স্টাফ রিপোর্টার ॥ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান শামসুল আলম তার ঠিকানায় নোটিস পাঠিয়েছেন। নোটিসে আগামী ১১ এপ্রিল সকালে দুদক প্রধান কার্যালয়ে তাকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। অনুসন্ধান দলের অপর সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে বিএইচ হারুনের বক্তব্য নেয়া প্রয়োজন। তাই তাকে তলব করা হয়েছে। আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে এর আগে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রিমিয়ার ব্যাংককে তিন দফা নোটিস দেয় দুদক। ঝালকাঠি-১ আসনের সাংসদ বিএইচ হারুনের ছেলে মাহির হারুন দুই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় আলোচিত বনানীর হোটেল রেইন ট্রির মালিক।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিএইচ হারুনের বিরুদ্ধে ১শ ৩৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন প্রিমিয়ার ব্যাংকের গ্রাহক মেসার্স রুমী এন্টারপ্রাইজের মালিক ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। লিখিত অভিযোগ বলা হয়, তার ব্যাংক হিসাব থেকে ব্যাংকটির পরিচালক এমপি হারুন অন্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ওই অর্থ সরিয়ে নিয়েছেন। এরই ভিত্তিতে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদক ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও আলাদাভাবে একই অভিযোগ করেন খলিলুর রহমান। অভিযোগে বলা হয়, সৌদি সরকারের সাহায্যে ২০০৮ সালে সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ১৫ হাজার ঘর নির্মাণে ২০৪ কোটি টাকার কাজ পান তিনি। তার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ছিল প্রিমিয়ার ব্যাংকের বংশাল শাখায়। সিডর এলাকায় কাজ চলাকালে ব্যাংকে জমা হওয়া ২০৪ কোটি টাকার মধ্যে ২শ ৯৭টি চেকের মাধ্যমে ৭০ কোটি টাকা উত্তোলন করেন তিনি। কাজ শেষে বাকি ১শ ৩৪ কোটি টাকা তোলার জন্য বংশাল শাখায় গেলে তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক সামসুদ্দিন চৌধুরী জানান, তিনি (গ্রাহক খলিলুর রহমান) সব টাকা তুলে নিয়ে গেছেন এবং হিসাবও বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর তিনি দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করেন।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো নোটিসে বংশাল শাখার গ্রাহক রুমী এন্টারপ্রাইজের এসটিডি হিসাবের ব্যাংক স্টেটমেন্টের মূল কপি, হিসাব নম্বর থেকে লেনদেনের রেকর্ড ও বিবরণীর সত্যায়িত ফটোকপি চাওয়া হয়। এছাড়া রুমী এন্টারপ্রাইজের ওই হিসাব থেকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই থেকে ১৭ নবেম্বর পর্যন্ত ৬শ ৮৫টি চেকের মাধ্যমে ২০৭ কোটি টাকা উত্তোলন সংক্রান্ত চেকের মূল কপি এবং এর সত্যায়িত কপি, হিসাবের বিপরীতে চেকবই ইস্যুসহ সংশ্লিষ্ট রেজিস্টার এবং চেকবই গ্রহণকারীর স্বাক্ষরযুক্ত প্রমাণপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিও চাওয়া হয়।
নোটিসে চেক ইস্যুকরণ, ক্লিয়ারিং ও টাকা উত্তোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের নাম, পদবি ও বর্তমান ঠিকানা, রুমী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ খলিলুর রহমানের কেওয়াইসি ছাড়াও নমুনা স্বাক্ষর কার্ড, ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়। এছাড়া অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র না পাওয়া গেলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ১৯ (৩) ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দুদক।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: