ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টেকনাফ উপকূল দিয়ে মানব পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রশাসনের

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৪ এপ্রিল ২০১৮

টেকনাফ উপকূল দিয়ে মানব পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রশাসনের

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ টেকনাফ উপকূল দিয়ে নতুন করে শুরু হওয়া মানব পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। পাচারে সম্ভাব্য পয়েন্টগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে নির্দেশনা প্রদান করেছে। নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বিজিবি, পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের। অপরদিকে, সীমান্ত সংলগ্ন বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকা থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী উপজাতি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রাখাইন রাজ্যে চলে যাওয়া পরিবারের সংখ্যা এখন ৫৫ তে উন্নীত হয়েছে। ইতোপূর্বে গিয়েছিল ৩৩ পরিবার। অবশিষ্টরা গেছে পরে। থানচি, রেমাক্রি এলাকা থেকে বিভিন্ন পরিবার সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর মুন সুয়ি থোয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দেশত্যাগী এসব লোকজনকে রাখাইন রাজ্যে অস্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে বলে সীমান্তের ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে। এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই প্রথমবারের মত মিয়ানমারের কোন মন্ত্রী উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্প পরিদর্শনে যাওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করার তথ্য মিলেছে। মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসনমন্ত্রী ড. উইন মিয়াত আয়ে রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্প আগামী ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করতে পারেন বলে তথ্য মিলেছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারের বেশ কয়েকমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে এলেও ঢাকা থেকেই তারা নিজ দেশে ফিরে গেছেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী আশ্রয় শিবিরে যদি পরিদর্শনে আসেন এটাই হবে সে দেশের কোন মন্ত্রীর প্রথম পরিদর্শন। এছাড়া মঙ্গলবার জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক সহকারী মহাসচিব ও জরুরী সহায়তাবিষয়ক উপ-সমন্বয়ক আর্সালা মুয়েলা এক সপ্তাহের সফরে মিয়ানমার পৌঁছার কথা রয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে এ সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা বসতিতে ধংসযজ্ঞ ও সঙ্কটময় পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ। মিয়ানমারে অবস্থানকালে সেখানকার রোহিঙ্গাসহ মানবিক সঙ্কটের শিকার বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে। সফর শেষে আগামী রবিবার মুয়েলা আসিয়ান-জাতিসংঘ বার্ষিক আঞ্চলিক বৈঠকে অংশ নিতে ইন্দোনেশিয়া গমনের কথা রয়েছে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নিয়ে টেকনাফ-উখিয়ার স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। উখিয়া টেকনাফের স্থানীয় নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। অথচ, সেখানে এখন ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়ে রয়েছে। এদের অধিকাংশ অশিক্ষিত এবং অনগ্রসর শ্রেণীর হওয়ায় স্থানীয়দের ওপর নানা সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। এদের নানামুখী অপতৎপরতার প্রতিবাদ জানালে উল্টো বিপদে পড়তে হয়। ইতোমধ্যে স্থানীয় অনেকে রোহিঙ্গাদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। শুধু তাই নয়, চুরি, ডাকাতির পাশাপাশি রোহিঙ্গা সদস্যদের একটি অংশ বালুখালি ও থাইনখালিস্থ রহমতের বিলে প্রজেক্ট থেকে চিংড়ি লুট করে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
×