব সেই আগের মতোই। শীর্ষে যথারীতি রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ। দুইয়ে ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। চলতি মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন। তিনে আছেন স্পেনের গারবিন মুগুরুজা। চার আর পাঁচে যথাক্রমে ইউক্রেনের এলিনা সিতলিনা এবং লাটভিয়ার জেলেনা ওস্টাপেঙ্কো। স্টিফেন্সের কাছে হারলেও র‌্যাঙ্কিংয়ে কোন ধরনের পরিবর্তন হয়নি লাটভিয়ার প্রতিভাবান খেলোয়াড় ওস্টাপেঙ্কোর। কেননা, ২০০৯ সালে আজারেঙ্কার পরে সবচেয়ে কম বয়সে মায়ামি ওপেনের ফাইনালে ওঠার যে কৃতিত্ব দেখান তিনি। ২০ বছর ২৯৭ বছর বয়সে শনিবার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেন জেলেনা ওস্টাপেঙ্কো। তবে শিরোপা জয়ের খুব কাছাকাছি এসেও তা হাতছাড়া হওয়াতে চরম হতাশ লাটভিয়ার এই তরুণী। এ প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কখনও কখনও আমি অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে পড়েছি, যা মোটেও উচিত হয়নি। তবে ম্যাচের শুরুতে অবশ্য তার কিছুটা কাজে লেগেছিল। ফাইনাল মানে সবসময়ই ভিন্ন রকমের অনুভূতি। এখানে আমি অনেক বেশি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শট মিস করে ফেলি আমি। যার মাশুল দিতে হলো শিরোপা হারিয়ে।’
×