ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিজ দ. আফ্রিকার

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ৪ এপ্রিল ২০১৮

অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিজ দ. আফ্রিকার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের পর বেসামাল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট। নিষিদ্ধ স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারের মতো সুপারস্টাররা। মাঠের ক্রিকেটেও বেসামাল কুলিন দেশটি। সিরিজ বাঁচাতে হলে জোহানেসবার্গের শেষ ম্যাচটা জিততেই হতো। কিন্তু টিম পেইনের নেতৃত্বে আনকোরা দলটা হেরে গেছে ৪৯২ রানে। রানের হিসেবে টেস্টে নিজেদের সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে ও ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ বড় জয়ে ৩-১এ সিরিজ জিতে নিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৭০ সালের পর ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতল প্রোটিয়ারা। প্রতিপক্ষের বল টেম্পারিংয়ের কলঙ্ক ছাপিয়ে তারকা পেসার মরনে মরকেলের বিদায়ী টেস্টটা স্মরণীয় করে রাখল ফ্যাফ ডুপ্লেসিসের দল। স্কোর ॥ দ. আফ্রিকা ৪৮৮/১০ ও ৩৪৪/৬ (ডিক্লেঃ)। অস্ট্রেলিয়া ২২১/১০ ও ১১৯/১০। ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ভারনন ফিল্যান্ডার। চার ম্যাচে ২৩ শিকারে সিরিজসেরা তরুণ পেসার কাগিসো রাবাদা। ৩ উইকেটে ৮৮ রান নিয়ে মঙ্গলবার পঞ্চম ও শেষদিনের খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। জয়ের জন্য শেষদিনে অতিথিদের প্রয়োজন ছিল ৫২৪ রান। ম্যাচ বাঁচাতে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে কাটিয়ে দিতে হতো পুরো একদিন। এর ধারে কাছে যেতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ফিল্যান্ডারের পেস তা-বের মুখে পঞ্চমদিন তাদের ইনিংসের আয়ু মাত্র মাত্র ১৬.৪ ওভার। ৩১ রান যোগ করতেই শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় অতিথিদের ইনিংস। দিনের প্রথম ওভারে দুই ভাই শন ও মিচেল মার্শকে ফিরিয়ে দেন ফিল্যান্ডার। তার প্রথম বলে গালিতে টেম্বা বাভুমার হাতে ধরা পড়েন শন। চতুর্থ বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে মিচেল বল তুলে দিয়ে ফিল্যান্ডারের ক্যারিয়ারের ২০০তম শিকারে পরিণত হন তিনি। আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান পিটার হ্যান্ডসকম্ব ফিরে যান এক রান যোগ করেই। সুইং বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দেয়া ফিল্যান্ডারের পরের শিকার টিম পেইন। অধিনায়ক খোঁচা মেরে ধরা পড়েন ডি’ ককের গ্লাভসে। পরের ওভারে পরপর দুই বলে প্যাট কামিন্স ও চ্যাড সেয়ার্সের উইকেট তুলে নেন ফিল্যান্ডার। মাত্র ৩ রানের বিনিময়ে অস্ট্রেলিয়ার ৬ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান ফিল্যান্ডার। ২১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার তিনিই। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। টেস্ট ইতিহাসে রানের হিসেবে বড় পাঁচ জয়ের তিনটিই অস্ট্রেলিয়ার। সেই তাদেরই বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এ জয় চতুর্থ স্থানে। আর প্রোটিয়াদের আগের বড় জয়টা ছিল ৩৫৮ রানের, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০০৭ সালে। স্কোর ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস ॥ ৪৮৮/১০ (১৩৬.৫ ওভার; মার্করাম ১৫২, আমলা ২৭, ডি ভিলিয়ার্স ৬৯, ডুপ্লেসিস ০, বাভুমা ৯৫, ডি কক ৩৯, মহারাজ ৪৫; সেয়ার্স ২/৭৮, কামিন্স ৫/৮৩, লেয়ন ৩/১৮২) ও দ্বিতীয় ইনিংস ৩৪৪/৬ ডিক্লেঃ (১০৫ ওভার; মার্করাম ৩৭, এলগার ৮১, আমলা ১৬, ডি ভিলিয়ার্স ৬, ডুপ্লেসিস ১২০, বাভুমা ৩৫*, ডি কক ৪, ফিল্যান্ডার ৩৩*; হ্যাজলউড ০/৪১, সেয়ার্স ০/৬৮, লেয়ন ২/১১৬, কামিন্স ৪/৫৮, মিচেল ০/৪০, রেন শ ০/৯)। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ॥ ২২১/১০ (৭০ ওভার; খাজা ৫৩, পেইন ৬২, কামিন্স ৫০, লেয়ন ৮, সেয়ার্স ০, হ্যাজলউড ১*; ফিল্যান্ডার ৩/৩০, রাবাদা ৩/৫৩, মর্কেল ১/৩৪, মহারাজ ৩/৯২, মার্করাম ০/০) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১১৯/১০ (৪৬.৪ ওভার; লক্ষ্য ৬১২; রেন শ ৫, বার্নস ৪২, খাজা ৭, হ্যান্ডসকম্ব ২৪, শন ৭, মিচেল ০, পেইন ৭, কামিন্স ১, লেয়ন ৯, সেয়ার্স ০, হ্যাজলউড ৯*; রাবাদা ০/১৬, ফিল্যান্ডার ৬/২১, মহারাজ ১/৪৭, মরকেল ২/২৮, মার্করাম ০/৬)। ফল ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ভারনন ফিল্যান্ডার (দক্ষিণ আফ্রিকা)। সিরিজ ॥ চার টেস্টের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩-১ ব্যবধানে জয়ী, সিরিজসেরা ॥ কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
×