ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ ॥ ২৫ ঘরে অগ্নিসংযোগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৪ এপ্রিল ২০১৮

শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ ॥ ২৫ ঘরে অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৩ এপ্রিল ॥ সদর উপজেলা কালিকাপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় গ্রুপের লোকজন ২৫ বসতঘরে হামলা চালিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। সোমবার মধ্য রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আকনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের শাহেবালি মাদবরের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এই দ্বন্দ্বের জের ধরেই সোমবার রাতে উভয় গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। এছাড়াও কমপক্ষে ২৫ বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এতে শহিদুল খানের ২টি, ইদ্রিস খানের ৪টি, মোসলেম খান, খোকন খান, তেলাম খান, ইউনুস খান, বেলায়েত খান, সেলিম আকন, জব্বার আকন, হাবিব আকন, আতাবার আকন, শাহজাহান আকন, সোবাহান মোল্লা, খালেক মোল্লা ও বাদল চোকদারের বসতঘরসহ ২৫ ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নিত্য গোপাল সরকার বলেন, আমাদের প্রতিনিধিরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময়ে আগুনে ৮ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও একটি গবাদি পশু আগুনে পুড়ে মারা যায়। স্থানীয় সাহেব আলী মাদবর বলেন, আমার নিকট আত্মীয় হচ্ছে খবির মাতুব্বর। তার জমি নিয়ে সালিশী হয়। আর সেই সালিশীতে চেয়ারম্যান এজাজ নূরুজামান বারীর পক্ষ নেয়। এতে একাধিক বার সালিশীর মীমাংসা না হলে এজাজ আকন আমাদের ওপর আক্রমণ করেন। কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ এজাজুর রহমান আকন বলেন, আমার কোন পক্ষ নাই। পুলিশ ও স্থানীয়রা ভুল বলেছে। সোমবার রাতে নূরুজামান বারী সঙ্গে খবির মাতুবরের জমি নিয়ে একটি সালিশী হয়। আর এই জমি নিয়েই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরা কেউ আমার ‘পক্ষের নয়।’ নড়াইল নিজস্ব সংবাদদাতা নড়াইল থেকে জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইলের আমাদা ও কামালপ্রতাপ গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত ২০টি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এসময় ওই সব পরিবারের আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর করা হয়। জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে আমাদা গ্রামের কাশেম আলী খানের গ্রুপের লোকজন রামদা, গাছি দা, ঢাল সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রাদি নিয়ে প্রতিপক্ষ আলী আহম্মেদ খানের পক্ষের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকালীরা আমাদা গ্রামের ফেদু মল্লিক, জুলাই মল্লিক, আলা মল্লিক, বীরু মল্লিক, বিষু মল্লিক, আব্দুল হামিদ মল্লিক ও কামালপ্রতাপ গ্রামের নাজমুল মল্লিক, শরিফুল মল্লিক, মাজহারুল ইসলাম, রশিদ মল্লিক, ইদ্রিস মল্লিক, মন্টুু মল্লিক, তারিকুল মল্লিক, মুস্তাক মল্লিকসহ অন্তত ২০টি বাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান। এর আগেও কয়েকদফা বাড়িঘর ভাংচুরেরর ঘটনায় থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে। নওগাঁ নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, মঙ্গলবার ভোরে আত্রাইয়ে জমির দখল নিয়ে বসতবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাংচুরে বাধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়ে মারপিট করে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে আত্রাই থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে বাড়ির জায়গা নিয়ে তার প্রতিবেশী বেলাল ফৌজদারের বিবাদ চলে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। এ বিবাদের জের ধরে প্রতিপক্ষ তার লোকজন নিয়ে এদিন সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায় এবং বসতবাড়ির প্রাচীর ভাংচুর করে। এ সময় সিরাজুল ও তার ছেলেরা বাধা দিতে গেলে তাদের মারপিট করে।
×